ইউরোপ-আমেরিকায় ১৩৮ বছর আগে শ্রমিক আন্দোলনের স্লোগান ছিল— ৮ ঘণ্টা শ্রম, ৮ ঘণ্টা বিশ্রাম ও ৮ ঘণ্টা বিনোদন । অথচ আমাদের দেশের শ্রমিকদের জীবনে বিশ্রাম বলে কোনও কথা নেই। বিশ্রাম ও বিনোদন যেন শ্রমিকের জীবনে বিলাসিতা মাত্র। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত কোনও জাতীয় মজুরি নাই। তাই ৮ ঘণ্টা কাজের জন্য মর্যাদাপূর্ণ জাতীয় মজুরির দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির নেতারা।
বুধবার (১ মে) বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে আশুলিয়া, সাভার, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জসহ সব শ্রমিক এলাকায় র্যালি, সমাবেশ ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। আশুলিয়ায় ফ্যান্টাসি কিংডমের সামনে লাল সমাবেশ ও মিছিল উদ্বোধন করেন সংগঠনের সভা প্রধান তাসলিমা আখতার।
সমাবেশে নেতারা বলেন, সারা দুনিয়ায় ৮ ঘণ্টার শ্রম স্বীকৃতি পেয়েছে। কিন্তু ১৩৮ বছরে বাংলাদেশের শ্রমিকরা কাগজে-কলমে ৮ ঘণ্টার স্বীকৃতি পেলেও ৮ ঘণ্টায় যে মজুরি পান, তাতে তাদের জীবন চলে না। শ্রমিকরা বাধ্য হন অতিরিক্ত কাজ করতে। ওভার টাইম করতে। কখনও কখনও শ্রমিকদের নানা অযুহাতে ফাও বা বিনা মজুরিতে খাটানো হয়।
তারা আরও বলেন, শ্রম আইনে ওভারটাইম বা অতিরিক্ত কাজ ২ ঘণ্টা থেকে বাড়িয়ে ৪ ঘণ্টা কাজ করানোর বিধি করা হয়েছে। বর্তমানে শ্রমিকরা ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ শেষে বাড়িতে এসে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সংকটে হিমশিম খান। এসময় তারা শ্রমিকদের ৮ ঘণ্টায় মর্যাদাপূর্ণ মজুরি ও জীবন বাঁচানোর লড়াইয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হবার আহ্বান জানান।
শ্রমিক নেতারা মে দিবসের প্রাক্কালে নিহত শ্রমিকদের জন্য ন্যায়বিচার, শ্রমিক ও নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রবীর সাহা, আশুলিয়ার সভাপ্রধান জিয়াদুল ইসলাম, আশুলিয়ার সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন, কেন্দ্রীয় সদস্য সাবিনা আক্তার, শাহীদা আক্তার, আলেয়া বেগমসহ স্থানীয় নেতৃত্ব।
এছাড়া চট্টগ্রাম ইপিজেডে সকাল ১১টায় র্যালি ও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাবুল হোসেন, মিজান বাবু, সোহাগ ও শিমুল। গাজীপুরের টঙ্গীতে সকাল ১১টায় বক্তব্য রাখেন মাহবুব ইরান, হযরত বিল্লাল, আকলিমা, আরশাদুল ইসলাম, তোফায়েল। নারায়নগঞ্জ প্রেসক্লাবে সকাল ১০টায় লাল সমাবেশে বক্তব্য রাখেন অঞ্জন দাস, মামুন, কাওসার হামিদসহ স্থানীয় নেতারা।