বিএনপি নেতাদের স্লোগানে ঘাতক চরিত্রের পরিচয় আবারও স্পষ্ট হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে নিয়ে অশ্রাব্য ভাষায় স্লোগান ও গালিগালাজ করার পরিণতি হবে ভয়াবহ।
রবিবার (২৯ মে) সকালে ওবায়দুল কাদের তার বাসভবনে বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে এ কথা বলেন।
বিএনপি নেতারা '১৫ আগস্টের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার"— এমন স্লোগান দিয়ে তাদের ঘাতক চরিত্রের পরিচয় আবারও স্পষ্ট করেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
জাতীয় প্রেস ক্লাবসহ বিভিন্ন জায়গায় বিএনপি ও তাদের দোসররা সমাবেশের নামে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, বক্তব্য-বিবৃতিতে কোনও শালীনতা, সৌজন্যবোধও দেখাচ্ছে না তারা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়েও তারা নোংরা ভাষায় স্লোগান দিচ্ছে, যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
এ সরকারের অধীনে নাকি আর কোনও নির্বাচন হবে না, নির্বাচন হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে— বিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশের জনগণ কোনও ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বেচ্ছাচারী ও দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্যকে মেনে নেয় না। কোনও ষড়যন্ত্রকারীর রক্তচক্ষু ও ত্রাসের কাছে মাথা নত করে না আওয়ামী লীগ।
তিনি বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ও দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার বুটের তলায় পিষ্ট করে কারফিউ মার্কা গণতন্ত্র চাপিয়ে দিয়ে জাতির সঙ্গে তামাশা করেছিলেন। একই সঙ্গে সেনাপ্রধান এবং রাষ্ট্রপতির পদ দখল করে সংবিধান ও আইনকে ভূলুণ্ঠিত করেছিলেন।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে সে অপরাজনীতির ঐতিহ্য বহন করে চলেছে আজকের বিএনপি।
আইন বা নিয়ম-নীতির কথা শুনলেই বিএনপি নেতাদের গায়ে জ্বালা ধরে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, আর এই নির্বাচন কমিশনের অধীনেই আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সরকারের অধীনে নয়।
শেখ হাসিনা সরকার শুধু নির্বাচন পরিচালনায় নির্বাচন কমিশনকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিবে জানিয়ে কাদের বলেন, পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় বাংলাদেশেও সংবিধান অনুযায়ী সেভাবেই যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
বিএনপি মহাসচিবের নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা বিএনপি মহাসচিবের মামার বাড়ির আবদার।
বিএনপি একেক সময় একেক দাবি নিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে আরও বলেন, তারা কখনও বলে জাতীয় সরকার, কখনও তত্ত্বাবধায়ক, আবার কখনও বলে নিরপেক্ষ সরকার, দেখতে দেখতে এক যুগেরও বেশি সময় পার করলেন বিএনপি নেতারা কিন্তু এখনও জনগণের কাছে স্পষ্ট করতে পারেনি আসলে বিএনপি কী চায়?
বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এটা তো মীমাংসিত একটি বিষয়, দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার এখন জাদুঘরে।
কাদের আরও বলেন, বিএনপির নেত্রীই তো বলেছিলেন শিশু আর পাগল ছাড়া কেউ নাকি নিরপেক্ষ নয়। তবে কি ক্ষমতা-পাগল বিএনপি কোনও শিশু আর পাগলের অধীনে নির্বাচন চায় কিনা সেটাই প্রশ্ন?
আওয়ামী লীগকে নাকি আর ক্ষমতায় থাকতে দেওয়া হবে না—বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, ক্ষমতায় থাকতে দেওয়া না দেওয়ার বিএনপি কে? ক্ষমতা দেওয়ার মালিক মহান আল্লাহপাক এবং ক্ষমতার উৎস এ দেশের জনগণ।
তিনি আবারও স্পষ্ট করে বলেন, যতদিন জনগণ চাইবে ততদিন শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় থাকবে।
