রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে লাগা আগুনে মার্কেটের ২১৭টি দোকান পুড়ে গেছে। উত্তর সিটি করপোরেশনের বরাদ্দ করা দোকানের সংখ্যা ছিল ৩৪৩টি। তবে এগুলো পাশে ফুটপাত ও আশপাশের বিভিন্ন জায়গায় অবৈধ দোকান ছিল বলে স্বীকার করলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা।
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডে পরবর্তী উদ্ধারকাজ পরিদর্শন করতে গিয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
সেলিম রেজা বলেন, আগুন লাগার পর সবার সমন্বয়ে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নিয়ন্ত্রণকাজ করেছে সব সংস্থা। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করছি আগুনের ভয়াবহতা কমানোর। এরকম ঘটনা যেন আমাদের আর না দেখতে হয়। এ ধরনের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। এখানে পানির সংকট ছিল। জাপান গার্ডেন সিটি সুইমিং পুল এবং অন্যান্য ভবন থেকে পানি সরবরাহ করতে হয়েছে ফায়ার সার্ভিসকে।
উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের তালিকা করা হচ্ছে জানিয়ে প্রধান নির্বাহী জানান, এই আগুন আমরা ঢাকা শহরে কিছুদিন পর পরই এক্সপিরিয়েন্স করছি। আগুন যেন আমাদের ক্ষতি করতে না পারে সেই লক্ষ্যে আমরা সবাই মিলে পরিকল্পনা নেবো। আমরা নিরাপদ থাকতে চাই। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সার্বিক বিষয়ে ইন্সট্রাকশন দেওয়া হয়েছে আগুন লাগার পর থেকে।
তিনি বলেন, অবৈধ দোকানগুলো ছিল ফুটপাতে, আর আমাদের বরাদ্দ যেসব দোকান ছিল সেগুলো ভেতরে। ফায়ার সার্ভিস আমাদের জানিয়েছে ভেতরে পর্যাপ্ত অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না। অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঠিক রাখার জন্য সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল মার্কেট কর্তৃপক্ষকে। এখানে বাজার সমিতি ছিল, তাদের আমরা নির্দেশনা দিয়েছি বারবার। নির্দেশনা না মানার কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে জানান প্রধান নির্বাহী সেলিম রেজা।
ঢাকা মহানগর দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি আরিফুর রহমান বলেন, ভোররাতে আগুনের ঘটনা ঘটে আর এখানে সিসিটিভি রয়েছে। পরে পাবো এখন তো আর পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা প্রত্যেকটি জায়গায় দেখেছি সিটি করপোরেশনের মার্কেটসহ বিভিন্ন মার্কেটগুলোতে ভোররাতে আগুন লাগে। কেন ভোর রাতে আগুন লাগছে এ বিষয়টি আমাদের ভাবনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আরিফুর রহমান বলেন, যদিও তিনি দাবি করেন বিষয়টি পরিকল্পিত নয়, এটি আমাদের সমস্যার জন্য হচ্ছে না বাইরের কোনও সমস্যার জন্য হচ্ছে। এ বিষয়টি পরে বিশ্লেষণ করলে আমরা জানতে পারবো। এখানে প্রায় ৪০০ দোকান রয়েছে। আমাদের আরজি হচ্ছে একটি সুস্থ তদন্তের মাধ্যমে যে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এরা যেন তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারে। এজন্য সরকার তাদের পাশে এসে যাতে দাঁড়ায়, আমরা সেটাই চাই । মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটটি একটি জনপ্রিয় মার্কেট। এখানে ব্যবসায়ীরা স্বল্প লাভে পণ্য বিক্রি করে থাকেন। কেন আগুনটা লাগছে এ বিষয়ে প্রথমে আমাদের তদন্ত করতে হবে। এখন মার্কেটটি কীভাবে ঘুরে দাঁড়াবে এ বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করতে চাই। প্রায় ৩০০ কোটি টাকার মতো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন এই ব্যবসায়ী নেতা।
এছাড়া, ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাঁচ কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।