ডায়েট বলতে আমরা সাধারণত বুঝি খাদ্য তালিকায় কী রাখবো। কিন্তু ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ে আপনি কখন খাচ্ছেন এটা গুরুত্বপূর্ণ। দিন কিংবা রাতের একটি নির্দিষ্ট সময় ক্যালরি গ্রহণ থেকে বিরত থাকাই হচ্ছে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং। ওজন কমাতে এই ফাস্টিং বেশ কার্যকর ও নিরাপদ উপায়। আপনি যদি সুস্থ থাকেন, তবে এই ফাস্টিংয়ের মাধ্যমে ওজন ঝরিয়ে ফেলতেই পারেন। প্রতিদিন বা সপ্তাহে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য না খেয়ে জন কমানোর এই উপায় বিজ্ঞানসম্মত। খাওয়ার সময়টাকে একটা গণ্ডির মধ্যে বেঁধে ফেললে ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণ এমনিতেই কমে আসে, যার ফলে ওজন কমে।
কীভাবে করবেন ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং
চব্বিশ ঘণ্টার ভেতর আট, দশ, বারো বা চৌদ্দ ঘণ্টা আপনি কোনও ক্যালরি গ্রহণ না করে থাকতে পারেন। সারা দিনের কিছুটা সময় না খেয়ে থাকা কিংবা সারা সপ্তাহের কয়েকটি দিন উপবাস থাকা দুটোই বেশ কার্যকর। সপ্তাহে পাঁচ দিন স্বাভাবিক খাবার খেতে পারেন এবং সপ্তাহে দুই দিন উপবাস করতে পারেন। এতে ওজন কমতে শুরু করে দ্রুত। কারণ নির্দিষ্ট সময় খাবার না খেলে শরীর তার চিনির ভাণ্ডার পোড়াতে শুরু করে। পাশাপাশি চর্বিও ক্ষয় হতে শুরু করে।
ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং কি শুধু ওজনই কমায়?
নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে প্রকাশিত একটি গবেষণা বলছে; ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং কেবল ওজন কমাতেই সাহায্য করে না, আরও নানা ধরনের উপকারিতা রয়েছে এর। ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, বয়স-সম্পর্কিত নিউরোডিজেনারেটিভ ডিজঅর্ডার, এমনকি প্রদাহজনক অন্ত্রের রোগ এবং অনেক ক্যানসারের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগের বিরুদ্ধেও কার্যকর এই ফাস্টিং।
জেনে নিন
- শারীরিকভাবে পরিপূর্ণ সুস্থ থাকলেই ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করবেন। শরীরে অন্য কোনও রোগ থাকলে বা দীর্ঘমেয়াদি কোনও রোগে ভুগলে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনার আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
- যে সময়ে খাবার গ্রহণ করবেন সে সময়েও সচেতনতা জরুরি। নির্দিষ্ট সময় না খেয়ে থাকছেন বলে অতিরিক্ত খেয়ে ফেলবেন না অন্য সময়ে।
- খাদ্য তালিকায় হোল গ্রেইন, শাকসবজি, ফল, ডিম, দুধ রাখবেন। নাহলে দুর্বল হয়ে যেতে পারেন।
- ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ের পাশাপাশি শরীরচর্চাও জরুরি। তবে না খেয়ে থাকা অবস্থায় ব্যায়াম করবেন না। বিশেষ করে সারারাত না খেয়ে থেকে সকালে খালি পেটেই জিমে চলে যাবেন না।
- ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ের সময় পানি খেতে পারবেন।
তথ্যসূত্র: জন হপকিন্স মেডিসিন এবং মায়ো ক্লিনিক