আপেল
ছুরি নেই, তাই নখ দিয়ে
আপেল—দু'ফালা করে কাটি
দ্যাখো যৌথতা, একাকিত্ব
কী ভীষণ মৃত্যুসম!
নখের আঘাতে চুরচুর ভাঙি
সবুজ ফলের ক্লিশে উদ্দামতা
অপেক্ষায়, ক্ষয়িষ্ণু ঠোঁটদুটো
তাকে দেই চিবিয়ে খাবার জোর
ধীরে ধীরে অথবা ক্ষীপ্রতায়
জ্বরাক্রান্ত মুখে হুলুস্থুল মিশে যায়
খিদে আর আপেলের সুঘ্রাণ!
স্রোতের বিপরীতে
মা যেন অভাগা দেশের এক করুণ মানচিত্র
শাড়ি খুলে নিলে, উলঙ্গ নয়, সরে যেতে থাকে জীবনের থেকে দূরে
শূন্য হাঁড়িতে রাঁধে টলমল গোপন চোখের জল
টের পাই, সেখানে কান্না নয়, জড়ো হয় জন্মান্ধ গ্লানি
মায়ায় বিছানো পথে যত হাঁটে—ডানা খসে, লুট হয় বাড়ির ঠিকানা
মা যেন ভগ্নস্তূপ, হারানো জনপদের দিকশূন্যপুর...
এমন বসন্তদিনে
তোমার চিরকালের আয়ুতে
একটা গহন গহীন রাত হয়ে ঘুমিয়ে থাকতে চাই
তোমার সাংবাৎসরিক মেহফিলে
শরীরের হাড়গোড়, পাঁজরের বড় রাস্তা ধরে
মধুকূপী ঘাসে, তোমার নিঃশব্দ ফাল্গুনে
ঢোল, মৃদঙ্গ ছাপিয়ে প্রেমময় সুর হয়ে গুনগুনাতে চাই
আজ নাকি শিমুল ফুলের দিন
যারে চাই, তারে ভালোবাসিবার দিন
আর দূরে, একঝাঁক বুক তোলপাড় পাখি
বাউরী বাতাস কেটে
বন্ধন ছাড়া, বিবিধ প্রণয়ে দেশান্তরী হয়...
ঘরে ফেরার আগে
প্রতিভা। গোলাকার মুখমণ্ডলে ঘনপল্লবে আলো ফেলছে খুব
উল্লাস—ব্যাকরণ থেকে তৃতীয় পায়ের মাপে ফোয়ারা ছোটাচ্ছে
অ্যাডভেঞ্চার...পুরোনো পোশাক খুলে সাতটি আঙুলে নিবিড় স্পর্শে
হৃৎপিণ্ডটা—টিনড্রাম সুরে ফাঁপা অহংকারে চৈতন্যে বাজছে
অজস্র ঘাট...শব্দহীন ঘুমহীন গলুইয়ের রাত্রিদিনে জেগে আছে
ওড়ে...তড়পানো মেঘ, ডানায় শব্দ জপে প্রযত্নে ইতি বেয়ারিং চিঠি
একান্ত গোপনীয়—মর্মর পাথরে কেউ সন্ধ্যার সংকেত দিচ্ছে
একরঙা সুতায়...ইচ্ছেরা হাঁটে কারো অতলান্ত ডাকের অপেক্ষায়!
শীতের বিস্মরণে
সে তো শীতের গল্প থেকে বেরিয়ে
একটি দুপুর নির্জন পথ হতে চেয়েছিল
মৃত্যুঞ্জয়ী সন্ধ্যার মতো দরজা-জানালা খুলে
সরল বিশ্বাসে নিরুদ্দেশ হতে চেয়েছিল
সে শুধু দংশনের একেক সময়ে শেষমেশ
ঘোরলাগা এক আশ্চর্য স্পর্শ হতে চেয়েছিল
সারাদিন গগনশিরীষে—মেঘঘন বুকের আস্তিনে
ঝড়ধস্ত মৌন হলুদ পাখিটি হতে চেয়েছিল
গাছের আড়ালে চুপচাপ এগিয়ে যাওয়া
একলা ব্রিজের মতো সে শুধু ধুলোর আলস্যে
গল্পে, আদরে-আদরে, বিরহের খাদের কিনারে
সম্পর্কের মিলিত পয়ারধ্বনি শুনতে চেয়েছিল
সে জানে, ইচ্ছের ব্যাধিতে শীতের বিভ্রম জাগে
যেখানে ক্রন্দনফুল মেলোড্রামা হয়ে বাজে
সংলাপে, রাতের আলাপে পুড়ে যেতে যেতে
সে তবু শান্ত প্রেমিকাগাছ হতে চেয়েছিল!
