চীন সফরে সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেই দেশে ফিরেছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরে আসা বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সরকারপ্রধান বলেন, আমার সমস্ত কর্মসূটি বিকাল ৫টায় শেষ হয়ে যায়। আমাদের ১১ (জুলাই) তারিখে পৌঁছানোর কথা। ১১ তারিখেই এসেছি। হয়েতো বিকালে আসার কথা। সেখানে আর্লি মর্নিং-এ আসছি। অনুকূল বাতাস থাকায় বিমান আগেই চলে এসেছে বলেও তিনি জানান।
চীনসফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তার সরকারি বাসভবন গণভবনে রবিবার (১৪ জুলাই) বিকাল ৪টায় এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
চীন সফর এগিয়ে এনে আগে দেশে ফিরে আসা, ৫ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি হওয়ার কথা সেখানে ১০০ মিলিয়ন ইউয়ানের (চীনা মুদ্রা) চুক্তি হয়েছে, ভারতের গণমাধ্যমে এ ধরনের প্রচারণা বেশি হচ্ছে; এরকমও খবর প্রকাশিত হয়েছে ‘আপসেট পিএম হাসিনা রিটার্ন ফ্রম চায়না’- এসব বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভারতের গণমাধ্যমের কথা শুনে যারা বললেন, তারা তো দুই দিন আগেও বলেছেন ভারতের কাছে সব বিক্রি করে দিয়ে আসছি। এবং দেশ বিক্রির অসম চুক্তি করে আসছি। তাহলে কোনটা ঠিক?
কিছুটা আগে দেশে আসার কারণ উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, আমার মেয়েকে ওরা (চীন) দাওয়াত দিয়েছিল। ওদের হেলথ মিনিস্ট্রি থেকে দাওয়াত পেয়েছিল। ওর যাওয়ার কথা। ওর প্রচণ্ড জ্বর থাকায় আমার সঙ্গে যেতে পারেনি। এটা বাস্তবতা। আমি একটা মা। ওই অবস্থায় ওকে রেখে আমাকে চলে যেতে হয়।
তিনি বলেন, আমার সমস্ত কর্মসূটি কিন্তু শেষ হয়ে যায়। আমাদের কিন্তু ১১ (জুলাই) তারিখে পৌঁছানোর কথা। আমরা ১১ তারিখেই এসেছি। হয়েতো ১১ তারিখ বিকালে আসতার। সেখানে আর্লি মর্নিং-এ আসছি। মাত্র ৫ বা ৬ ঘণ্টার পার্থক্য। এই ৬ ঘণ্টার মধ্যেই এত বড় তোলপাড় হয়ে যাবে, এটা তো বুঝতে পারিনি। আর এটা তো নতুন কিছু নয়। এর আগে যখন ভারতে গেলাম, আমার তো ৩/৪ দিনের প্রোগ্রাম ছিল। যখন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট বললেন উনি বাংলাদেশে আসবেন, তো আমার একটা দায়িত্বই ছিল উনি বাংলাদেশে যখন আসবেন তার আগে আমার ঢাকা এসে পৌঁছানোর কথা। পৌঁছে উনাকে রিসিভ করবো। এজন্য আমি ভারতে দুই দিনের প্রোগ্রাম ক্যান্সেল করে চলে আসলাম। এসে ওনাকে রিসিভ করলাম।
আগেও অনেক দেশ সফর করে আগেভাগে ফিরে এসেছেন এমনটি জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, পৃথিবীর বহু দেশে যখন যাই- আমার অফিশিয়াল কাজগুলো যখন শেষ হয়ে যায়, তো আমার তো ওখানে শপিংয়েও যাওয়ার নেই। দেখার যায়গা নেই। বেড়ানোরও কিছু নেই। আমি যত তাড়াতাড়ি পারি দেশে ফিরে আসি। একবার নয়, বহুবার আমি এভাবে এসেছি। আমার কর্মসূচি দেখলে এটা দেখতে পাবেন। যখনই এ রকম সুযোগ পেয়েছি। তাড়াতাড়ি করে চলে এসেছি। আর আমরা সব কর্মসূচি শেষ করেছি। বিকাল ৫টার মধ্যে কাজ শেষ। রাত ১০টায় আমাদের ফ্লাইট। আমরা এখানে পৌঁছালাম চীনের সময় রাত আড়াইটা। দুই ঘণ্টা আমরা সময় পেলাম। আমরা আগে এসে পৌঁছালাম। টেল উইন্ড (অনুকূল বাতাস) ছিল, একটু তাড়াতাড়ি প্লেনটা চলে আসছে। এটা হলো বাস্তবতা। এটাকে রং-চং মাখিয়ে এতকিছু বলা! যারা এসব কথাগুলো বলেন তাদের দেশবাসী যেন একটু চিনে রাখেন, যে তারা এ ধরনের বানোয়াট কথা বলে।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ভারতের পত্রিকায় কী লিখেছে সেটা আমার মাথাব্যথা নয়। কিন্তু যারা ভারতবিরোধী বক্তৃতা দিয়ে আবার ভারতের লেখা পড়ে কমেন্টস করে, তাদের নীতিটা কী সেটা বোঝা উচিত। তাদের মন-মানসিকতা কী এটা জানতে চাই। আমার সবকিছুই তো খারাপ। দেশটা ভালো চলতেছে না। দেশ সর্বনাশ হয়ে গেছে। এখন মেট্রোরেলে বসে বলে এটা কী বানালো? এক্সপ্রেসওয়ে খুব দ্রুত চয়ে আসে। ওটাও সর্বনাশের ব্যাপার! গ্রাম পর্যন্ত রাস্তা হয়েছে। বিদ্যুৎ চলে গেছে। এটাও তো দেশের সর্বনাশ! আজ গ্রামগুলো শহর হয়ে যাচ্ছে, নাগরিক সুবিধা পাচ্ছে তারা, তাদের দৃষ্টিতে সেটাও সর্বনাশ।
শেখ হাসিনা বলেন, তারা তো চায় দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে না। ভিক্ষা এনে চলবে। এটাই তারা এদেশে করেছে। দেশের ও দেশের মানুষের প্রতি এতটুকু দায়িত্ববোধ থাকলে এত কাজ করার পরেও কিছু দেখে না। চোখ থাকতে কেউ যদি অন্ধ হয় আর কান থাকতে বধির হয় তাহলে আমার কিছু বলার নেই। মুখ আছে বলে যাক। ওটা আমার না শুনলেই হলো। শুনলাম। শুনতে শুনতে আমি অভ্যস্ত হয়ে গেছি।
তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতায় যারা বিশ্বাস করে না, রাজাকারদের যারা ক্ষমতায় বসায়, জাতির পিতার হত্যাকারীকে সংসদে বসায়, বিচারের হাত থেকে রেহাই দেয়, তাদের মুখে এর থেকে বেশি কী আশা করেন? কী আশা করবেন?
ঋণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চীনের সঙ্গে দুই বিলিয়ন ডলারের সমঝোতা হয়েছে। এর মধ্যে কিছু থাকবে অনুদান। কিছু হবে সুদমুক্ত ঋণ। এ রকম চার..।