১.
শরতের নীল আকাশে যে শামিয়ানা পাতা
নান্দনিক কারুকাজে ভরে থাকে সেই শামিয়ানা;
কার যেনো নেত্র-ছায়া যত্ন করে মেখেছে বিধাতা
আসমান জুড়ে মাখা সে ঠিকানা—থাকেনি অজানা।
রুগ্ণ ধমনীকে ছুঁয়ে চোরা-স্রোত বয়ে যায়
হৃৎপিণ্ড টের পায় স্রোত ধরে কারো ফিরে আসা,
যে থাকে অলীক, তাকে ধরতে পারি না বাহুবলে
আমার বুকে জমছে পুঞ্জীভূত ক্ষুধিত পিপাসা।
অরণ্য-বীথিকা ডাকে, ডাকে তার তরুছায়া তলে
সেখানে কে যেন গান গায় পাখির জবানে
গ্রীষ্ম-বর্ষা স্থায়ী নয়, শরৎ-হেমন্তও যায় চলে
বসন্ত শীত বাদেও আসে অন্য ঋতুর আহ্বান।
ভীরু হরিণীর চঞ্চল মেখে ছুটে অবিরাম,
আড়ালে আড়ালে থেকে সে আমাকে করেছে বঞ্চিত;
ঠিকানাটা আছে জানা, কী যেন ছিল নাম
দেউলিয়া হয়েছে হৃদয়, ব্যথা রয়েছে।
যেদিকে তাকাই, সর্বত্র সে প্রতিটি নিশ্বাসে
তারে আমি ভালোবাসি, কিন্তু সে কাহারে বাসে?
২.
শূন্য বিশাল শূন্য মাঠের মাঝে একা
ঘুটঘুটে অন্ধকারে জ্বলে জোনাকি;
আলো আসতে আর কতটা রয়েছে বাকি,
ঘন মেঘ ভেদ করে চাঁদ কি দেবে দেখা?
এমন নীরবতায় ঝিঝির ডাক যেন নিনাদ
মেঘের আড়াল থেকে উঁকি মারে জিলহজের চাঁদ।
খসে পড়ল একটি তারা, সে পড়ল কীসের টানে
একটা বাদুড় ছুটে গেল কোন সে ফলের আহ্বানে।
জোনাকি আসে, চাঁদ উঠে, দূরে খসে পড়ে তারা,
হেনার গন্ধ হাওয়ায় ভাসে, তবু নিশ্ছিদ্র অন্ধকার;
তবুও অন্ধকার বারবার বিষাদকেই করে ইশারা
বিষাদের উৎস খুঁজে ফিরি
আলো আসবে, দুঃখেই ভরে থাকুক প্রাণ
চাঁদ, জোনাকিরা বয়ে আনবেই নির্বাণ।
৩.
কত ধ্বনি শুনি, কানে বাজে কত কাঁকনের মল
কোনো কিছুই তো হয় না তোমার চোখের আদল
সাম্রাজ্যের পরে সাম্রাজ্য—নেই যেন রাজা
অর্ঘ্য মাঝে এ যেন সেধে নেওয়া সাজা।
কোথায় যাব? হদিস নেই, না আছে ডান না বাম
বেদনার তীর্থে বসে বারবার জপি তোমার নাম।