ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করার প্রতিবাদ জানিয়ে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হল পাড়া থেকে এই বিক্ষোভ শুরু হয় এবং টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
সমাবেশে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মোসাদ্দেক আলী ইবনে মুহাম্মদ বলেন, ‘অভ্যুত্থান চলাকালীন লীগের সন্ত্রাসীরা আমাদের শিক্ষার্থী, শ্রমিকদের প্রকাশ্যে গুলি করে, কুপিয়ে হত্যা করেছে। কিন্তু আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে খুনিদের বিরুদ্ধে কোনও দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্ৰহণ করতে দেখি নি। তাদের বিচার না করে কেউ কেউ তাদের পুনর্বাসন চালিয়ে যাচ্ছে। কেউ তাদের পরিবারের সদস্য মনে করছে। আবার কেউ তাদের নিষিদ্ধ করতে সমর্থন করেন না। কেউ কেউ ওই খুনি লীগকে আবারও বাংলাদেশে রাজনীতি করার অধিকার দিতে চান যেখানে এখনও তাদের বিচার হয় নি।’
‘আমরা মনে করি এটা ২৪-এর রক্তের সঙ্গে এর চেয়ে বড় বেঈমানি আর হতে পারে না। অনতিবিলম্বে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। যেসব সন্ত্রাসীরা জুলাই আন্দোলনে হত্যা করতে মদদ দিয়েছে তাদেরকে গ্ৰেফতার করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’
এ সময় শিক্ষার্থীরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, অনতিবিলম্বে বিচারে আওতায় আনুন। আওয়ামী নিষিদ্ধ করতে উদ্যোগ নেন। আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন। শহীদ ভাইদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করুন।
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সাখাওয়াত জাকারিয়া বলেন, ‘অভ্যুত্থানের পর ছাত্রলীগ বিভিন্ন রূপে ফিরে এসেছে। কখনও আনসারলীগ আবার কখনও বা রিকশাচালক হয়ে ফিরে এসেছে। তারা কতটা স্পর্ধা দেখালে ফেব্রুয়ারির ১ তারিখে তারা প্রকাশ্যে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। তারা কাদের মদদে এ ধরণের কর্মসূচি দেওয়ার সাহস করে, সেই জবাব তাদের দিতে হবে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে বলতে হবে এখনও কীভাবে ছাত্রলীগের খুনিরা প্রকাশ্যে কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘যদি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ না করে, তাহলে বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ তাদের মোকাবিলা করার জন্য যথেষ্ট। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাতে চাই তারা বাংলাদেশে কোনও নাশকতা করার আগেই তাদের গ্রেফতার করতে হবে। যদি আপনারা ব্যর্থ হন তাহলে বাংলাদেশের জনগনই তাদের প্রতিহত করার জন্য যথেষ্ট।’
সূর্য সেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘দুই হাজার শহীদের রক্তের দাগ এখনও শুকায় নি। কিন্তু ছাত্রলীগ নতুন কর্মসূচি দিয়ে আবার মাঠে আসা পায়তারা করছে। সরকারের কাছে জানতে চাই, পাঁচ মাস অতিবাহিত না হতেই তারা কীভাবে কর্মসূচি ঘোষণা দেয়।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের অতি সুশীলতার কারণে আজকে এই খারাপ অবস্থা হয়েছে। তাদের প্রতিহত করতে ছাত্রজনতা ২৪-এর অভ্যুত্থানে যেভাবে রাজপথে নেমে এসেছিও, এবারও সেভাবে নেমে আসবে।’