আর এক দিন পরেই অনুষ্ঠিত হবে ঈদুর আজহা। এরই মধ্যে রাজধানীর পশুর হাটগুলো জমজমাট হয়ে উঠেছে। ক্রেতারা কোরবানির জন্য হাট থেকে পছন্দের গরু-ছাগল কিনে বাড়ি ফিরছেন। কিন্তু এক দিন বাকি থাকায় অনেকে পশুর খাবারের জন্য কিনে নিচ্ছেন নানা প্রকার খাদ্য।
মৌসুমি ব্যবসায়ীরা কোরবানির পশু ও পশুর হাটকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মহল্লার অলিগলি ও ফুটপাতে গড়ে তুলেছেন অস্থায়ী পশুখাদ্যের দোকান। তাদের এসব দোকানে পাওয়া যাচ্ছে কাঁচা ঘাস, কাঁঠালপাতা, ভুসি, শুকনা খড়সহ নানা ধরনের গোখাদ্য। এসব খাদ্য দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে নিয়ে আসেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়া শৌখিন ক্রেতারা পশুর গলায় মালা পরান, তাও মিলছে দোকানে।
সরেজমিনে শনিবার (১৫ জুন) সন্ধ্যায় পুরান ঢাকার ধোলাইখাল ট্রাক স্ট্যান্ড-সংলগ্ন পশুর হাট, পোস্তগোলা শ্মশানঘাট-সংলগ্ন পশুর হাট এবং পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অস্থায়ী গোখাদ্যের দোকান ও কোরবানির পশু সাজানোর অস্থায়ী দোকান বসতে দেখা যায়। এসব দোকানে কাঁচা ঘাস ও শুকনা খড়ের আঁটি ২০ থেকে ৩০ টাকা, কাঁঠালপাতার আঁটি ৫০ টাকা ও ভুসি ৫০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা যায়।
রায় সাহেব বাজারে গরুর কাঁচা ঘাস বিক্রেতা বশির বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ঘাসের আঁটি ২০ টাকা। তিন আঁটি ৫০ টাকা। বেচাকেনা কেমন হচ্ছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আলহামদুলিল্লাহ ভালো হচ্ছে।
কাঁঠালের ঢাল বিক্রেতা সেন্টু বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, যারাই গরু কিনছেন, তারা চার-পাঁচ আঁটি করে কাঁঠালপাতা নিয়ে যাচ্ছেন। কেউ একেবারে ৫০০ টাকার কাঁঠালপাতা নিয়ে যাচ্ছেন। আমি এক আঁটি ৫০ টাকা করে বিক্রি করছি।
এসব পাতা কোথা থেকে আনেন, এমন প্রশ্নের জবাবে এই বিক্রেতা বলেন, গাছ থেকে এনেছি। তবে ফ্রিতে না, টাকা দিয়ে কিনে আনি।
অনেকে আবার গরুকে খাওয়ানোর জন্য ভুসি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। ভুসির কেজি ৫০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে এসব অস্থায়ী দোকানে।
ছাগলকে খাওয়ানোর জন্য ১০ আঁটি কাঁঠালপাতা ৫০০ টাকা দিয়ে কিনেছেন সাজিদ হোসেন নামের এক ক্রেতা। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, কোরবানির তো এখনও দেরি আছে। এ সময়ের মধ্যে ছাগলের খাওয়ার জন্য খাবার লাগবে। তাই বেশি করে কাঁঠালপাতা কিনে নিয়েছি।
গরুর জন্য কাঁচা ঘাস ও ভুসি কেনা সৌরভ নামের এক ক্রেতা বলেন, কোরবানির জন্য বাবা বড় দেখে একটা গরু কিনেছেন। তাই আমরা এখন গরুর খাবার কিনে নিয়ে যাচ্ছি। গরুকে বাসায় খাওয়ানোর জন্য তো আর কিছু থাকে না। বাবা বললেন কোরবানির আগ পর্যন্ত গরুকে বেশি করে খাওয়াতে, যেন গরুর অতৃপ্তি না থাকে। এ জন্য বেশি করে ঘাস নিয়েছি।
এদিকে গরুর গলায় দেওয়ার জন্য মালা বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ১০০ টাকা দরে। মালা বিক্রেতা মাসুদ বলেন, গরুর সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন ধরনের মালা দিয়ে গরুকে সাজানো হচ্ছে। গরু ব্যবসায়ীর বড় গরুর গলায় ঝোলানোর জন্য মালা কিনছেন। আবার অনেকে গরু কিনে নিয়ে যাওয়ার পথে মালা কিনে গরুর গলায় দিচ্ছেন। দোকান বসিয়েছি পাঁচ দিন হলো। প্রথম তিন দিন তেমন বেচাকেনা ছিল না। আজ মোটামুটি ভালো বেচাকেনা হয়েছে।
রায় সাহেব বাজার মোড়ে রাবেয়া বেগম নামের এক নারী মালা বিক্রেতা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বেচাকেনা তেমন ভালো না। প্রায় ১০ হাজার টাকা দিয়ে এই মালা কিনেছি বেশি বিক্রির আশায়। কিন্তু বিক্রেতা বেশি থাকার কারণে বেচাকেনা কম হচ্ছে।