X
রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫
১৪ বৈশাখ ১৪৩২

হালখাতার ইতিহাস জানেন?

জীবনযাপন ডেস্ক
১৪ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৪৭আপডেট : ১৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৫:৪২

আজ পহেলা বৈশাখ। নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে হালখাতার নাম। যদিও ডিজিটাল এই যুগে হালখাতা প্রথার প্রচলন কমে গেছে অনেকটাই, বিশেষ করে শহরে। আগে হালখাতা উপলক্ষে রীতিমতো নিমন্ত্রণপত্র ছাপিয়ে উত্‍সবের আয়োজন করতেন দোকানিরা। এখন বিভিন্ন অ্যাপ ও অনলাইন শপিংয়ের কারণে হালখাতার সেই জৌলুস কমে এসেছে। কম্পিউটারেই ব্যবসার হিসেব রাখেন বেশিরভাগ ব্যবসায়ীরা। তাই খাতার ব্যবহারও কমে গেছে অনেকটাই। তবে গ্রামেগঞ্জে এখনও ঐতিহ্য মেনে অনেক ব্যবসায়ীই হালখাতার আয়োজন করেন বছরের প্রথম দিন।

অতীতে জমিদারকে খাজনা প্রদানের অনুষ্ঠান হিসেবে ‘পূণ্যাহ’ প্রচলিত ছিলো। বছরের প্রথম দিন প্রজারা সাধ্যমতো ভালো পোশাকআশাক পরে জমিদার বাড়িতে গিয়ে খাজনা পরিশোধ করতেন। তাদের মিষ্টি দিয়ে আপ্যায়ন করা হতো। জমিদারি প্রথা উঠে যাওয়ায় ‘পূণ্যাহ’  বিলুপ্ত হয়েছে। তবে রয়ে গেছে হালখাতা। মোঘল সম্রাট আকবরের আমল থেকে পয়লা বৈশাখের উদযাপনের প্রথা শুরু হয়। সেই সময় থেকেই দোকানে দোকানে ব্যবসার হিসাব করার জন্য শুরু হয় হালখাতার প্রথা। হাল মানে নতুন, হালখাতা অর্থাত্‍ নতুন খাতা। পুরনো বছরের সব হিসাব মিটিয়ে নতুন বছরের প্রথম দিন থেকেই শুরু হয় নতুন খাতায় হিসাব-নিকেশ করা। এই খাতা তৈরি করা হয় লম্বা সাদা কাগজ বাঁধাই করে আর লাল সালু কাপড়ের মলাটে মুড়িয়ে। হিসাবের এই খাতার প্রতি পাতায় চারটি করে সমান ভাঁজ থাকে। বাম পাশে জমা ও ডান পাশে খরচের হিসাব। লালখাতাকে টালিখাতা নামেও ডাকা হয়।

বাংলা সনের প্রথম দিন দোকানপাটের হিসাব আনুষ্ঠানিকভাবে হালনাগাদ করার এ প্রক্রিয়া পালন করা হয়। ব্যবসায়ীরা এদিন তাদের দেনা-পাওনার হিসাব সমন্বয় করে হিসাবের নতুন খাতা খোলেন। এজন্য ক্রেতাদের আগের বছরের সকল পাওনা পরিশোধ করার কথা বিনীতভাবে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়। এ উপলক্ষে নববর্ষের দিন তাদের মিষ্টিমুখ করান ব্যবসায়ীরা।

আগে একটি মাত্র মোটা খাতায় দোকানিরা তাদের যাবতীয় হিসাব লিখে রাখতেন। এই খাতাটি বৈশাখের প্রথম দিন নতুন করে হালনাগাদ করা হতো। হিসাবের খাতা হালনাগাদ করার এ রীতি থেকেই উদ্ভব হয় হালখাতার। একসময় বাংলা নববর্ষের মূল উৎসব ছিল হালখাতা। এ উপলক্ষে দোকানে দোকানে মিষ্টি বিতরণ করা হতো। পাশাপাশি থাকতো সুগন্ধি পানের আয়োজন। অনেকে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে মিষ্টান্ন পাঠাতেন।  যদিও এখন কেবল স্বর্ণালঙ্কারের দোকানেই এ প্রথা পালিত হতে দেখা যায় বেশি। বিশেষ করে ঢাকার আদি ব্যবসায়ী পরিবারে মহাসমারোহে পালিত হয় এ রীতি। পুরান ঢাকার বাজারগুলোতে লাল মলাটের খাতা খুলে বসেন ছোট ছোট দোকানিরা। নতুন বছরের শুরুতেই ব্যবসায়ীরা টাকা পরিশোধের তাগিদ না দিয়ে হালখাতার দাওয়াত দেন। এ উপলক্ষে অনেকে বাহারি কার্ডের ব্যবস্থা করেন। কেউবা মুখে মুখেই সারেন দাওয়াত পর্ব। পুরান ঢাকার সনাতন ধর্মাবলম্বী পরিবারগুলো পূজার শুভক্ষণ অনুযায়ী লাল মলাটের নতুন খাতা খোলে।  

/এনএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
বৃষ্টি হতে পারে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে
বৃষ্টি হতে পারে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে
প্রথমবার বাংলাদেশ-ভারতে একই সময়ে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা, খুশি হলেও হতাশ জেলেরা
প্রথমবার বাংলাদেশ-ভারতে একই সময়ে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা, খুশি হলেও হতাশ জেলেরা
রোমে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে উরুগুয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ
রোমে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে উরুগুয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ
মাদ্রিদ ওপেনে পরাজয়ের পর শেষের ইঙ্গিত জোকোভিচের!
মাদ্রিদ ওপেনে পরাজয়ের পর শেষের ইঙ্গিত জোকোভিচের!
সর্বাধিক পঠিত
বড় দুই বাজারে রফতানিতে চমক: চীনের ঘাটতি পূরণ করছে বাংলাদেশ
বড় দুই বাজারে রফতানিতে চমক: চীনের ঘাটতি পূরণ করছে বাংলাদেশ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেনে ঢিল ছুড়েছে দুর্বৃত্তরা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেনে ঢিল ছুড়েছে দুর্বৃত্তরা
প্রবেশন কর্মকর্তা গোলাম রব্বানীর কারাদণ্ড, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি
প্রবেশন কর্মকর্তা গোলাম রব্বানীর কারাদণ্ড, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি
কর্মচারীদের সমান উৎসব ভাতা পেতে যাচ্ছেন বেসরকারি শিক্ষকরা
কর্মচারীদের সমান উৎসব ভাতা পেতে যাচ্ছেন বেসরকারি শিক্ষকরা
ভ্যাটিকান সিটিতে বিশ্বনেতাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার শুভেচ্ছা বিনিময়
ভ্যাটিকান সিটিতে বিশ্বনেতাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার শুভেচ্ছা বিনিময়