স বু জ প ঙ্ ক্তি
মানুষজন্ম সহজ কথা নয়! শূন্যতার কোটরে বাবা কী এক আনন্দ ছড়ালো—মা উল্কার মতো অস্থির উড়ালে শরতে পাহাড়ে গেলো, হেমন্তে চিৎমরম বুদ্ধের কাছে, শীতের গরম তাওয়ায় রুটি সেঁকতে সেঁকতে যখন বসন্তে পৌঁছুলো তখন সদালাপী কাঠপিঁপড়েরা গূঢ় অভ্যর্থনার থাবায় পা রেখেছে। জলডুবি খালে—গরমের নিঃসঙ্গ গোলাকার পেটে সাঁতরে যাচ্ছি একা, কোনো এক বর্ষার খোঁজে উঠোনের অদ্ভুততম পরাজিত আলোর রেখার নিচে একমুঠো পাতা, নৃত্যরতা ঘাসের ওপর পিপাসাকাতর একতাল কাদা আমি—মাতৃজঠর থেকে নামার অপেক্ষায়।
কই, ভোরের তারাটি এখন কোথায়? আমাকে দেখাও এমন তৃষ্ণার্ত পথ—যেন বেঁচে থাকায় আশ্চর্য জীবনের ঘ্রাণ পাই, ঘুমঘোরে ফুঁপিয়ে ওঠার আগেই টের পাই রাত আর ভোরের হ্যান্ডবুকে কতটা দুমড়ে মুচড়ে যাবো, লড়াইয়ে সমব্যথী হবো কার সাথে সমানে সমান।
মহাকৌতুকে দেখে নাও আমার সমস্তকিছু! কুঁতকুঁতে একতাল মাংসপিণ্ড আমি—বেরিয়েছি রক্তশেকড় ফুঁড়ে বিভ্রমেরও অধিক রাত্রিবেলায়। কেউ চুমু দিও না, কোলে তুলে নিও না, হাতের আঙুলগুলো জড়িয়ে নিও না হাতে, হিতোপদেশও বিলিও না। তোমাদের লোহার দরজা সাজে অন্য কোনো হলুদবরণ সূর্যমুখী শিশুর প্রত্যাশায়!
সমস্ত গরল হাসি, তীর্যক অন্ধকারে চোখাচোখি, তুমুল গল্পবাজি ক্রমশ ঠাঁই নিক বুকের ভেতর। না হয় ফুরিয়ে যাবার আগেই ইতস্তত আমি মানুষজন্মে শিখে নেবো—অস্পৃশ্য সবুজ পঙক্তিতে লুকানোর সামান্য কৌশল!
মন এক ভগ্ন শালিক
মন যে কোথায় কোথায় শালিকের ডানায় ওড়ে! গোপন কথার খামবন্দি ভালোবাসায় মিছেমিছি মশগুল থাকে। ডালিমদানার মতো ঝুঁকে থাকা হৃদয়ের রক্তাভ কপাটও তখন অযথা সশব্দে খোলে। বসন্ত আসে, মিছেমিছি সবুজরঙা পাহাড় বর্ষা নামায় আর কামরাঙা ছাতা-পাতাদের ঝোপঝাড় ঠেলে আশ্চর্য ধূলিরঙ সন্ধ্যার মুখোমুখি দাঁড়ায়। কামিনী পথের শেষে কিছু নিঃশব্দ চূর্ণ চূর্ণ বেগুনি আলাপ ছাড়া ধূসরতার এপাশে কোনো অন্ধ প্রেমিকের অপুষ্ট-শীর্ণ হাত বা প্রণয় আকাঙ্ক্ষা কই? পৃথিবীর দর্শনে বর্ষা-বসন্তের সবুজ উত্তাপ নেই, বৃষ্টির গভীরতা বলে কিছু নেই, গুমোট গরমে তাই খসে পড়ে কিছু কিছু নিষিদ্ধ পাখির উদবাস্তু ডানা!
মসলার দোকানে
মসলার দোকানে দেদারসে দারচিনি বিক্রি হচ্ছে দেখে আমিও উঁকি দিয়ে তেজপাতার দাম জিজ্ঞেস করি
দোকানি শুকনো মরিচের উপর থেকে একটা আলটপকা
হলুদকে হাতে সরিয়ে সরু চোখে স্বাস্থ্যবান আদাগুলোকে
হাতে ময়ান দিতে দিতে বলে, এই তেজপাতা সুঘ্রাণে ভরা
মাংস কিংবা অন্য কিছুতে দিলে এর ঘ্রাণ নিতে প্রতিবেশীরাও
ছুটে আসবে, এমন তেজপাতা ঘরে ও বাইরে সবার সম্মান
বাড়াবে…এখন ভেবে দেখুন, নেবেন কিনা?
