চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখার পাশাপাশি চুলের বৃদ্ধিতে প্রোটিনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। চুল প্রধানত কেরাটিন দিয়ে গঠিত। এটি একটি প্রোটিন। শরীরকে সঠিক ধরনের প্রোটিন প্রদান করলে চুলের শক্তি, পুরুত্ব এবং সার্বিক স্বাস্থ্যের উন্নতি সম্ভব হয়। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার চুল পড়া এবং ভাঙা রোধ করতেও সহায়ক। জেনে নিন প্রোটিন সমৃদ্ধ কোন কোন খাবার চুলের জন্য উপকারী।
১। ডিম
প্রোটিনের অন্যতম সেরা উৎস ডিম। বায়োটিনেরও দারুণ উৎস এটি। বায়োটিন এমন একটি ভিটামিন যা কেরাটিন উত্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয়। বায়োটিনের ঘাটতির কারণে চুল পাতলা হতে পারে এবং চুল পড়ে যেতে পারে। ডিমে শুধু উচ্চমানের প্রোটিনই থাকে না বরং এতে জিংক, আয়রন এবং বি ভিটামিনের মতো অন্যান্য পুষ্টি উপাদানও থাকে। এসব উপাদানও স্বাস্থ্যকর চুলের জন্য জরুরি। নিয়মিত ডিম খেলে চুলের ফলিকল শক্তিশালী হয়, চুলের বৃদ্ধ বাড়ে এবং চুল ভালো থাকে।
২। মুরগির মাংস
মুরগি প্রোটিনের একটি চর্বিহীন উত্স যা কেরাটিন উত্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত অ্যামিনো অ্যাসিড সরবরাহ করে। অ্যামিনো অ্যাসিড প্রোটিনের বিল্ডিং ব্লক এবং তারা কেরাটিন গঠনে সাহায্য করে। মুরগির মাংস জিংক এবং আয়রনের মতো অন্যান্য পুষ্টি উপাদানেও সমৃদ্ধ, যা চুলের ফলিকলকে পুষ্টি জোগাতে এবং চুল পড়া রোধ করতে সাহায্য করে।
৩। গ্রিক ইয়োগার্ট
প্রোটিন এবং প্রোবায়োটিকের চমৎকার উৎস গ্রিক ইয়োগার্ট। এর প্রোটিন উপাদান চুলের ফাইবার মেরামত এবং শক্তিশালী করতে সহায়তা করে। এই দইতে ভিটামিন বি ৫ রয়েছে, যা মাথার ত্বকে রক্ত প্রবাহ উন্নত করতে এবং চুল পাতলা হওয়া রোধ করতে পারে। দইয়ের প্রোবায়োটিক মাথার ত্বক ভালো রাখে।
৪। তেলযুক্ত মাছ
স্যামন, সার্ডিনস এবং অন্যান্য তৈলাক্ত মাছ প্রোটিন এবং ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ। স্বাস্থ্যকর মাথার ত্বক বজায় রাখতে এই দুই উপাদানের জুড়ি নেই। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড চুলের ফলিকলকে পুষ্ট করে ও চুলের ঘনত্ব বাড়ায়। মাথার ত্বকের শুষ্কতাও প্রতিরোধ করতে পারে উপাদানটি।
৫। মসুর ডাল এবং মটরশুঁটি
মসুর ডাল, ছোলা এবং মটরশুঁটি প্রোটিনের উদ্ভিজ্জ উৎস যা চুলের বৃদ্ধির জন্য দারুণ কার্যকর। এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ফলিক অ্যাসিড, আয়রন এবং জিংক রয়েছে। এগুলো সবই স্বাস্থ্যকর চুলের জন্য অত্যাবশ্যক। ফলিক অ্যাসিড লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদনে সাহায্য করে, যা চুলের ফলিকলে অক্সিজেন ও পুষ্টি সরবরাহ করে। জিংক চুলের ফলিকলের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে এবং চুল পড়া রোধে ভূমিকা রাখে। মটরশুঁটি এবং মসুর ডালেও প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা আমাদের সুস্থতার জন্য দরকারি।
৬। বাদাম এবং বীজ
বাদাম, আখরোট, ফ্ল্যাক্সসিড, চিয়া বীজ এবং সূর্যমুখী বীজ প্রোটিন সমৃদ্ধ। এগুলোতে ভিটামিন ই এবং ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডও পাওয়া যায় যা চুল ভালো রাখতে সহায়তা করে। ভিটামিন ই অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে চুলকে রক্ষা করে। এই স্ট্রেস চুলের ফলিকলের ক্ষতি করতে পারে। আখরোট ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং বায়োটিন সমৃদ্ধ, যা চুলের স্বাস্থ্যের জন্য জরুরি।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া