শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, আমরা শুধুমাত্র ‘লার্নার’ সৃষ্টি করতে চাই না যারা শুধু চাকরির জন্য পড়ালেখা করে। আমরা গ্র্যাজুয়েটদের উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরি করতে চাই যাতে তারা অন্যদের জন্য চাকরির সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। আমাদের এ রকম পরিবেশ তৈরি করতে হবে যাতে আমাদের লার্নাররা উদ্যোক্তা হওয়ার দক্ষতা অর্জন করতে পারে। আমাদের অবশ্যই ‘এক্সপেরিয়েনশিয়াল লার্নিং’ এ জোর দিতে হবে। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে আরও শক্তিশালী করা দরকার। শনিবার (২৩ নভেম্বর) রাজধানীর র্যাডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন হোটেলের গ্র্যান্ড বল রুমে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো আয়োজিত ১৮তম এশিয়ান ইউনিভার্সিটি প্রেসিডেন্টস ফোরাম-২০১৯ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আয়োজনে এবং বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির সহযোগিতায় সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমি বিশ্বাস করি আমাদের অনেক কিছু করার আছে এবং করতে হবে। সায়েন্স, টেকনোলোজি, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ম্যাথমেটিকস এর সঙ্গে ‘এ’ যোগ করতে হবে, এ -তে আর্টস। কারণ আর্টস ছাড়া যথাযথভাবে কাজে দেবে না। তিনি বলেন, আমরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কথা বলছি। বর্তমানে আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের ‘লার্নার’ হিসেবে রূপান্তরিত করছি। ‘লার্নার’ শুধু আজকের জন্য না, সারা জীবনের জন্য। কারণ বিশ্ব এখন দ্রুতগতিতে পরিবর্তিত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের শেখার কৌশল না শেখালে, শিক্ষার্থীরা না শিখলে আগামীতে যে বাস্তবতার সম্মুখীন তারা হবে, তাতে তারা টিকে থাকতে পারবে না।
বিশ্বে বর্তমানে এশিয়ার অর্থনীতি অনেক এগিয়ে উল্লেখ করে দীপু মনি বলেন, মানুষ বলে ২১ শতক হবে এশিয়ার শতক। এজন্য আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে সেভাবে প্রস্তুত করতে হবে। সেজন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং শিল্পকে একে অপরের সহায়ক হতে হবে। আমরা প্রতিনিয়ত শুনতে পাই, আমাদের গ্র্যাজুয়েটরা চাকরি পেতে ব্যর্থ হচ্ছে এবং চাকরিদাতারা অভিযোগ করে – তারা সে ধরনের যোগ্যতাসম্পন্ন চাকরিপ্রার্থী পাচ্ছেন না। এটি সম্পূর্ণ অমিলের বিষয়। এজন্যই আমাদের একে অপরের সহায়তা প্রয়োজন যাতে অমিলটি দূর হয়।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা আজকে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্টের (জনসংখ্যাতাত্ত্বিক সুবিধা) কথা বলছি। ডিভিডেন্টের জন্য বিনিয়োগের প্রয়োজন আছে এবং তা অবশ্যই শিক্ষা খাতে হতে হবে। বাংলাদেশের জন্য সেই সুযোগ কিছুটা সংকীর্ণ হয়েছে, কারণ এই ডেমোগ্রাফিক ট্রানজিশন আমাদের জন্য শুরু হয়েছে ১৯৭৫ সালের পরে। আমরা ইতোমধ্যে ৪০ বছর হারিয়েছি। আমাদের হাতে হয়তো আরও ১০ থেকে ১২ বছর সময় আছে যথাযথ বিনিয়োগ করার যাতে আমরা ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্টের যথাযথ লাভ পেতে পারি।
বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এখন বাংলাদেশের খুব ভালো সময় যাচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের শিক্ষাখাতে যে গুরুত্ব দেওয়া উচিত, আমরা সেটা করার চেষ্টা করছি। আমি মনে করি, আজকের এই সম্মেলন সঠিক সময়ে আয়োজিত হচ্ছে। আশা করি, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত অতিথিরা ঢাকায় খুব ভালো সময় পার করবেন। যখন আপনারা নিজ দেশে ফিরে যাবেন তখন বাংলাদেশের একটি ছোট্ট অংশ হৃদয়ে ধারণ করে নিয়ে যাবেন এবং বাংলাদেশে বারবার ফিরে আসবেন।