তেজপাতা রেখে আমি জাফরানের কথা জিজ্ঞেস করলে
সে তার মসলার দোকানে ঘুরে ঘুরে চক্কর খায়
মসলার সমস্ত ডালা, জানালার ঝাঁপি, দরজাটার পাল্লা খুলে
আরও সরু চোখে তাকায়, এক চিমটি জাফরান হাতে নিয়ে বলে
—ক্যামন অসামান্য মসৃণ লাল, দেখুন একেবারে পদ্মফুলের গন্ধ
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জাফরান আমার হাতে, সবচেয়ে দামী মসলা এটি!
দোকানির হাতের তালুতে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মসলা হঠাৎ ছোট্ট গুল্মফুল
হয়ে যায়, সেই ফুল থেকে একটা সাদাসিধে মানুষের অবয়ব…
আমি প্রচণ্ড কৌতূহলে মানুষটির দিকে তাকালে সে মুচকি হাসিতে
বলে—আমি কিন্তু এশিয়া মাইনর, খোরাসান কিংবা কাশ্মীরের না
বাংলাদেশের হৃৎস্পন্দনে বেড়ে ওঠা নির্ভেজাল, স্বাস্থ্যকর জাফরান!
নিয়ে যাও, নরম বালিশে গন্ধের সমারোহে তোমাকে সুখনিদ্রা দেবো
সুখনিদ্রার লোভে যেই তাকে নেবার জন্যে হাত বাড়িয়েছি
অমনি দোকানে থাকা অসংখ্য মসলার ডালা, অমীমাংসিত ঝুড়ি
রাশি রাশি সুগন্ধি, ঝাঁঝালো মসলা এমনকি স্বয়ং মসলা দোকানীও
দৃশ্যমান অদৃশ্যে ছায়াসঙ্গী হয়ে, দলে দলে কাঠ পিঁপড়ার লাইনে
হাতে উঠে বুকের কাছে যত্ন করে সুগন্ধী ছড়াতে চায়
এসব দেখে অতল গভীর ঘোরে আমি যেন তলিয়ে যেতে থাকি…
আমার ক্যামন মাতাল মাতাল লাগে, পা টলতে থাকে…কালো সরিষার ঝাঁজে আমার ক্যামন অবশ অবশ লাগে…
ভয়ে হাতটা গুটিয়ে নিতে চাইলে একটা লোমশ হাত আমার হাতে
কী সব ঢেলে সন্তর্পণে বলে, এই নিন আমার দোকানের সমস্ত মসলা
ঘোর লাগা সমস্ত সুবাস, সবটুকু নির্যাস—ভাববেন না এমনিতেই দিচ্ছি
এদের আড়মোড়া ভাঙার আগেই, ঝড়ো বাতাসে এখানে ওখানে উড়ে
যাবার আগেই দয়া করে বাড়ি নিয়ে যান, আমি দোকানটা বন্ধ করি!
আমি চোখ খুলে হাতের দিকে তাকাতেই দেখি, কোথাও কিছু নেই তো
না মসলার গুঁড়া, না গোটা মসলা, না দোকানি, এমনকি মসলার দোকানটাও
বাজার থেকে ভোজবাজির মতো কোথায় হারিয়ে গেছে!
এসব দেখে আমি সত্যিই অতল গভীর ঘোরে তলিয়ে যেতে থাকি…
আমার ক্যামন সত্যিই মাতাল মাতাল লাগে, পা টলতে থাকে…
আফসোস
তোমার সাথে আমার প্রেম হতে পারতো আফসোস, দেখাদেখিও হলো না!
একসাথে হাঁটাহাঁটি হলে, সখ্যতা বাড়াতে দুজনে তুমুল ভিজতে পারতাম
অথচ তুমি সাইকেল থেকে নামতে নামতেই ভরসন্ধ্যা, এসে গেল হেমন্ত
দ্যাখো, সকালের কার্নিশে শিশিরে ভিজছে শালিক, যেন পাখিটি আমিই
দুষ্টুমি করছি, ভেজা চুল শুকাচ্ছি, দু’চোখের আগুনে মনস্তাপে কাঁপছি
যেন পাখি শরীরে, ওড়াওড়ি রেখে তোমার মৃদু প্রস্তাবে উত্তাপ ছড়াচ্ছি
সেইদিন কী ধুম বৃষ্টি, সন্ধ্যায় উপোসি চাঁদের গা ছুঁয়ে মেঘের কঠিন শপথ
তুমি মানুষ না হয়ে দাঁড়কাক হলে, সেই চাঁদোয়াতে ঠোঁট ছোঁয়াতে বলতাম
মাঠে, রোদ মাখামাখি কুয়াশায় আর আমাদের দেখাদেখিও হলো না!
