পরীক্ষা শেষ হওয়ার ১০ মাসেও ফলাফল না পাওয়ায় বিভাগে তালা দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। বুধবার (৩০ অক্টোবর) সকাল ১০টায় তালা দিয়ে বিভাগের সামনে অবস্থান নেন তারা। এ সময় বিভাগটির সব বর্ষের ক্লাস বন্ধ ঘোষণা করেন অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা।
বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭-১৮ সেশনের স্নাতকোত্তর পরীক্ষা শুরু হয় ২২ নভেম্বর এবং শেষ হয় ২৫ জানুয়ারি। এরপর ভাইভা শেষ হয় ২৯ জানুয়ারি।
জানতে চাইলে অবস্থানরত শিক্ষার্থী আয়েশা মালিহা মাহফুজ বলেন, আমাদের পরীক্ষা গত বছরের নভেম্বরে শুরু হয়ে জানুয়ারির মাঝামাঝি শেষ হয়। ১০ মাস পর্যন্ত ফলাফল আটকে আছে। আমাদের ব্যাচের অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী আছে, যারা বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের প্রস্তুতির পাশাপাশি বিভিন্ন চাকরি ও বিদেশ যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ফলাফলের কারণে আমরা কোথাও আবেদনও করতে পারছি না। আমাদের পোস্ট গ্রাজুয়েশন ১০ মাস আগে শেষ হলেও আমাদের পরিচয় আমরা শুধু স্নাতক পাস।
ফলাফল প্রত্যাশী আব্দুল্লাহ নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের রেজাল্টের জন্য বারবার বিভাগের সভাপতিসহ যারা দায়িত্বে আছেন, তাদের সঙ্গে দেখা করেছি। বরাবরই তারা আমাদেরকে আশ্বাস দিয়ে গেছেন। স্যারদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে আমাদের রেজাল্ট দেওয়ার জন্য। কিন্তু আমাদের পরীক্ষা কমিটির সভাপতিকে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ায় শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, সেই শিক্ষকের কাছে আমাদের ভাইভাসহ আনুষঙ্গিক আরও অনেক নম্বর আছে। তিনি কোনোভাবে বিভাগকে সহযোগিতা করছেন না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অভিযুক্ত শিক্ষক ও আনুষঙ্গিক বিষয় নিয়ে একটা তদন্ত কমিটি নাকি গঠন করেছে। কিন্তু কোনও কার্যকর পদক্ষেপও দেখা যাচ্ছে না। আমরা অনতিবিলম্বে ফলাফল চাই।
এ বিষয়ে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোজাম্মেল হোসেন বলেন, বিভাগের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি পাওয়া শিক্ষক অধ্যাপক ড. মুসতাক আহমেদ ওই পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ছিলেন। তার কাছে কিছু নম্বর ছিল। বেশ কয়েক দফায় নম্বর চাওয়ার পর সর্বশেষ গতকাল কিছু নম্বর সরবরাহ করেছেন। তারপরও তার কাছে এখনও কিছু নম্বর রয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে ফলাফল প্রকাশের জন্য করণীয় সম্পর্কে জানতে আজকে আমরা উপাচার্যের সঙ্গে বসতে চেয়েছিলাম। এরই মধ্যে আজ শিক্ষার্থীরা বিভাগে তালা লাগিয়েছে। এখন আমরা প্রশাসন ভবনে আছি। এটার সমাধান নিয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করবো।