X
সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫
১৫ বৈশাখ ১৪৩২

পুনর্জন্ম ও অন্যান্য কবিতা

রফিক উল ইসলাম
২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮:১৮আপডেট : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮:১৮

পুনর্জন্ম


হিসি-কাঁথা আর তীব্র ডেটলস্নানের মায়ায় জড়ানো এই আমার

পুনর্জন্ম, একটু আলতো করে ধরো। পিচ্ছিল সুড়ঙ্গপথ পেরিয়ে

তোমাদের অস্পষ্ট পৃথিবীতে গড়িয়ে গড়িয়ে নেমেছি।

ভ্রমরগুঞ্জন থেকে

বর্ণমালা খুঁজে খুঁজে একটা-দুটো কথা কইব। এটুকুই তো

চাওয়া। ফোঁটা ফোঁটা তরলের সমাহার, শুধু এইটুকুই

সমগ্র আমি! অঞ্জলি পাতো, সুগভীর অঞ্জলি পেতে দেখো—

পুনরায় জলের জীবনে তৃষ্ণাগামী হয়ে যাব।

 

আপাতত এই হিসি-কাঁথা আর তীব্র ডেটলস্নানের ভেতর

জেগে থাকা ক্ষণকালের এই আমি, তোমাদের আলতো হাতের

প্রার্থনা করে যাচ্ছি। আরো আলতো করো,

আরো পলকা করো তোমাদের করতল। যেন আমার

নমনীয় হাড়, আরো নমনীয় পুষ্পযোনি

কোনোভাবেই আর ক্ষতবিক্ষত না হয়।

 

আলতো হাতে-হাতে এ-জন্ম ঝলসে উঠুক আকাশপ্রদীপে!



আধপোড়া নাভি


একে-একে সব্বাই খুব ব্যস্ত হয়ে যাবে। প্রকৃতপক্ষে

                                         ঘুম ভাঙার আগেই

কাজের মাসি এসে তাড়া দেবে: বিছানা ছাড়ুন,

আমার তো সাতবাড়ির কাজ...

 

হায় বাঁশি, তোমার অত তাড়া না থাকলে

আমি তোমায় নিয়ে কদম্বতলে ঠাঁই পেতুম!

গোয়ালঘরের একমাত্র ধেনুটি হয়ত শেষবারের মতন

মুখ ফিরিয়ে খুঁজেছিল আমাকে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই

দিগন্তহীন মাঠ বাধন ছেঁড়ার অজুহাতে

ডেকে নিয়ে গেল তাকেও! সন্ধিকালে কার লেজ ধরে

বৈতরণী পার হব আমি?

 

ওরা না-হয় সব দায় এড়াতে তাড়াহুড়ো করেই

                     আমাকে পুড়িয়ে

আমার ছাইভস্ম ভাসিয়ে দিয়েছিল নদীতে।

কিন্তু ওগো ধারাজল, তোমার কী এমন ব্যস্ততা ছিল যে

আমার আধপোড়া নাভি এমন দ্রুতলয়ে ভাসিয়ে দিলে...



আহত ঝরনার পাশে


আহত ঝরনার পাশে ডানা মুড়ে বসি।

শিখি, ঠিক কীভাবে রক্তে-ভেজা পালক ধুয়ে-মুছে

সাফসুতরো করে নিতে হয়।

 

বহুকালের পরিত্যক্ত, ধ্বসে পড়া নাটমন্দিরের

                                     তীব্র হিমেল বাতাস

ধেয়ে আসে অভ্যন্তর থেকে। ঝুরঝুরে চুন-সুরকির সঙ্গে

আলোকোজ্জ্বল প্রাচীনতার বর্ণমালা

ছড়িয়ে দিতে চায় চারপাশে। ভয়ে ভয়ে

গুটিয়ে নিই নিজেকে। বর্ণময় ইতিহাসের পৃষ্ঠাগুলিও

                      এভাবে একদিন

                      ঝুরঝুর করে

মিশে যায় অবহেলার ধূলিতে!

 

আহত ঝরনার পাশে ঠায় বসে থাকি,

প্রাচীন আর ধ্বসে পড়া সমগ্র এক নাটমন্দির বুকে নিয়ে।

সেই কবেই ঝরে গেছে শৈশব, কৈশোর আর যৌবনের

অলংকৃত পালকগুলি। এখন শুধুই শিখতে থাকা

কীভাবে তীরবিদ্ধ পালকগুলি ধুয়ে-মুছে

সাফসুতরো করে নিতে হয়।



স্বপ্নে জাগরিত কুমোরপাড়া


কোনো প্রমোটার কাউকে কিছুই বানিয়ে তুলতে

পারে না, যেমন কোনো মঞ্চ কিংবা মাফিয়া।

'তোমাকে আমি এ-বাংলায় বুঝে নিচ্ছি, তুমি আমাকে

ও-বাংলায় দেখে দিয়ো' ইত্যাদির মতন

                                 যে-সব অদৃশ্য চুক্তিপত্র

জয়ের প্রহর গোনে, মুচকি হেসে তাদের পাশ কাটিয়ে

অন্য রাস্তা ধরে সচকিত কুমোর। মাটিমাখা,

বনবন করে ঘুরতে থাকা চক্রের ওপর মাটির মণ্ড সাজিয়ে

বানিয়ে তোলার নিভৃত লীলায় মাতে।

 

আহা কুমোরপাড়া, স্বপ্নে জাগরিত কুমোরপাড়া,

যুগান্তকাল হেঁটেই চলেছি তোমাকে শুধুই একটুখানি

স্পর্শ করব বলে! মাটির মণ্ড হয়েই আছি,

যদি কোনো দলছুট কুমোর গ্রীবায় তুলে নেয়

আমাকে কিছু একটা বানিয়ে তুলবে বলে।

/জেড-এস/
সম্পর্কিত
নববর্ষে সহিংসতার আশঙ্কা মোকাবিলায় নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্ববান
শব্দ দহন
বাঙলা যেভাবে দুঃখী হলো
সর্বশেষ খবর
টিভিতে আজকের খেলা (২৮ এপ্রিল, ২০২৫)
টিভিতে আজকের খেলা (২৮ এপ্রিল, ২০২৫)
যশোরের সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানসহ ৩ আওয়ামী লীগ নেতা আটক
যশোরের সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানসহ ৩ আওয়ামী লীগ নেতা আটক
মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে আগুন
মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে আগুন
এনসিপি ‘গঠনতন্ত্র প্রণয়ন কমিটি’ গঠন
এনসিপি ‘গঠনতন্ত্র প্রণয়ন কমিটি’ গঠন
সর্বাধিক পঠিত
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও নূরজাহানের পদত্যাগ দাবি
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও নূরজাহানের পদত্যাগ দাবি
রাখাইনে মানবিক সহায়তায় শর্তসাপেক্ষে করিডোর দিতে রাজি সরকার
রাখাইনে মানবিক সহায়তায় শর্তসাপেক্ষে করিডোর দিতে রাজি সরকার
হাইকোর্টে প্রতিবেদন: নিয়ম মেনেই হয়েছিল আদানির বিদ্যুৎ চুক্তি
হাইকোর্টে প্রতিবেদন: নিয়ম মেনেই হয়েছিল আদানির বিদ্যুৎ চুক্তি
আবার চালু হচ্ছে পরিত্যক্ত ৭ বিমানবন্দর, সবার আগে বগুড়া
আবার চালু হচ্ছে পরিত্যক্ত ৭ বিমানবন্দর, সবার আগে বগুড়া
মুক্তিযোদ্ধার বক্তব্যে জামায়াত নেতার বাধা, কেড়ে নেওয়া হলো মাইক
মুক্তিযোদ্ধার বক্তব্যে জামায়াত নেতার বাধা, কেড়ে নেওয়া হলো মাইক