আগামী ১৩ জুন থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত ১০ দিন সারা দেশে বালুবাহী বাল্কহেডে চলাচল বন্ধ রাখা হবে। পাশাপাশি ১৪ জুন থেকে ২০ জুন পর্যন্ত পশুবাহী ট্রাক ছাড়া সব ধরনের মালবাহী ট্রাকও ফেরি পারাপারে নিষেধ করা হয়েছে। আবহাওয়া খারাপ থাকলে সব ধরনের নৌযান চলাচলই বন্ধ রাখা হবে। আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপনে নদীপথে নির্বিঘ্ন চলাচল নিশ্চিত করতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) দুপুরে গুলশানের পুলিশ প্লাজা কনকর্ডের নৌ-পুলিশ কনফারেন্স রুম আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান নৌ-পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি আবদুল আলীম মাহমুদ। ঈদুল আজহা উপলক্ষে নৌপথের আইনশৃঙ্খলা ও নৌ-ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিষয়ে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
প্রসঙ্গত, গত ২২ মে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকে সব ধরনের নৌযান সুষ্ঠুভাবে চলাচল এবং যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কর্মপন্থা গ্রহণ সংক্রান্ত বৈঠকে বাল্কহেড চলাচল ১০ দিন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। ওই বৈঠকের পর জানানো হয়, ঈদের সময় কাজীরহাট, পাটুরিয়াঘাটে ফেরি সংখ্যা বাড়ানো হবে। কিছু রুটে বাড়ানো হবে লঞ্চের সংখ্যাও। পশুবাহী ও পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক ছাড়া ঈদের আগে তিনদিন ও পরে তিনদিন মিলে সাত দিন সাধারণ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান ফেরিতে পারাপার বন্ধ থাকবে।
আজ সাংবাদিকদের আবদুল আলীম মাহমুদ বলেন, আবহাওয়া যখন খারাপ থাকবে তখন নৌযান চালানো যাবে না। যাত্রীবাহী হোক কিংবা পশুবাহী হোক আবহাওয়ার অবস্থা জেনেই যেন নৌযান নিয়ে রওনা হতে হবে। নৌ পথ ব্যবহারকারী প্রত্যকেই যেন নিরাপদে তাদের পরিবার পরিজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন এবং ব্যবসায়ীরা যাতে নির্বিঘ্নে পণ্য ও কোরবানির পশু নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে যেতে পারেন সেটা নিশ্চিত করতে নৌ পুলিশ দেশের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ ঘাটগুলোয় কন্ট্রোল রুম স্থাপন করবে।
তিনি বলেন, নৌ পথে যেকোনও সমস্যায় নৌ পুলিশের কন্ট্রোল রুমের নম্বর– ০১৩২০১৬৯৫৯৮ অথবা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে নৌ পুলিশকে জানালে নৌ পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
নৌপুলিশ প্রধান বলেন, যাত্রী পরিবহন, পশুবাহী লঞ্চে প্রতি বছরের মতো এবারও আমরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা হাতে নেবো। সিভিলে ও পোশাকে আমাদের সদস্যরা মোতায়েন থাকবে। লঞ্চে অতিরিক্ত ভাড়া নিলে আমরা ব্যবস্থা নেব।
চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও ডাকাতির মতো ঘটনা না যেন ঘটে সেজন্য আমাদের বাড়তি নজরদারি থাকবে। পশু বিক্রির পর নিরাপদে ব্যবসায়ীরা নিজ গন্তব্যে যেন ফিরতে পারেন সেই লক্ষ্যেও আমরা কাজ করব। এছাড়া কোরবানি পরবর্তী পশুর চামড়াও যেন নিরাপদে সড়কে পথে নিয়ে যাওয়া যায় সেই বিষয়ে আমরা কাজ করব।
নৌ-পথে পশুবাহী নৌযান যেন ডাকাতির শিকার না হয় সেই লক্ষ্যে নৌ-পুলিশ কাজ করবে জানিয়ে অতিরিক্ত আইজিপি বলেন, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে দেশের বিভিন্ন বড় হাটে নৌ-পথে পশু পরিবহন করে নিয়ে আসা হবে। নৌপথে যেন এসব পশুবাহী নৌযান ডাকাতির শিকার না হয় সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করব।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে কোনও দুর্ভোগের কারণ হোক সেটা আমরা চাই না। যারা লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করবে ও নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করবে তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেবো।