পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আমাদের অর্থনৈতিক খাতে তারা যাতে বিনিয়োগ করে সেটি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। আমাদের সরকার সবার জন্যই একটি নতুন জানালা খুলেছে। অনাবাসী বাংলাদেশি, প্রবাসী বাংলাদেশি, পৃথিবীর যেকোনও বিদেশি কোম্পানি এবং বিদেশি অফশোর ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা রাখতে পারবেন। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সাড়ে ৮ শতাংশ সুদ দেওয়া হবে। বিষয়টি নিয়ে সৌদি আরবের সঙ্গে আলোচনা করেছি। অফশোর ব্যাংকিংসহ অন্যান্য বিনিয়োগ নিয়ে আমাদের ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।
বুধবার (৩ জুলাই) বিকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ অন্যদের সঙ্গে অত্যন্ত ভালোভাবে আলোচনা হয়েছে। সৌদি আরবের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক এখন আর শ্রমিক রফতানি আর শ্রমিক গ্রহীতার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। আমাদের সম্পর্কের বহুমাত্রিকতা বহু আগেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সৌদি আরব আমাদের দেশে বিনিয়োগ করছে, আরও করতে চায়। সৌদি আরবকে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছি। তাদের জন্য আমাদের সরকার বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে জায়গা দিতেও প্রস্তুত আছে। তারা ইতোমধ্যে সেটি পরিদর্শন করে গেছেন।
তিনি আরও বলেন, সৌদি আরবে ৩১ লাখ ৩৭ হাজার বাংলাদেশি নাগরিক কর্মরত আছেন। সৌদি আরবের অবকাঠামো উন্নয়ন কাজে প্রচুর শ্রমিকের দরকার আছে। করোনার কারণে সৌদি আরব থেকে লাখ লাখ শ্রমিক ফেরত এসেছে। কিন্তু গত তিন বছরে ১৭ লাখ কর্মী আমরা বাংলাদেশ থেকে পাঠিয়েছি। তবে এক্ষেত্রে আমরা আলোচনা করেছি– বাংলাদেশের কিছু অসাধু শ্রম রফতানিকারক এবং সৌদি আরবের কিছু ব্যক্তি, বিশেষ প্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের প্রতারিত করছে। অনেকেই ভিসা নিয়ে সে দেশে যাচ্ছে, কিন্তু কাজ পাচ্ছে না। আমরা বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি, আমাদের পক্ষ থেকেও আমরা প্রস্তাব দিয়েছি। যৌথভাবে আমরা ঐকমত্যে এসেছি যে একটি যৌথ টাস্কফোর্স গঠন করা হবে, যাতে সেখান থেকে ভুয়া চাহিদাপত্র কেউ না পাঠায়। ভুয়া চাহিদাপত্র দিয়ে যাতে কর্মীরা প্রতারিত না হয় সেটি নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। সৌদি থেকে আমরা জ্বালানি তেল আমদানি করি। আমরা ইতোপূর্বে অর্থ পরিশোধে সময় চেয়েছি, অর্থাৎ আরও যত বেশি দিন সময় দেওয়া সম্ভব অর্থ পরিশোধের জন্য আমরা তা চেয়েছি, বিষয়টি তারা ইতিবাচকভাবেই নিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, আগামী বছর সৌদি আরবের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপিত হবে। সেটি আমরা শুধু উদযাপনের মাধ্যমে নয়, দুদেশের সম্পর্ক এবং সহযোগিতার ক্ষেত্রকে প্রসারিত করে আমরা যাতে পালন করতে পারি সেটি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এছাড়া সৌদি যুবরাজের সম্ভাব্য বাংলাদেশ সফর নিয়েও আলোচনা হয়েছে।