বর্তমানে মাদক পরিবহনের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে কুরিয়ার সার্ভিস। এটাকে স্ক্যানিংয়ের আওতায় আনা হবে। বুধবার (২৯ মে) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত অনুষ্ঠিত সংসদীয় বৈঠকে এ কথা বলেছেন কমিটির সদস্য সানোয়ার হোসেন।
বৈঠকে তিনি বলেন, ‘লাইসেন্স ছাড়া মদ বিক্রির নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তার এলাকায় শত শত লোকের কাছে মদ বিক্রি হয়। জেলখানার তথ্য নিলে দেখা যাবে অর্ধেকের বেশি কয়েদি মাদক মামলায় জড়িত। এ কার্যক্রম বন্ধে বড় বড় চিহ্নিত গোষ্ঠী বা সিন্ডিকেটকে ধ্বংস করতে হবে। বর্তমানে মাদক পরিবহনের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে কুরিয়ার সার্ভিস। এটাকে স্ক্যানিংয়ের আওতায় আনতে হবে।’
বৈঠকে অভিযোগ তুলে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মুস্তাকীম বিল্লাহ বলেন, ‘মাদকবিরোধী যৌথ টাস্কফোর্সের অভিযানে সোর্সের তথ্য এক পক্ষ অন্য পক্ষকে সরবরাহ না করার অভিযোগ রয়েছে। ক্রেডিট নেওয়ার জন্য এ ধরনের ঘটনা ঘটছে।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া এ ধরনের একটি ঘটনা ঘটেছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর থেকে সিভিল পোশাকে অভিযান চালানো হয়। এতে অনেক সময় সাধারণ মানুষের মধ্যে ভুল-বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর যৌথ টাস্কফোর্সের মাধ্যমে অভিযান চালানো হয়। ক্রেডিট নেওয়ার জন্য সোর্সের তথ্য এক পক্ষ অন্য পক্ষকে সরবরাহ করা থেকে বিরত থাকে। সোর্সকে একটি প্ল্যাটফর্মে আনার প্রচেষ্টা চলছে।’
বৈঠকে র্যাবের মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন বলেন, ‘দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে কিশোর গ্যাং সমাজের জন্য অ্যালার্মিং হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিশোর গ্যাং নির্মূলে অভিযান চালিয়ে অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে ছাড়া পেয়ে পুনরায় অপরাধ কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়ছে তারা। কোথায় কোন কিশোর গ্যাং আছে, তাদের কারা আশ্রয় দিচ্ছে, তার তালিকা তৈরি করা হয়েছে। শিগগিরই অভিযান চালানো হবে বলে।’
উল্লেখ্য, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে মাদক নিয়ন্ত্রণের স্থানীয় কর্মকর্তা, পুলিশ ও বিজিবির সমন্বয়ে যৌথ টাস্কফোর্স বিভিন্ন সময়ে মাদকবিরোধী অভিযান চালানো হয়।
বুধবারের বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সারা দেশে লাইসেন্সপ্রাপ্ত ২১৭টি দেশি মদের দোকান, ৩৯টি বিদেশি মদের দোকান, ২৩৫টি বার রয়েছে। গত ২৮ এপ্রিল থেকে ২১ মে পর্যন্ত ৩২৮টি দোকান/বারে পরিদর্শন করা হয়েছে। আরও জানানো হয়, দেশে ১৮টি শিশা বার আছে। তবে কোনও শিশা কারখানা নেই।
সংসদীয় কমিটির সদস্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘মাদক আইনে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান থাকলেও অপরাধী ধরা পড়ার পর সাক্ষীর অভাবে সঠিক বিচার করা যাচ্ছে না। ফলে ছাড়া পাওয়ার কিছুদিনের মধ্যে নতুন উদ্যামে মাদক ও অপরাধে জড়িয়ে যাচ্ছে তারা।’
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেনজীর আহমদের সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটির সদস্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সামছুল হক দুদু, ময়েজ উদ্দিন শরীফ, চয়ন ইসলাম, মো. সাদ্দাম হোসেন পাভেল ও হাছিনা বারী চৌধুরী অংশ নেন।