বাংলাদেশ ২০২৬-২৭ মেয়াদের জন্য ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আইএমও) কাউন্সিলের ক্যাটাগরি ‘সি’-এর সদস্য হিসেবে প্রার্থিতা ঘোষণা করেছে।
সোমবার (৭ এপ্রিল) লন্ডনে আইএমও ডেলিগেটস লাউঞ্জে আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘোষণা দেন। পরদিন (৮ এপ্রিল) নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন উপদেষ্টা বাংলাদেশের সমুদ্র ঐতিহ্য, ইন্দো-প্রশান্ত অঞ্চলে কৌশলগত অবস্থান এবং বৈশ্বিক বাণিজ্যে ক্রমবর্ধমান অবদান তুলে ধরেন। তিনি জানান, প্রতি বছর বাংলাদেশে ৫ হাজারের বেশি জাহাজ, ৯৫টি সমুদ্রগামী ও ২০ হাজারের বেশি উপকূলীয় জাহাজ আসে। তিনি টেকসই সামুদ্রিক উন্নয়নের প্রতি দেশের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন এবং আইএমও’র কার্বনমুক্ত ভবিষ্যৎ লক্ষ্য বাস্তবায়নে বাংলাদেশের দৃঢ় সমর্থনের কথা জানান।
তিনি আরও বলেন, জাহাজ পুনঃব্যবহার খাতে বাংলাদেশ বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে এবং ১২০-এর বেশি নারীসহ ২১ হাজার প্রশিক্ষিত নাবিক দেশের সামুদ্রিক নিরাপত্তা, নাবিক কল্যাণ ও জেন্ডার অন্তর্ভুক্তিতে অবদান রাখছে।
অনুষ্ঠানে তিনি আইএমও সদরদফতরে একটি বাংলাদেশি রেপ্লিকা জাহাজের মডেল উপহার দেন, যা খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড নির্মাণ করেছে। এটি আইএমও-তে বাংলাদেশের সদস্যপদ লাভের (১৯৭৬) পর প্রথমবারের মতো এমন উদ্যোগ।
পরে আইএমও মহাসচিব আর্সেনিও ডমিঙ্গুয়েজের সঙ্গে সাক্ষাতে পরিবেশবান্ধব শিপিং, বিকল্প জ্বালানি ও প্রযুক্তি বিনিময়ের ওপর আলোচনা করেন তিনি।
২০২৩-২৫ মেয়াদে বাংলাদেশ বর্তমানে আইএমও কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। আগামী নির্বাচনে নিরাপদ, সবুজ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সামুদ্রিক ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্যে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সমর্থন কামনা করেন উপদেষ্টা।
তিনি বাংলাদেশের পরিবেশ সুরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, আইএমও কনভেনশন বাস্তবায়ন, ডিজিটালাইজেশন এবং নারীর অংশগ্রহণে বিভিন্ন অগ্রগতি তুলে ধরেন। সমুদ্র দূষণ রোধে বাংলাদেশের সতর্ক অবস্থান এবং নদীর প্লাস্টিক দূষণ ঠেকাতে আইনি সংস্কারের পরিকল্পনাও তুলে ধরেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আইএমও মহাসচিব, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, স্থায়ী প্রতিনিধি এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন হাইকমিশনার ও আইএমও-তে স্থায়ী প্রতিনিধি আবিদা ইসলাম, ডেপুটি হাইকমিশনার হযরত আলী খান, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর মোহাম্মদ মাকসুদ আলম, কাউন্সেলর (মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স) ক্যাপ্টেন কাজী এ বি এম শামীম এবং কাউন্সেলর (রাজনৈতিক) মৌমিতা জিনাত।