স্বাস্থ্য সচেতনদের কাছে চিয়া সিড বেশ জনপ্রিয় একটি নাম। হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের একটি রিপোর্ট বলছে, প্রতিদিন ২৮ গ্রাম অথবা ২ থেকে ৩ টেবিল চামচ চিয়া সিড খেলে সুস্থ থাকতে এটি নানাভাবে আপনাকে সাহায্য করবে। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের পাশাপাশি ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, জিঙ্ক এবং ম্যাগনেসিয়ামের মতো প্রয়োজনীয় খনিজ মেলে ছোট্ট এই বীজে। চিয়া সিড পানিতে মিশিয়ে খেতে পারেন, খেতে পারেন চিয়া পুডিং বানিয়েও। আবার ওটস, দুধ ও ফলের সাথে মিশিয়ে খাওয়া যায় উপকারী এই বীজ। বাড়তি উপকার পেতে দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে নিতে পারেন ভিজিয়ে রাখা চিয়া বীজ। দই-চিয়া বীজের মিশ্রণ খেলে কোন কোন উপকার পাওয়া যাবে জেনে নিন।
পুষ্টির মান বৃদ্ধি করে
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়ামের মতো খনিজ পদার্থে পরিপূর্ণ চিয়া বীজ। ভিজিয়ে রাখলে এগুলো ফুলে ওঠে এবং জেলের মতো হয়ে যায়। ফলে এগুলো হজম করা সহজ হয়। প্রোটিন এবং প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ দইয়ের সাথে চিয়া বীজ মিশিয়ে নিলে চমৎকার একটি প্রাতঃরাশ হতে পারে। চিয়া বীজ ফাইবারে ভরপুর, যা অন্ত্র ভালো রাখে। অন্যদিকে দই প্রোবায়োটিক যোগ করে যা ভালো ব্যাকটেরিয়াকে সমর্থন করে। ফলে দই ও চিয়া সিড একসঙ্গে খেলে হজমের সমস্যা এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
ওজনকে বাগে রাখার জন্য ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন? তাহলে নিশ্চিন্তে খেতে পারেন দই ও চিয়া সিড। চিয়া বীজে থাকা ফাইবার এবং দইয়ের প্রোটিন দীর্ঘক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে, ফলে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমে। এছাড়াও এটি বিপাক বাড়ায় যা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।
রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল করে
চিয়া বীজের গ্লাইসেমিক সূচক কম থাকে। ফলে রক্তে শর্করার হঠাৎ বৃদ্ধি ঘটে না। দইয়ের সাথে মিশিয়ে খেলে এটি আরও স্থিতিশীল শক্তির মাত্রা বজায় রাখতে সহায়তা করে।
হৃদরোগীদের জন্য স্বাস্থ্যকর
চিয়া বীজে থাকা ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড হৃদরোগীদের জন্য দারুণ উপকারী। উপাদানটি প্রদাহ কমাতে এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। দইতে এমন কিছু পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা হার্ট ভালো রাখে। কার্ডিওভাসকুলার সুস্থতার জন্য তাই খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন দই ও চিয়া বীজের মিশ্রণ।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
চিয়া বীজ অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে পূর্ণ যা ফ্রি র্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। অন্যদিকে দইয়ের প্রোবায়োটিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে।
হাড় শক্তিশালী করে
চিয়া বীজ এবং দই উভয়ই ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফসফরাস সমৃদ্ধ। এসব উপাদান শক্তিশালী, সুস্থ হাড়ের জন্য অপরিহার্য। হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখতে চাইলে নিয়মিত খান দই ও চিয়া বীজ।
কীভাবে খাবেন
চিয়া বীজ ভিজিয়ে রাখুন পানি বা দুধে। ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যেই এটি ফুলে উঠবে। ভেজানো বীজ দইয়ের সাথে মিশিয়ে নিন। স্বাদ বাড়াতে তাজা ফল, বাদাম বা মধু যোগ করতে পারেন। তবে মনে রাখবেন, চিয়া বীজ অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর হলেও উচ্চ ফাইবারের কারণে অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে হজমের সমস্যা হতে পারে।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া