প্রতি বছর একবার পরীক্ষা নেওয়া ও ফলাফল প্রকাশের নিয়ম থাকলেও, ২০২০ সালের পরীক্ষার ফলাফল বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) প্রকাশ করেছে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে। দেরিতে ফল প্রকাশ করায় ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনে প্রিলিমিনারি, লিখিত ও ভাইবা পরীক্ষায় পাস করা অনেকের বয়স ৩৫ বছর অতিক্রম হয়েছে। তাই বয়স শিথিল করে চাকরিতে প্রবেশের সুযোগ দিতে মানববন্ধন করেছেন প্রার্থীরা।
বুধবার (২২ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ১৭তম নিবন্ধনে উত্তীর্ণ প্রার্থীরা। এতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শতাধিক চাকরিপ্রার্থী।
মানববন্ধনে তারা বলেন, ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনের সার্কুলার ২০২০ সালের ২৩ জানুয়ারিতে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি ও এনটিআরসিএর গড়িমসির কারণে এই পরীক্ষা আয়োজন শেষ করতে চার বছরের বেশি সময় নিয়েছে। সর্বশেষ গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর চূড়ান্ত ফলাফল হয়। ইতোমধ্যে এনটিআরসিএর তথ্যমতে, ৭৩৯ জনের চাকরিপ্রার্থীর বয়স ৩৫ পার হয়েছে। এতে তো আমাদের দোষ নেই। এনটিআরসিএ সঠিক সময়ে ফলাফল প্রকাশ করলে বয়স পার হতো না। এর দায় কি আমাদের? বয়সের বাঁধাধরা নিয়মের কারণে আমরা পঞ্চম নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে আমরা আবেদন করতে পারিনি। আমাদের নামে মাত্র সনদ দেওয়া হয়েছে। চাকরি না পেলে সনদ দিয়ে কী করবো?
তারা আরও বলেন, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৯৬ হাজার ৭৩৬ শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগের পঞ্চম নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ১৬ ও ১৭তম নিবন্ধনের ২৪ হাজারেরও কম প্রার্থী আবেদন করেছেন। অথচ এনটিআরসিএর নিবন্ধনে পাস করে আমরা ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনধারীদের কপাল পুড়েছে।
চাকরিপ্রার্থীরা বলেন, এনটিআরসিএর তুঘলকি কাণ্ডে পঞ্চম নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছি, এর প্রধান কারণ হচ্ছে এমপিও নীতিমালায় আছে এনটিআরসিএ প্রতি বছর একটি করে পরীক্ষা নেওয়া ও একটি গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার মাধ্যমে পরীক্ষার কার্যক্রম সম্পন্ন করা। আবার বয়স ৩৫ বছরের মধ্যে থাকতে হবে। কিন্তু এনটিআরসিএ তা করতে ব্যর্থ হয়েছে আমাদের সঙ্গে। অথচ বিধি অনুযায়ী শূন্য পদের বিপরীতে ১৭তমর প্রার্থীদের পাস করিয়েছে।
এনটিআরসিএর নিয়ম-নীতি অনুসারে এক বছর সময়ের মধ্যে পরীক্ষার আয়োজন করতো, তাহলে আমরা তিনটা গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করার সুযোগ পেতাম। এমনকি ২০২২ সালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক ৩৯ মাসের বয়সের ছাড় দেওয়া হয়েছে। সেই ছাড়ের প্রকৃত দাবিদার আমরা। কিন্তু আমরা এসব থেকেও বঞ্চিত হয়েছি।
মানববন্ধনে তারা বলেন, ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনধারী ৭৩৯ জন একটা বিজ্ঞপ্তিতেও আবেদনের সুযোগ পাচ্ছি না। অথচ ২০২০ সালের সনদ ২০২৪ সালে পাওয়ার পরও যদি একবারও আবেদন করতে না পারি, তাহলে আমাদের ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘন হওয়ার পাশাপাশি আমাদের সনদ ও মেধার অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে। আমাদের দাবি, গণবিজ্ঞপ্তিতে আমাদের নিয়োগের সুযোগ করে দেওয়া হোক।