X
সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪
১৭ আষাঢ় ১৪৩১

অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, আমরা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করি: ডোনাল্ড লু

বাংলা ট্রিবিউন ডেস্ক
১৩ জুন ২০২৪, ০২:৫৩আপডেট : ১৩ জুন ২০২৪, ১৭:২৩

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৩ মে গণভবনে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, বাংলাদেশ এবং মিয়ানমারের কিছু অংশ আলাদা করে পূর্ব তিমুরের মতো একটি 'খ্রিষ্টান' জাতি-রাষ্ট্র গঠনের চক্রান্ত চলছে। তিনি আরও দাবি করেন, তিনি যদি বাংলাদেশে একটি বিমানঘাঁটি স্থাপনের জন্য একটি দেশকে অনুমতি দিতেন তবে গত জানুয়ারিতে তাকে ঝামেলামুক্ত পুনর্নির্বাচনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনও দেশের নাম উল্লেখ না করলেও, বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ এশীয় সংবাদমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয় যে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ইঙ্গিত করেই এ বক্তব্য দিয়েছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘অফারটি এসেছে একজন সাদা মানুষের কাছ থেকে।... আমি যদি একটি নির্দিষ্ট দেশকে বাংলাদেশে একটি বিমানঘাঁটি নির্মাণের অনুমতি দিতাম, তাহলে আমার কোনও সমস্যা হতো না।’

এই বিষয়টিসহ বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের আরও নানা বিষয়ে ভয়েস অব আমেরিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু। লিখিত সাক্ষাৎকারে জানতে চাওয়া হয়, যুক্তরাষ্ট্র কি কখনও বাংলাদেশে একটি বিমানঘাঁটি নির্মাণের আগ্রহ প্রকাশ করেছে?

জবাবে ডোনাল্ড লু লিখেছেন, এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমরা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করি। নির্বাচনের সময় আমাদের অগ্রাধিকার ছিল শান্তিপূর্ণভাবে পরিচালিত অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে সমর্থন করার জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করা।

গত মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশ সফর করেন লু। এ সফরে তিনি বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, তথ্য প্রতিমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর বাণিজ্য বিষয়ক উপদেষ্টাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেন।

সফরে তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ সম্পর্কের মাঝে আস্থার জায়গা ফিরিয়ে আনা ও অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে দু’দেশের সম্পর্ক জোরদার করার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, "আমরা পেছনে নয়, সামনের দিকে তাকাতে চাই।"

একইসঙ্গে তিনি দুর্নীতিবিরোধী লড়াইয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের কমিটমেন্টের ব্যাপারটিও গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেন।

ডনাল্ড লু'র সফরের পরপরই গত ২০ মে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে ৭০৩১ (সি) ধারার অধীনে উল্লেখযোগ্য দুর্নীতিতে জড়িত থাকার কারণে "পাবলিক ডেজিগনেশন" (এক ধরনের নিষেধাজ্ঞা) ঘোষণা করে।

ডোনাল্ড লু তার এবারের সফরে বাংলাদেশের সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো, যারা ৭ জানুয়ারির নির্বাচন বয়কট করেছিল তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা না করায় বিরোধী দল ও সুশীল সমাজের একাংশের সমালোচনার মুখে পড়েন। এসব বিষয়সহ যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক নীতিতে বাংলাদেশের ভূমিকা ও গুরুত্ব নিয়ে ডোনাল্ড লু'র এই লিখিত সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়।

সাক্ষাৎকারে লু তার সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরের অর্জন, দুর্নীতিবিরোধী লড়াই, অর্থনৈতিক সহযোগিতা, জলবায়ু সংকট মোকাবিলা, নারী অধিকার ও উন্নয়ন, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার ইস্যুতে বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে একযোগে কাজ করে যাওয়ার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের কমিটমেন্টসহ অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে নানা প্রশ্নের জবাব দেন।

তিনি তার এবারের সফরে বিরোধী দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা না করা ও বাংলাদেশে নির্বাচন ইস্যুতে ও গণতন্ত্র ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর বিষয়ে বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের "নমনীয়" নীতির সমালোচনার ব্যাপারেও তাঁর সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করেন।

