গাজীপুরের কালিয়াকৈরে আলী আজম নামে এক বিএনপি নেতার হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় মায়ের জানাজায় অংশ নেওয়ার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। বুধবার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আলী আজম গাজীপুরের কালিয়াকৈরের বোয়ালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি। তার মা সাহেরা বেগম বার্ধক্যজনিত কারণে গত ১৮ ডিসেম্বর মারা যান। শেষবার মায়ের মরদেহ দেখতে এবং জানাজায় অংশ নিতে আইনজীবীর মাধ্যমে ১৯ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসক বরাবর প্যারোলে মুক্তির আবেদন করেন আলী আজম । ২০ ডিসেম্বর তিন ঘণ্টার জন্য তাকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয় এবং তিনি তার মায়ের জানাজায় উপস্থিত থাকার সুযোগ পান। প্যারোলের পুরোটা সময় হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় ছিলেন তিনি। এমনকি, জানাজা পড়ানোর সময় তার হাতকড়া ও ডান্ডা বেড়ি খুলে দেওয়ার অনুরোধ করা হলেও পুলিশ তা খুলে দেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। উল্লেখ্য, গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় গত ২৯ নভেম্বর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলার অভিযোগে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে করা মামলায় ২ ডিসেম্বর আলী আজম গ্রেফতার হন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আইন ও সালিশ কেন্দ্র আরও উল্লেখ করে, দেশের সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, বিচার বা দন্ড প্রদানের ক্ষেত্রে কোনও ব্যক্তিকে যন্ত্রণা দেওয়া যাবে না। কিংবা নিষ্ঠুর, অমানুষিক বা লাঞ্ছনাকর দন্ড দেওয়া যাবে না। সংবিধানে এমন বিস্তৃত অধিকার থাকা সত্ত্বেও একজন সাধারণ নাগরিককে মায়ের জানাজায় ডান্ডা বেড়ি পরিয়ে নিয়ে যাওয়া কেবল অমানবিকই নয়, বরং মৌলিক মানবাধিকারের পরিপন্থী। পাশাপাশি এক্ষেত্রে কোনও অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ডান্ডা বেড়ি পরানো বিষয়ক উচ্চ আদালতের যে নির্দেশনা রয়েছে, সেটাও অনুসরণ করা হয়নি। তাছাড়া আলী আজম কোনও সুনির্দিষ্ট মামলার আসামি নন বলে গণমাধ্যমে খবর বেড়িয়েছে। বরং তিনি একটি গায়েবি রাজনৈতিক মামলার আসামি। তার বিরুদ্ধে যে মামলাটি রয়েছে, সেই মামলার বাদী এই ঘটনা ও মামলার বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে তিনি ইতোমধ্যে গণমাধ্যমে মতামত ব্যক্ত করেছেন। আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক ) এ ধরনের নিষ্ঠুর, অমানবিক এবং অসংবেদনশীল আচরণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে।