ফার্মগেটে অবস্থিত আনোয়ারা পার্ক পুনরুদ্ধারের দাবি জানিয়ে আসছে বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন। তাদের দাবির সঙ্গে একাগ্রতা প্রকাশ করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। পার্কটির মালিক গণপূর্ত অধিদফতর। তবে অনুমতি নিয়ে প্রকল্প অফিস ও নির্মাণ উপকরণ রাখার কাজে জন্য বর্তমানে পার্কটি ব্যবহার করে আসছে মেট্রোরেলের পরিচালনা প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। মেট্রোরেলের কাজ প্রায় শেষ হয়ে গেলেও পার্কটি ছাড়ছে না ডিএমটিসিএল। বরং কথা উঠেছে পার্কটিতে একটি প্লাজা বা অন্য কোনও স্থাপনা তৈরি করতে চায় মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) আনোয়ারা পার্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে মুখ খুলেছেন ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক।
পার্কের বিষয়ে তিনি বলেন, ফার্মগেট নিয়ে আমাদের একটা বড় পরিকল্পনা আছে। আমরা প্রথমদিন থেকেই বলে আসছি— এখানে একটা পার্ক ছিল আনোয়ারা পার্ক। এই পার্কটি আমরা নষ্ট করতে চাই না। কিন্ত এই পার্কের একটা অংশ দিয়েই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নেমেছে। ফার্মগেটে মেট্রোরেলের একটা স্টেশন প্লাজা আছে। এই স্টেশন প্লাজার মানে হচ্ছে— পিক আপ অ্যান্ড ড্রপ আপ ফ্যাসালিটিস। ইটার সঙ্গে সমন্বয় করে পার্কটাকে আমরা রাখতে চাই।
তিনি বলেন, আমরা যখন এই পার্কটা নিয়েছি, তখন পার্ক বলতে প্রকৃতি অবস্থায় যা বোঝায়, সেটা ছিল না। এখানে অনেক অপকর্ম হতো এবং কুতুববাগ শরিফ যখন ওরশ করতো, তখন মনে হতো— এটা একটা গরুর হাট। আমরা সেই পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি ঘটতে দেবো না। আমাদের পক্ষ থেকে শুধু এটুকু কথা। পার্ক পার্কের মতো থাকবে এবং আরও উন্নত একটা পার্ক হবে।
পার্কটি উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতায় ছেড়ে দেওয়া হবে কিনা, এমন প্রশ্নে এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, পার্কটি গণপূর্ত অধিদফতরের। আমি গত পরশু (মঙ্গলবার) মেয়র সাহেবের সঙ্গে কথা বলেছি। উনিই ফোন দিয়েছিলেন। এটা নিয়ে আমাদের বসা দরকার। ঈদের পর আমরা বসবো ওনাদের সঙ্গে।
পার্কের নিয়ন্ত্রণ তাহলে ডিএমটিসিএল নিচ্ছে, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, না, আমরা এই কথা বলিনি। পার্ক পার্কের জায়গায় থাকবে। এটার মেনটেনেন্স কে করবে, সেটার একটা সিদ্ধান্ত প্রয়োজন।
পার্কের উন্নয়ন আপাতত করা সম্ভব হবে না, জানিয়ে ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, কমলাপুর পর্যন্ত মেট্রোরেল না হওয়া পর্যন্ত এটা করা সম্ভব হবে না। কেননা, একটা মেট্রোরেলের সাইট অফিস আছে। পার্কের পেছন দিকে গেলে দেখবেন, আমাদের সর্বশেষ একটা সাইট অফিস আছে। সেখান থেকে আমরা নির্মাণ কাজে সাপোর্ট দিচ্ছি।
পার্কে কোনও ধরনের স্থাপনা হবে কিনা, প্রশ্নে এম এ এন ছিদ্দিক সরাসরি কোনও উত্তর না দিয়ে বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে থেকে নেমে আপনি কোথায় যাচ্ছেন? আপনাকে সেই ঘুরিয়ে নিয়ে আসছে। আমরা একটা ট্যাম্পোরারি অ্যাক্সেস করে দিয়েছি বলে... আপনারা আনোয়ারা পার্কের এখন শেষ মাথায়। শেষ মাথা বলতে এটা কিন্তু এখন পার্ক হিসেবে নাই। সেখানে কিন্তু বিভিন্ন স্থাপনা হয়ে, এটা পার্ক থেকে আউট হয়ে গিয়েছে। এটা পার্ক নাই। আপন গিয়ে দেখবেন যে, ওমুক অফিস, তমুক অফিস এগুলো হচ্ছে। সেদিক দিয়ে ঘুরে আপনি মেট্রো ট্রেনে যাচ্ছেন। আমরা চাচ্ছি, এই মুভমেন্টাকে ইরেজ করে দেওয়ার জন্য— যাতে জনগণের একটা সুবিধা হয়। আর কিছুই না। আমাদের আর কোনও উদ্দেশ্য নেই।
আরও পড়ুন:
তবে কি হারিয়ে যাচ্ছে গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতিজড়িত ফার্মগেটের আনোয়ারা পার্ক?