প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে চূড়ান্ত প্রতিবেদন হস্তান্তর করেছে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন। রবিবার (২০ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রতিবেদন গ্রহণ করে প্রধান উপদেষ্টা সংস্কার প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জনসম্পৃক্ততার প্রতি তার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
প্রফেসর ইউনূস বলেন, ‘আমরা পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনটি জনসমক্ষে প্রকাশ করবো— যাতে নাগরিক, বিশেষজ্ঞ এবং অংশীজনরা প্রস্তাবিত সংস্কারগুলো বুঝতে পারেন। প্রকৃতপক্ষে আমি বিশ্বাস করি যে, এই সংস্কারগুলো অল্প বয়স থেকেই নাগরিক সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য স্কুলগুলোতে শেখানো উচিত।’
প্রফেসর ইউনূস আরও বলেন, ‘আসুন, আমরা দেরি না করি। এই সংস্কারগুলো যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কাগজ থেকে বেরিয়ে অনুশীলনে যেতে হবে।’
অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদের নেতৃত্বাধীন স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন কয়েক মাসের আলোচনা, গবেষণা ও মাঠ পর্যায়ে কাজ করার পর প্রতিবেদনটি জমা দেয়।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘আমরা সুপারিশ করছি যে, ঐকমত্য কমিশন প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে প্রতিফলিত করবে। প্রথম অংশে আমরা কাঠামোগত সংস্কারের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছি এবং পরবর্তী অংশে আমরা প্রস্তাব করেছি—একটি কাঠামো যা ব্যবহারিক এবং স্কেলযোগ্য পরিবর্তন নিশ্চিত করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জনসেবা প্রদানে স্থানীয় সরকারকে আরও স্মার্ট ও দক্ষ করে তোলাই এর লক্ষ্য।’
অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘আমরা সম্পদ ব্যবস্থাপনার ভূমিকার জন্য একটি পুরো অধ্যায় উৎসর্গ করেছি এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করার জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগকে তদারকির ভূমিকা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছি।’
কমিশনের প্রতিবেদনে নগর স্থানীয় সংস্থাগুলো বিশেষ করে ঢাকা সিটি করপোরেশনের জটিল চ্যালেঞ্জগুলোও চিহ্নিত করা হয়েছে।
অধ্যাপক আহমেদ বলেন, ‘বিভাগীয় অদক্ষতা এবং অবাধ ঘুষ এখনও স্থায়ী সমস্যা হিসেবে রয়ে গেছে। বড় বড় অবকাঠামো প্রকল্প থেকে শুরু করে দৈনন্দিন পরিষেবা, দুর্নীতি একাধিক স্তর যেমন- প্রকল্প স্তর, পরিষেবা স্তর এবং আন্তঃবিভাগীয়ের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়। এগুলো মোকাবিলা করতে না পারলে কার্যকর প্রশাসন স্বপ্নই থেকে যাবে।’
প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় আরও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. ফেরদৌস আরফিনা ওসমান, আবদুর রহমান, ড. মাহফুজ কবির, মাহসুদা খাতুন শেফালী, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম, এলেরা দেওয়ান, অধ্যাপক ড. কাজী মারুফুল ইসলাম, এ কে এম তরিকুল আলম, হেলেনা পারভীন এবং মেজবাহ উদ্দিন খান।