প্রশ্ন করা হয়, আপনার সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরে, আপনি বলেছেন যে বাংলাদেশে গত ৭ জানুয়ারিতে হয়ে যাওয়া সংসদ নির্বাচন যেন অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ হয় এবং সে দেশে গণতান্ত্রিক ধারা উৎসাহিত হয়– এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের কিছু উদ্যোগের কারণে দু’দেশের সম্পর্কে এক ধরনের টানাপড়েন তৈরি হয়েছিল। বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের বিষয়ে এখন আর পেছনের দিকে না তাকিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাবার মাধ্যমে দু’দেশের মধ্যকার সম্পর্কের মাঝে আস্থার জায়গাটি ফিরিয়ে আনার ব্যাপারেও কাজ করার কথা বলেছেন।

এটি কি বাংলাদেশের প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নীতি পরিবর্তনের একটি ইঙ্গিত, যেখানে আপনারা বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনসহ গণতন্ত্র সুরক্ষা ও প্রসারের বদলে ভূ-রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, পরিবেশগত এবং কৌশলগত দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলোতে বেশি মনোযোগ দিতে চান?

জবাবে ডোনাল্ড লু বলেন, আমার সাম্প্রতিক ঢাকা সফরের সময় আমি যেমনটি বলেছিলাম, আমরা সামনের দিকে তাকিয়ে আছি, পেছনে নয়।

আমরা বিস্তৃত পরিসরে বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের অংশীদারত্বকে এগিয়ে নিতে প্রস্তুত এবং আগ্রহী। আমরা আশা করি, বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য সম্পর্ক আরও গভীর হবে। নারীর অর্থনৈতিক নিরাপত্তায় আমরা আমাদের অভিন্ন স্বার্থকে এগিয়ে নিতে চাই। আমরা ইতোমধ্যে জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করছি। আমরা অংশীদারত্বের ভিত্তিতে দু’দেশের মধ্যে নিজেদের অভিন্ন অগ্রাধিকারগুলো নিয়ে একসঙ্গে কাজ করে যাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী।

(সেইসঙ্গে) বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়ন আমাদের জন্য একটি অগ্রাধিকার। আমরা সুশীল সমাজ ও সাংবাদিকদের গুরুত্বপূর্ণ কাজকে সমর্থন করে যাবো এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে সমর্থন অব্যাহত রাখবো।

নির্বাচনি প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্তকারী সহিংসতার নিন্দায় আমরা সোচ্চার ছিলাম এবং আমরা বাংলাদেশ সরকারকে সহিংসতার ঘটনাগুলো বিশ্বাসযোগ্যভাবে তদন্ত করতে এবং যারা এসবের সঙ্গে জড়িত, তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার জন্যও অনুরোধ করেছি। এই বিষয়গুলো নিয়ে (সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে) আমাদের যোগাযোগ চালু থাকবে।

জানতে চাওয়া হয়, বাংলাদেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো এবং সুশীল সমাজের একটি অংশ ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের ইস্যুতে, যার মধ্যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টিও রয়েছে, সে বিষয়গুলো নিয়ে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের প্রতি "নমনীয়" ভূমিকা নেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের সমালোচনা করেছে। আপনি এ সমালোচনার ব্যাপারে কী বলবেন?

উত্তরে ডোনাল্ড লু বলেন, যুক্তরাষ্ট্র দৃঢ়ভাবে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনকে সমর্থন করে এবং মানবাধিকারের প্রতি সম্মান নিশ্চিত করার ব্যাপারে দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পুরো নির্বাচনকালে আমরা নিয়মিত বাংলাদেশের সরকার, বিরোধী দল, সুশীল সমাজ এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করার কাজে যোগাযোগ অব্যাহত রেখে তাদের একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করার লক্ষ্যে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছি। নির্বাচনি প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্তকারী সহিংসতার নিন্দায় আমরা সোচ্চার ছিলাম এবং আমরা বাংলাদেশ সরকারকে সহিংসতার ঘটনাগুলোর বিশ্বাসযোগ্যভাবে তদন্ত করতে এবং যারা এসবের সঙ্গে জড়িত, তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার জন্যও অনুরোধ করেছি। এসব বিষয় নিয়ে (সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে) আমাদের যোগাযোগ চালু থাকবে।

আরেকটি প্রশ্ন ছিল, আপনার সাম্প্রতিক সফরে আপনি সুশীল সমাজের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করলেও নির্বাচন বয়কটকারী বিরোধী দলগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করেননি। আপনার সাম্প্রতিক সফরে কেন বিরোধী দলের সদস্যদের সঙ্গে দেখা না করার সিদ্ধান্ত নিলেন?

