ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের আয়োজনে বৈশাখের অন্যতম আয়োজন মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আগের ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ থেকে নাম পরিবর্তন করে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’ নামকরণ করা হয়েছে।
শুক্রবার (১০ এপ্রিল) বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
কী কী থাকছে বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রায়—
এবার বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রায় থাকছে ৭টি বড় মোটিফ। সেখানে রয়েছে ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি, মুগ্ধের পানির বোতল, কাঠের বাঘ, ইলিশ মাছ, পালকি, শান্তির পায়রা।
মাঝারি মোটিফ রয়েছে ৭টি। সেখানে রয়েছে, সুলতানি ও মুঘোল আমলের মুখোশ ১০টি, রঙিন চরকি ২০টি, তালপাতার সেপাই ৮টি, তুহিন পাখি ৫টি, পাখা ৪টি, ঘোড়া ২০টি, লোকজ চিত্রাবলীর ক্যানভাস ১০০ ফুট।
ছোট মোটিফ রয়েছে ৭টি। সেখানে রয়েছে ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি ৮০টি, বাঘের মাথা ২০০টি, পলো ১০টি, মাছের চাই ৬টি, মাথাল ২০টি, লাঙল ৫টি, মাছের ডোলা ৫টি।
এছাড়াও চারুকলার সম্মুখভাগের দেয়ালে আঁকা হয়েছে রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী শখের হাঁড়ির মোটিফ অবলম্বনে চিত্রাঙ্কন, জয়নুল শিশু নিকেতন দেয়াল সাঁওতালদের ঐতিহ্যবাহী মাটির দেয়াল অঙ্কনরীতি অবলম্বনে চিত্রাঙ্কন।
তরমুজ ফিলিস্তিনিদের কাছে ‘প্রতিরোধ ও অধ্যবসারে প্রতীক’। ইসরায়েলের দখলদারত্বের বিরুদ্ধে কয়েক দশক ধরে ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করা হলেও মূলত এটি তাদের পতাকা বোঝাতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এর কারণ হলো, ফলটির বাইরের অংশের রঙ সবুজ। আর ভেতরের অংশগুলোর রঙ লাল, সাদা ও কালো। এ রঙগুলো ফিলিস্তিনের পতাকার রঙের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।
এবারের শোভাযাত্রায় অন্যান্য মোটিফের পাশাপাশি ফিলিস্তিনের নিপীড়িত মুসলমানদের লড়াই ও সংগ্রামের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে তাদের প্রতীক হিসেবে তরমুজের মোটিফ সামনে আনা হয়েছে।
শোভাযাত্রায় থাকবে ঐতিহ্যবাহী পিস্টন বাঁশি, বাংলা ঢোল ও করনেট বাঁশি সহযোগে ৩০ জন শিল্পীর সম্মিলিত বিন্যাসে দেশাত্মবোধক গান; চারুকলার অভ্যন্তরে নাগর দোলা, চরকি, পুতুল নাচ, বায়স্কোপ, বৈশাখী খাবারের দোকান। শোভাযাত্রার মুকুট থাকছে ৫ হাজার। শোভাযাত্রার ব্যানার হবে একটি। যার আকার হবে ২৫ ফুট বাই ৩ দশমিক ৫ ফুট।
পহেলা বৈশাখের দ্বিতীয় দিন চারুকলার বকুলতলায় রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে যাত্রাপালা।