আলোচিত মিল্টন সমাদ্দারের চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার থেকে নিজ শিশুকন্যাকে (৮) হেফাজতে নিতে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন বাবা তোফাজ্জল হোসেন (৪০)।
ময়মনসিংহ জেলার পাগলা থানার দক্ষিণ লামকাইন গ্রামের সাইদুল হোসেনের ছেলে ব্যবসায়ী তোফাজ্জল হোসেন ঢাকায় থাকেন কদমতলীতে।
চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ারের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দার এবং তার স্ত্রী মিতু হালদারকে বিবাদি করে গত ২৪ মার্চ এই মামলাটি দায়ের করেছেন। ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতে বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন।
বাদিপক্ষের মামলার আইনজীবী হাসান আল জাবির তালুকদার সনি জানান, মামলার পর আদালত বাদি বাবার এবং সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছিল এবং বিবাদিদের শিশুটিকে নিয়ে মঙ্গলবার (২১ মে) আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ ছিল। কিন্তু বর্তমানে শিশুটি শামসুল হক ফাউন্ডেশন চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ারের দায়িত্বে থাকায় ডিএনএ পরীক্ষা হয়নি। আর এ কারণে শিশুটিকেও আদালতে হাজির করা হয়নি।
মামলার এজাহারে বলা হয়, বাদি তোফাজ্জল হোসেন ২০১২ সালের ১৬ নভেম্বর মোছা. সুরমা আক্তারকে বিবাহ করেন। ২০১৫ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর কন্যা শিশুটির জন্ম হয়। স্ত্রী অসুস্থ অবস্থায় ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর শিশুটি হারিয়ে যায়। খোঁজাখুজি করে না পেয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করেন। এরপর ২০২০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি স্ত্রী মৃতুবরণ করেন। পরবর্তী সময়ে বাদী এক পরিচিত ব্যক্তির মাধ্যমে জানতে পারেন চাইল্ড অ্যান্ড এইজ কেয়ার প্রতিষ্ঠানের ফেসবুক পেজের একটি পোস্টের বাদির কন্যাকে দেখেছেন।
এরপর তোফাজ্জল হোসেন ২০২৩ সালের ৪ মে মিল্টন সমাদ্দারের আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে নিজের কন্যা সন্তানকে চিহ্নিত করেন। পরবর্তী সময়ে ২০২৩ সালের ১৮ আগস্ট আশ্রয়কেন্দ্র থেকে তোফাজ্জলকে জানানো হয়, তারা শিশুটিকে দেবেন না। পরে ২০২৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর বিবাদীদের তিন দিনের মধ্যে শিশুটিকে ফেরত চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ দেন তোফাজ্জল। তবে এখনও শিশুটিকে ফেরত দেওয়া হয়নি।
জানা যায়, গত ১ মে রাতে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। তার বিরুদ্ধে জাল মৃত্যু সনদ তৈরি, টর্চার সেলে মানুষজনকে নির্যাতন ও মানবপাচারের অভিযোগে তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বর্তমান তিনি কয়েকদফা রিমান্ড শেষে কারাগারে আটক রয়েছেন।