জবাবে লু বলেন, এটা প্রাক-নির্বাচনের সময় নয়, তাই এবারের সফরে আমি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দেখা করিনি। এটা সত্য যে গত বছর নির্বাচনের আগে আমি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে গোলটেবিল বৈঠকের সুযোগ পেয়েছিলাম। 

এবার ঢাকায় থাকাকালীন আমার সৌভাগ্য হয়েছে বাংলাদেশিদের বিভিন্ন গোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করার। এর মধ্যে ছিলেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধি থেকে শুরু করে সরকারি কর্মকর্তারা। বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের সঙ্গে সঙ্গেও আমি দেখা করেছি, যারা আমাকে বোলিং এবং ব্যাটিং সম্পর্কে দু-একটি ব্যাপার শিখিয়েছে।

আরেকটি প্রশ্ন ছিল, আপনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই এবং আর্থিক সুশাসন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার জন্য আপনার সরকারের পরিকল্পনা তুলে ধরেছেন। বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞা কি দুর্নীতির বিরুদ্ধে এ লড়াইয়েরই একটি অংশ? আপনি কি (দুর্নীতি সংক্রান্ত) এই ইস্যুগুলো সমাধানের ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতা করার সদিচ্ছা নিয়ে সন্তুষ্ট?

এর উত্তরে ডোনাল্ড লু বলেন, আমি যখন আলবেনিয়া এবং কিরগিজ প্রজাতন্ত্রে রাষ্ট্রদূত ছিলাম, আমরা দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা (স্যাংশন) দিয়েছিলাম। এটি তখনকার (আলবেনীয়) সরকারের কাছে জনপ্রিয় ছিল না, কিন্তু এখন সেই নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত সাবেক দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা সবাই কারাগারে। সারা বিশ্বের সমাজ দুর্নীতির বিচার দেখতে আগ্রহী।

আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং ২০ মে, আমরা ৭০৩১ (সি) ধারার অধীনে সাবেক জেনারেল আজিজ আহমেদের উল্লেখযোগ্য দুর্নীতিতে জড়িত থাকার কারণে তার বিরুদ্ধে "পাবলিক ডেজিগনেশন" (এক ধরনের নিষেধাজ্ঞা) ঘোষণা করি। দুর্নীতির এ অভিযোগগুলোর ব্যাপারে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা হবে বলে বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রীরা বিবৃতি দিয়েছেন, আমরা এ ব্যাপারটি স্বাগত জানাই।

আমি আশা করি, আমরা বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে মিলে সব ধরনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অভিন্ন লক্ষ্য অর্জনে একসঙ্গে কাজ করে যাবো।

অদূর ভবিষ্যতে অন্যান্য হাইপ্রোফাইল বাংলাদেশি নাগরিকদের ওপরও দুর্নীতি সম্পর্কিত এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি দেখতে পাবো? জানতে চায় ভয়েস অব আমেরিকা।

ডোনাল্ড লু জানান, যখন আমাদের কাছে উল্লেখযোগ্য দুর্নীতির বিশ্বাসযোগ্য তথ্য থাকে, তখন আমরা সারা বিশ্বেই নিষেধাজ্ঞা এবং ভিসা বিধিনিষেধের আকারে প্রকাশ্যে পদক্ষেপ নিই। আমাদের আইনগুলো আমাদের দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ বা তাদের দুর্নীতির অর্থের গন্তব্য হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রকে ব্যবহার করা থেকে বিরত রাখতে সচেষ্ট। আমি আশা করি, আমরা বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে মিলে সব ধরনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অভিন্ন লক্ষ্য অর্জনে একসঙ্গে কাজ করে যাবো।

প্রশ্ন করা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিরীক্ষণের জন্য আপনি বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে বিনামূল্যে স্যাটেলাইট ডেটা ব্যবহার করার প্রস্তাব দিয়েছেন। বাংলাদেশ এ ব্যাপারে কী প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে? আপনার মতে, দুই দেশের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত সহযোগিতার ক্ষেত্রে কোন ক্ষেত্রগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত?

