বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. এমদাদ উল বারী বলেছেন, মোবাইল অপারেটররা হজ উপলক্ষে বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। এসব প্যাকেজের মেয়াদ একদিন থেকে ৬০ দিন পর্যন্ত। হজের সময়কে ধরে তারা এমন অনেক প্যাকেজ দিয়েছে। এই প্যাকেজকে সামারাইজ করলে দেখা যাবে, সাধারণ যে মূল্য ছিল, সেখানে প্যাকেজভেদে ১২ থেকে ২৫ শতাংশ হ্রাস করা হয়েছে। সৌদি আরবের রেটের সঙ্গে তুলনা করলে ১০ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত সাশ্রয়ী হয়ে থাকে। মোবাইল অপারেটর কারও কারও এখান থেকে সিম কেনার সঙ্গে সঙ্গে রোমিং চালু হবে, কারও কারও সৌদি আরব যাওয়ার পর সেখানে চালু হবে।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিদেশে সিম ব্যবহারের ক্ষেত্রে সাধারণত যেসব প্রতিবন্ধকতা আছে, তার মধ্যে আছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রেডিট কার্ডের প্রয়োজনীয়তা। আমাদের দেশ থেকে যখন একটা সিম রোমিংয়ের জন্য বাইরে যায় তার জন্য বাধ্যতামূলক ছিল ইন্টারন্যাশনাল ক্রেডিট কার্ড। আরেকটা বাধা ছিল, ক্রেডিট কার্ড থাকার পরও ইন্টারন্যাশনাল রোমিং একটা প্রিমিয়াম সার্ভিস, এর রেট যথেষ্ট উচ্চমূল্য ছিল। এটার বিকল্প ছিল সৌদি আরবে গিয়ে ওখান থেকে একটা সিম নেওয়া। সৌদি আরবে সিমের রেটও অনেক উচ্চ। তার চেয়ে বড় কথা, তাদের যে প্যাকেজ আছে সেগুলো সপ্তাহ অনুযায়ী। প্রধান উপদেষ্টার আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডের বাধ্যবাধকতা তুলে নেয়। যারা হজের জন্য যাবেন সিম রোমিংয়ের জন্য তাদের আর ইন্টারন্যাশনাল ক্রেডিট কার্ড দরকার হবে না।
তিনি আরও বলেন, আগে গ্রামীণফোনের প্যাকেজ সাত দিনের নিচে ছিল না। তারা সর্বনিম্ন একদিনের একটি প্যাকেজ দিয়েছে, যেখানে ৫০০ এমবি ইন্টারনেট ১৫৪ টাকা। সৌদি আরবে এই একই পরিমাণ ইন্টারনেট নিতে খরচ ১৮৫ টাকা। গ্রামীণফোনের প্যাকেজে ৪৫ দিন মেয়াদের প্যাকেজে ১৫০ মিনিট দিয়েছে কলের জন্য এবং আনলিমিটেড ইন্টারনেট আছে। এটা একসময় ছিল ৬ হাজার ৯৯৯ টাকা, এখন ১ হাজার টাকা কমানো হয়েছে। সৌদি আরবে একই মেয়াদের ১০০ জিবির প্যাকেজ আছে, সেটি ১৩ হাজার টাকার মতো পড়ে। একইভাবে রবি ও বাংলালিংকের বিভিন্ন দামের প্যাকেজ আছে। প্রত্যেকেই ছয়টি করে প্যাকেজ দিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ডিজিটাল ব্যাংকিং বিভাগের প্রধান মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, হজযাত্রীদের জন্য প্রিপেইড কার্ডের ব্যবস্থা করেছে ইসলামি ব্যাংক। এই কার্ডের মাধ্যমে পস মেশিন ব্যবহার করে কোরবানির অর্থ পরিশোধ করা যাবে। এই কার্ডের লিমিট ১২০০ ডলার। অল্প কিছু কাগজ, যেমন-পাসপোর্ট, এনআইডি এবং ছবি জমা দিয়ে ব্যাংকের যেকোনও শাখা থেকে এই কার্ড পাওয়া যাবে। ইতোমধ্যে আমরা ১ হাজার কার্ড সরবরাহ করেছি। আমরা চাচ্ছি আমাদের হাজিরা যাতে ঝামেলাহীনভাবে হজ সম্পন্ন করে আসেন। এই কার্ডে প্রয়োজন হলে এখান থেকেও টাকা জমা দেওয়া যাবে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ শাখার উপ-সচিব মামুন আল ফারুক বলেন, সৌদি সরকার এবার নতুন একটি সিস্টেম চালু করায় তাদের সিস্টেমে একটা দীর্ঘসূত্রতা ছিল। তাদের কারণেই দেরি হচ্ছিল। এই কার্যক্রম ১৮ এপ্রিল বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও তারা সেটি চালু রেখেছে এবং আমাদের কার্যক্রম চলছে। আজ দুপুর ২টা পর্যন্ত যে তথ্য আছে তাতে দেখা যাচ্ছে, সরকারিতে ৪ হাজার ৯৯৫ জন ভিসা পেয়েছেন ৫ হাজার ২০০ জনের মধ্যে এবং বেসরকারিতে ৫৮ হাজার ৭৭৭ জন ভিসা পেয়েছেন ৮১ হাজার ৯০০ জনের মধ্যে। ভিসা কার্যক্রম চলমান আছে এবং সব হজযাত্রী হজ করতে পারবেন বলে আমরা আশা করছি।