X
মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
১৬ বৈশাখ ১৪৩২

রাগালাপ দিয়ে শুরু ছায়ানটের বর্ষবরণ

মাহমুদ মানজুর
১৪ এপ্রিল ২০১৯, ০৬:২৫আপডেট : ১৪ এপ্রিল ২০১৯, ১০:৫৮

রাগালাপ দিয়ে শুরু ছায়নটের বর্ষবরণ (ছবি: নাসিরুল ইসলাম) বৃষ্টির আশঙ্কা মুছে দিয়ে বাংলার আকাশ দারুণ হেসেছে আজ (পহেলা বৈশাখ) প্রথম সূর্যদয়ে। ছায়ানটের শিল্পীরা সেই সূর্যোদয়কে স্বাগত জানালেন, রাগালাপ দিয়ে। রাজধানীর ঐতিহাসিক রমনার বটমূলে আয়োজিত বর্ণাঢ্য এই আয়োজনের শুরু হয় রবিবার (১৪ এপ্রিল) ভোর ঠিক সোয়া ৬টায়। বর্ষবরণের ৫২তম এই আয়োজনের মূল প্রতিপাদ্য- ‘অনাচারের বিরুদ্ধে জাগ্রত হোক শুভবোধ’।

সামাজিক সকল অনাচারের বিরুদ্ধে মানুষের মনে শুভবোধ জাগিয়ে তোলার মানস নিয়ে গানে গানে ১৪২৬ বঙ্গাব্দকে বরণ করে নিলো ছায়ানটের শিল্পীরা।

বর্ষবরণ ১৪২৬ রমনার বটমূল থেকে সরাসরি সম্প্রচার করছে বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং বাংলাদেশ বেতার। বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকে অনুষ্ঠানটি দেখা যাচ্ছে ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেলেও (bit.ly/chhayanaut)।
ছায়ানট সূত্র জানায়, শিক্ষার্থী-প্রাক্তনী-শিক্ষক নিয়ে, ছোট বড় মিলিয়ে এবারের অনুষ্ঠানে সম্মেলক গান পরিবেশন করবেন শ’খানেক শিল্পী। অনুষ্ঠানে থাকছে ১৩টি একক ও ১৩টি সম্মেলক গান এবং ২টি আবৃত্তি। ছায়ানটের আ্হ্বান অনুযায়ী রবীন্দ্র রচনা থেকে বেছে নেওয়া হয়েছে আবৃত্তি দুটি। একই ধারায় গানগুলি নির্বাচন করা হয়েছে কাজী নজরুল ইসলাম, অতুলপ্রসাদ সেন, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, রজনীকান্ত সেন, লালন শাহ্, মুকুন্দ দাস, অজয় ভট্টাচার্য, শাহ্ আবদুল করিম, কুটি মনসুর, সলিল চৌধুরী ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচনা থেকে।
জাতীয়সঙ্গীত গেয়ে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের সমাপ্তি টানার আগে ছায়ানট সভাপতি শুভবোধ জাগরণের আহ্বান জানাবেন তার কথনে। রাগালাপ দিয়ে শুরু ছায়নটের বর্ষবরণ (ছবি: নাসিরুল ইসলাম)

অনুষ্ঠান শুরুর বেশ আগে থেকে এই বটমূলকে ঘিরে জড়ো হলো অগুনতি সংস্কৃতিপ্রাণ মানুষ। সূর্য ফোটার আভা ধরে আবাল-বৃদ্ধ-বনিতারা বুঝি শহরের প্রতিটি কোনা থেকে বেরিয়ে পড়েছিল, ক্রমশ জড়ো হতে থাকলো রমনার বটমূলে; সুরে সুরে বঙ্গাব্দ- ১৪২৬ সালকে বরণ করে নিতে।

ছায়ানটের শিল্পী-কর্মীদের জন্য বটমূল সংলগ্ন সামান্য জায়গা ছাড়া প্রায় গোটা প্রাঙ্গণই উন্মুক্ত রয়েছে সবার জন্য। বটমূলের বর্ষবরণ আয়োজন সুষ্ঠু রাখতে সার্বক্ষণিক সহায়তা দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
প্রসঙ্গত, পাকিস্তানি আমলের বৈরী পরিবেশে ১৯৬১ সালে রবীন্দ্র জন্মশতবার্ষিকীকে কেন্দ্র করে ছায়ানটের যে যাত্রার সূচনা তা মূলত বাঙালির আপনসত্তাকে জাগিয়ে তুলবার, আপন সংস্কৃতিতে বাঁচাবার অধিকার ও বিশ্বাস প্রতিষ্ঠা করবার জন্য। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে একটি অসাম্প্রদায়িক চেতনার উন্মেষ ঘটাবার জন্য ১৯৬৭ সালে রমনার বটমূলে শুরু হয় বাংলা বছরকে আবাহনের আয়োজন।

‘কায়মনে বাঙালি’ হবার প্রত্যয় নিয়ে সেই থেকে পাঁচ দশক ধরে বাংলা বছরের প্রথম লগ্ন পহেলা বৈশাখের প্রত্যুষে মানুষের ভালোবাসাধন্য এই সংগঠন আপন সংস্কৃতির অনুষ্ঠান করে আসছে। নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে রমনার বটমূল, দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বাংলা নববর্ষ আজ বিশ্বময় বাঙালির সবচেয়ে বড় মিলনমেলা, একটি জাতীয় উৎসব। এই উৎসব আপামর বাঙালিকে প্রাণিত করে ভালোবাসা ও সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হতে।

ছবি: নাসিরুল ইসলাম

/এমএম/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ঢাকা লিগে আবাহনীর হ্যাটট্রিক শিরোপা
ঢাকা লিগে আবাহনীর হ্যাটট্রিক শিরোপা
‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে কোনও আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব
‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে কোনও আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব
৫ আগস্ট রাতে সহকর্মীদের বলেছি ‘আল্লাহর ওয়াস্তে কেউ প্রতিশোধ নেবেন না’
মৌলভীবাজারে জামায়াত আমির৫ আগস্ট রাতে সহকর্মীদের বলেছি ‘আল্লাহর ওয়াস্তে কেউ প্রতিশোধ নেবেন না’
৭ দাবিতে আন্দোলন করবে কবি নজরুল কলেজ শিক্ষার্থীরা
৭ দাবিতে আন্দোলন করবে কবি নজরুল কলেজ শিক্ষার্থীরা
সর্বাধিক পঠিত
মানবিক করিডোরের জন্য যেসব শর্ত দিয়েছে সরকার
মানবিক করিডোরের জন্য যেসব শর্ত দিয়েছে সরকার
পর্যটককে মারধর করে ২৪ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে গেলেন বিএনপি নেতারা
পর্যটককে মারধর করে ২৪ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে গেলেন বিএনপি নেতারা
দুটি বিশ্ব রেকর্ড ভাঙলেন ১৪ বছরের বৈভব
দুটি বিশ্ব রেকর্ড ভাঙলেন ১৪ বছরের বৈভব
৪ হাজার ২৬১ কোটি টাকার লাইনে চলে একটি ট্রেন
৪ হাজার ২৬১ কোটি টাকার লাইনে চলে একটি ট্রেন
আদালতে সাবেক আইনমন্ত্রীকে কিলঘুষি, বাধা না দিয়ে পুলিশের দৌড়
আদালতে সাবেক আইনমন্ত্রীকে কিলঘুষি, বাধা না দিয়ে পুলিশের দৌড়