ডনাল্ড লু জানান, মে মাসে ঢাকা সফরের সময় প্রচণ্ড গরমে বাংলাদেশিদের পাশাপাশি আমি নিজেও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব অনুভব করেছি। জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারত্বের ভিত্তিতে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা ক্লিন এনার্জি ক্যাপাসিটি গড়ে তোলা, কৃষি ও বিদ্যুতের মতো খাতে গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন কমানো, জীববৈচিত্র্য বজায় রাখা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি কমাতে পরিবেশ সংরক্ষণের দিকে মনোনিবেশ করছি। এ বিষয়ে বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমাদের আলোচনা অত্যন্ত ইতিবাচক ছিল।

একটি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল, যা স্বাধীন এবং উন্মুক্ত, সংযুক্ত, সমৃদ্ধ, নিরাপদ এবং স্থিতিশীল। যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশ, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের ব্যাপারে এমন একটা অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি লালন করে।

প্রশ্ন করা হয়, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ইন্দো-প্যাসিফিক নীতিতে বাংলাদেশ কীভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে? এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতা চাওয়ার ক্ষেত্রে আপনাদের অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রগুলো কী?

উত্তরে লু বলেন, একটি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল, যা স্বাধীন এবং উন্মুক্ত, সংযুক্ত, সমৃদ্ধ, নিরাপদ এবং স্থিতিশীল। যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশ, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের ব্যাপারে এমন একটা অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি লালন করে। একটি গতিশীল এবং দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান তাকে এ অঞ্চলের বাণিজ্য প্রসারের একটা সেতু এবং এই অঞ্চলে সমৃদ্ধির নোঙর হিসেবে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছে।

আমরা এই অঞ্চলে অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর পাশাপাশি নিরাপত্তা সহযোগিতা বৃদ্ধি, জলবায়ু সংকট মোকাবিলা এবং গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের উন্নয়নে আমাদের বাংলাদেশি অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করার দিকে মনোনিবেশ করছি। এ ইস্যুগুলোসহ অন্যান্য ইস্যুর সমন্বয়, আমাদের উভয় দেশের জনগণের জন্য সুফল বয়ে আনবে।

/এফএস/এস/এমওএফ/
সম্পর্কিত
হাঁটতে না পারলেও নির্বাচনের দৌড়ে ট্রাম্পকে হারাবো: বাইডেন
গাজা যুদ্ধের শুরু থেকে ইসরায়েলকে যে পরিমাণ যুদ্ধাস্ত্র দিলো যুক্তরাষ্ট্র
তীব্র হচ্ছে ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধের আশঙ্কা
সর্বশেষ খবর
রায়পুরে চার মাসে অর্ধশত মোটরসাইকেল চুরি, জিডি করেও হয় না উদ্ধার
রায়পুরে চার মাসে অর্ধশত মোটরসাইকেল চুরি, জিডি করেও হয় না উদ্ধার
বর্ষার রোগ সম্পর্কে সচেতন থাকুন
বর্ষার রোগ সম্পর্কে সচেতন থাকুন
টিম অব দ্য টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন ভারতেরই আধিপত্য 
টিম অব দ্য টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন ভারতেরই আধিপত্য 
সাদিক এগ্রোর জায়গায় বিনোদন পার্ক করবে ডিএনসিসি
সাদিক এগ্রোর জায়গায় বিনোদন পার্ক করবে ডিএনসিসি
সর্বাধিক পঠিত
রাষ্ট্র আমাকে বাঁচিয়ে রাখতে চায় কি না, প্রশ্ন ব্যারিস্টার সুমনের
রাষ্ট্র আমাকে বাঁচিয়ে রাখতে চায় কি না, প্রশ্ন ব্যারিস্টার সুমনের
নরসিংদীতে সাপের কামড়ে ১৪ জন হাসপাতালে
নরসিংদীতে সাপের কামড়ে ১৪ জন হাসপাতালে
এই বৃষ্টির দিনে খিচুড়ি খেতে কোথায় যাবেন?
এই বৃষ্টির দিনে খিচুড়ি খেতে কোথায় যাবেন?
নতুন অর্থবছরের বাজেট পাস
নতুন অর্থবছরের বাজেট পাস
৪ ফ্ল্যাটের চাবি বেনজীরের কাছে, প্রবেশ করতে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ
৪ ফ্ল্যাটের চাবি বেনজীরের কাছে, প্রবেশ করতে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