পরস্পরকে জানলে, নতুন প্রেরণায় কত সহজে নিশ্চিন্তপুরে চলে যেতাম
অথচ তুমি সমুদ্রস্নান সেরে ফিরতে ফিরতেই বিপদসংকেত, শুরু হলো দুর্যোগ
তুমি ছিটকে গেলে দক্ষিণের কোনো বোহেমিয়ান অরণ্যে, আমি দুর্গম পাহাড়ে
তোমাকে দেখিনি, তবু পাহাড়ের উঁচু খুঁড়লে তোমার মতোই মূর্তি গড়েছি
যেন রক্তিম কৃষ্ণচূড়া মূর্তি, জলপ্রপাতের ধারায় কলকল আমাকে সমূলে টানছে
সেই দৃশ্য দেখছে—লাল পাহাড়, দেখছে গোপন পাথর, দেখছে ডুবন্ত জাহাজ
তোমাকে চিনলে বলতাম, ‘কাছে আসো, আরো কাছে, এসো, তোমাকে চিনে রাখি!’
এই যে সমুদ্র, আপনার জন্যে
'ভাবুক' প্রকৃতির বলে আমি প্রতিদিন কী কী যেন হারাই!
শখের পেনড্রাইভটা টিস্যু পেপার ভেবে একদিন
ফেলে দিয়েছিলাম জানালার ফাঁক গ'লে...
পরে নীল শার্টপরা একজন এসে দরজায় নক করে বলে—
'সবাই তো শামুকে নিজের নাম লেখে, এই প্রথম কারো নাম
পেনড্রাইভে খোদাই করা দেখলাম, এটা নিশ্চয়ই আপনার?'
পেনড্রাইভটা নয়, আমি তখন অবাক হয়ে দেখি
একটা আস্ত সমুদ্র—বিপুল নোনাগন্ধ ঝাউবন নিয়ে
কী ভীষণ পুরুষালি গাম্ভীর্যে দরজায় এসে দাঁড়িয়ে!
আমি যেন তখন তার চোখের দিকে তাকিয়ে
বলতে চেয়েছি—পেনড্রাইভটা আপনার কাছেই রাখুন
ওখানে ষোল জিবি মুভি আছে, একটা মুভি আছে সমুদ্র নিয়েই
তাতে একটা বালিকা, আনমনা এক সমুদ্রকে প্রতিদিন গল্প শোনাতো
সেইসব গল্পে সমুদ্র নড়ে-চড়ে উঠতো...
গল্প শুনে খুশিতে ওর গায়ে বালি ছিটাতো...
গল্পের তীব্রতায় বিপুল গর্জনে ওকে জড়িয়ে ধরতো...
পায়ের কাছে বড় বড় ঝিনুক, মণিমুক্তা এনে ফেলতো...
এরপর, একদিন সমুদ্রটা ট্রেনের হুইসেলের সেই গল্পটা শুনতে চাইলে
বালিকা তাকে পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাওয়া সবচে নীল নক্ষত্রের গল্প
বলতে চাইলো, সমুদ্র কিছুতেই গল্পটা শুনবে না, বালিকাও বলবে না...
শেষে সমুদ্র, বালিকাকে বলে—ঠিক আছে, তাহলে আমার অতল গভীর
সুশীতল গহ্বরে আসো, সারাজীবন তোমার গল্প শুনবো...
নীল শার্টপরা সমুদ্রকে আমার মনের কথাটা বলার আগেই
তিনি আমাকে জানান, সমুদ্র নিয়ে বানানো মুভিটা তার ভালো লাগেনি
এরকম কত বালিকারা সমুদ্রের কাছে ঘেঁষে নিজেদের গল্প শোনাতে আসে...
কত বালিকা সেজেগুঁজে এসে ভালোবাসার কথা বলে যায়...
কত বালিকা নিজেকে প্রবল ঢেউয়ের বুকে আত্মাহুতিও দেয়...
তবে কোনোকিছুই শেষপর্যন্ত অতলে হারায় না
যেমন এই পেনড্রাইভটাও না!
পেনড্রাইভ হাতে বিপন্ন বিস্ময়ে আমি দরজায় দাঁড়িয়ে
সমুদ্রকে নীল জলরাশি নিয়ে সিঁড়ি ভাঙতে দেখি
জানালায় দাঁড়িয়ে ঝড়ের গর্জনে রাস্তায় আছড়ে পড়তে দেখি...
ঘুমের মধ্যেও একটা পুরুষ সমুদ্র কী ভীষণ থৈ থৈ জলরাশি নিয়ে
আমাকে ক্ষত-বিক্ষত করে মারে, রক্তক্ষরণে জর্জরিত করে
প্রবল জলতেষ্টায় সমুদ্রের ভারে আমি বার বার কেঁপে কেঁপে উঠি...
এরপর থেকে—আবার ফিরে পাবো বলে
বোকার মতো আমি আরও কী কী যেন হারিয়ে ফেলি...