রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় বিভিন্ন বয়সের লোকজনকে দেখা গেছে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মাংস সংগ্রহ করতে। দুপুর শেষ হতে না হতেই সেই মাংস রাস্তায় রাস্তায় বিক্রির পসরা নিয়ে বসেন অনেকে। শুধু পসরা সাজিয়ে বসে আছেন তা নয়, অনেকে রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে পুরো ব্যাগ ধরেই বিক্রি করে দিচ্ছেন।
সংগ্রহ করা মাংস কেনার জন্যও রয়েছেন অনেক মানুষ। ভ্যানে ও রাস্তার পাশে বসে বিক্রি করা লোকজনের কাছ থেকেও মাংস কিনছেন তারা। এই চিত্র সন্ধ্যার পরও দেখা গেছে। কম বয়সী ছেলেমেয়েরা দৌড়ে দৌড়ে মাংস সংগ্রহ করতে যাচ্ছে এক বাড়ি থেকে আরেক বাড়ি। দেখে কেউ ভাবতে পারেন তারা মেলায় যাচ্ছে!
ঈদের দিন সোমবার (১৭ জুন) রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় দেখা গেছে মাংস সংগ্রহ ও বিক্রির ভিন্ন ভিন্ন চিত্র। সরেজমিন দেখা যায়, শিশু-কিশোর থেকে মধ্য বয়সীরা মাংস সংগ্রহ করতে বের হয়েছেন। বিকালে মোহাম্মদী হাউজিং সোসাইটির মেইন রোডে মিনা বাজারের সামনে ও আশপাশে ভ্যানে করে মাংস বিক্রি করছেন কয়েকজন। প্রতি কেজি ৮০০ টাকা। তাদের দাবি তারা উবার চালান। গরু কিনে জবাই করে নিজেরা ৮০০ টাকা কেজি দামে প্রয়োজন মতো রেখে বাকিটা বিক্রি করছেন। তবে নিজের নাম বলতে চাচ্ছেন না কেউ।
তাদের পাশে ভ্যানে বিক্রি হচ্ছে শিশু-কিশোরদের সংগ্রহ করা মাংস। নবোদয় হাউজিং সোসাইটির জাহিদ জানান, সংগ্রহ করা মাংস কিনে ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন তিনি।
গরু কিনে ঈদের দিন জবাই করে প্রতিকেজি মাংস ৯০০ টাকায় বিক্রি করছেন বলে জানান শেখেরটেক ৩ নম্বর রোডের সোহাগ।
তার পাশেই রাস্তায় বসে সংগ্রহ করা মাংস বিক্রি করছেন অন্য একজন। কত করে বিক্রি করেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যেমন দামে বেচা যায়, তেমন দামেই।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি জানান, বাড়ি বাড়ি গিয়ে সংগ্রহ করা মাংস কিনে বিক্রি করছেন।
শিয়া মসজিদ মোড়ে জাপান গার্ডেন সিটির সামনের রাস্তার বসে মাংস বিক্রি করছেন মমিনুল। তিনি বলেন, ‘পঞ্চগড় থেকে আমরা ঢাকায় এসেছি আট জন। সকাল থেকে গরু-ছাগলের মাংস রেডি করে দিয়ে যেটুকু পেয়েছি তা বিক্রি করছি। সব মাংস ভালো না। যা পেয়েছি তাই বিক্রি করছি। এখন পর্যন্ত ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে পেরেছি। পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকার মাংস বিক্রি করেছি। বাকিটা বিক্রি হলে পঞ্চগড় চলে যাবো।’
মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন রোডে ব্যাগে করে অনেকেই বিক্রি করছেন সংগ্রহ করা মাংস। ভ্যানে করে বিক্রি করা হচ্ছে উচ্ছিষ্ট মাংসও। সেগুলোও বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা কেজি দরে।
যারা মাংস কিনছেন তারা ক্যামেরা দেখলে সেখানে দাঁড়াচ্ছেন না। অন্য জায়গায় মাংস কেনার চেষ্টা করছেন। এ বিষয়ে একজনের সঙ্গে কথা হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ‘কম দামে যদি পাই কিছু কিনবো। কোরবানি দেওয়া তো সম্ভব না।’