প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ ও বিচক্ষণ নেতৃত্বের কারণেই শত বাধা অতিক্রম করে পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘একজন মানবিক ও সাহসী নেতৃত্বের কারণেই সব অসম্ভবকে সম্ভব করে বাংলাদেশ আজ বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছে আমরাও পারি।’
বৃহস্পতিবার (১০ ডিসম্বের) সকালে জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পদ্মা সেতুর সর্বশেষ স্প্যান বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টা দুই মিনিটে বসানো হয়েছে। বিশ্বকে অবাক করে দিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে ছয় দশমিক এক পাঁচ কিলোমিটার দৈর্ঘের স্বপ্নের সেতুটি আজ পদ্মার দুই পাড়ের মানুষকে সংযুক্ত করেছে।’ আনুষঙ্গিক কাজ শেষে এ সেতু চালু হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এ দেশের সব গণতান্ত্রিক-প্রগতিশীল আন্দোলনের সাহসী মিছিলের নাম আওয়ামী লীগ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাসহ বাঙালি জাতির যা কিছু অর্জন, তা জনগণের সংগঠন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পদ্মা সেতুও বাস্তবায়ন হলো আওয়ামী লীগের হাত ধরে।’
আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র চর্চায় বিশ্বাসী উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দলের অভ্যন্তরে গণতন্ত্র চর্চায় দেশের যেকোনও দলের চেয়ে আওয়ামী লীগ এগিয়ে রয়েছে। আওয়ামী লীগের উপকমিটিসমূহ ঘোষণা শুরু হয়েছে। ঘোষিত কমিটির বিষয়ে কেউ সংক্ষুব্ধ হলে কিংবা কারও কোনও বক্তব্য থাকলে, অথবা কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আপিলের সুযোগ রয়েছে। তাই যেকোনও কমিটির বিষয়ে যেকোনও অভিযোগ দলীয় সভাপতির কার্যালয়ে নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে জমা দেওয়া যাবে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগকে আরও পরিচ্ছন্ন, স্মার্টার দলে রূপান্তর করতে চাই।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘চিহ্নিত অপরাধী, চাঁদাবাজদের কোনও অবস্থাতেই দলে আনা যাবে না। ক্ষমতার অপব্যবহার করার জন্য দলের পদ-পদবি কাউকে ইজারা দেওয়া হয়নি। আওয়ামী লীগের পদ-পদবি ব্যবহার করে ব্যক্তিগত অপরাধ আর অবৈধ আয়ের উৎস সম্প্রসারণ করতে দেওয়া হবে না।’
‘সরকার দেশকে বধ্যভূমিতে পরিণত করেছে’— বিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে সম্ভাবনার সোনার বাংলা গড়তে চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। কিন্তু ‘৭৫ এর ১৫ আগস্ট আপনারাই দেশকে বধ্যভূমিতে পরিণত করেছিলেন। ৩ নভেম্বর কারাগারের নিরাপদ প্রকোষ্টকে বধ্যভূমিতে রূপান্তর করেছিলেন। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে আরেক বধ্যভূমিতে পরিণত করতে চেয়েছিলেন শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টার মাধ্যমে।’
‘ভাস্কর্য ইসুতে সরকারের রাজনৈতিক উদেশ্য আছে’—বিএনপি নেতাদের এ মন্তব্য প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তাদের এ কথা বলা মানে উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে সমর্থন করা। ভাস্কর্যের পেছনে রাজনৈতিক উদেশ্য রয়েছে বিএনপির, সরকারের নয়।’
জায়পরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট শামসুল আলম দুদুর সভাপতিত্বে সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডক্টর হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, এসএম কামাল হোসেন, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক ডাক্তার রোকেয়া সুলতানা এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সোলায়মান আলী।