পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী হত্যার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘গুপ্তহত্যা করে কেউ পার পাবে না। গুপ্তহত্যা করে যারা দেশের মানুষের ক্ষতি করছে, পরিবারের ক্ষতি করছে তার হিসাব আমরা পাই পাই করে নেবো।’
হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, ‘এভাবে যদি কেউ পরিবারের ওপর হাত দিতে শুরু করে তাহলে কিন্তু অন্য কারো হাতও থেমে থাকবে না। জনগণকে থামিয়ে রাখা যাবে না।’
বুধবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য অ্যাডভোকেট ফজিলাতুন নেসা বাপ্পীর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা গুপ্তহত্যায় জড়িত তারা যদি মনে করেন, গুপ্তহত্যা করে পার পেয়ে যাবেন। তারা তা পাবেন না। তাদের বিচার এই বাংলার মাটিতে হবেই হবে। তাদের প্রভু যারাই হোক তাদেরও আমরা রেহাই দেবো না।’
এসব ঘটনার পেছনে বিএনপি-জামায়াতের ইন্ধনের ইঙ্গিত দিয়ে সংসদ নেতা বলেন, ‘তারা ২০১৩ সালে জ্বালাও-পোড়াও করেছে। ২০১৫ সালে টানা তিন মাস আন্দোলনের সময় পুড়িয়ে মানুষ মেরেছে। কিন্তু গণরোধের কারণে বিরত হয়েছে। এখন দেখতে পাচ্ছি গুপ্তহত্যার পথ বেছে নেওয়া হয়েছে। মসজিদের ইমাম, প্যাডোগা ও মন্দিরের পুরোহিত, গির্জার ফাদারের ওপর হামলা করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে শিক্ষককে হত্যা করা হচ্ছে। পুলিশ অফিসার যিনি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন, তার স্ত্রীকে কিভাবে কুপিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে। তাদের হত্যার ধরনও একই রকম। তারা ঠিক একই জায়গায় কোপ দেয়। একইভাবে গুলি করে মারে।’
এসপি বাবুল আক্তারের কর্মদক্ষতার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা বাংলাদেশে নানা ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর চেষ্টা করেছে এই পুলিশ অফিসার তাদের গ্রেফতর করেছেন। বোমা বানানোর সরঞ্জাম থেকে শুরু করে বহু কিছু উদ্ধার করেছেন। এরা তার পরিবারের ওপর হাত দিয়েছে।’
এসব গুপ্তহত্যর বিষয়ে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে যেসব গুপ্তহত্যা ঘটেছে তার অনেকগুলোর আসামি গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি আমরা। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে অবশ্যই তারাও গ্রেফতার হবে। এতে কোনও সন্দেহ নেই।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আজকে যারা পরিবারের ওপর হাত দিয়েছে। তারা কি ভুলে যায় তাদেরও পরিবার আছে? তাদেরও বাবা-মা-ভাইবোন আছে। তাদেরও স্ত্রী আছে। একদিক থেকে যদি আঘাত আসে তাহলে অন্যদিক থেকেও আঘাত যেতে পারে। এটা কি তারা ভুলে যাচ্ছে? কাজেই যারা এ ধরনের সন্ত্রাসী ও গুপ্তহত্যার সঙ্গে জড়িত আমি তাদের পরিবার বাবা-মা-ভাইবোন ও স্ত্রীকে বলব এর থেকে যেন তাদের পরিবারের সদস্যদের বিরত থাকতে বলেন।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশে গুপ্তহত্যা করে যদি মনে করে দেশ একেবারে উল্টে দেবে তা কিন্তু তারা পারবে না। হত্যাকারী ঠিকই ধরা পড়বে। তারা সাজা পাবে। সর্বোচ্চ সাজা এই হত্যাকারীরা ভোগ করবে। খুনের মামলা কখনও তামাদি হয় না। যুদ্ধাপরাধীদেরর বিচার হয়েছে। জাতির পিতাকে যারা হত্যা করেছিল সেই খুনিদের বিচার আমরা করেছি।
আরও পড়ুন:
বগুড়ায় মসজিদে হামলা মামলার আসামি ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত
ঝিনাইদহে ৬ মাসে তিন ভিন্ন মতাবলম্বী খুন, তদন্তে দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই
জামায়াতমুক্ত হওয়ার পথে ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ!
/ইএইচএস/এসটি