বছর দশেক আগে বাবাকে হারিয়েছে রুহানি। তখন সবে সে কৈশোরে পদার্পণ করেছে। সড়ক দুর্ঘটনায় বাবার মৃত্যুকে এখনও মেনে নিতে পারে না রুহানি। যেকোনো সড়ক দুর্ঘটনার খবরে সে অস্বাভাবিক আচরণ করে। কখনও কখনও আত্নহত্যার চিন্তাও কাজ করে তার। বাবার মৃত্যুর কারণে হওয়া ট্রমা এখনও রুহানিকে তাড়া করে ফেরে।
ট্রমা মানসিক স্বাস্থ্যকে গভীরভাবে প্রভাবিত করতে পারে। ট্রমা থেকে নানা ধরনের শারীরিক লক্ষণ দেখা দেয়। নিরাময় না হওয়া ট্রমা বিভিন্ন উপায়ে প্রকাশ পেতে থাকে। যার মধ্যে অপ্রতিরোধ্য অনুভূতি, আত্মহত্যার চিন্তা, অতীতের ঘটনা বারবার মনে পড়া, আত্মসম্মান কমে যাওয়া এবং পরিবর্তনে ভয় পাওয়া অন্যতম। নিরাময় না হওয়া ট্রমা মোকাবিলার টিপসগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রিয়জনের সাথে সময় কাটানো, পেশাদার সাহায্য নেওয়া, অ্যালকোহল এড়ানো এবং মেডিটেশন অনুশীলন করা।
ট্রমার প্রভাব মানসিক স্বাস্থ্যকে গভীরভাবে প্রভাবিত করতে পারে। এটি কষ্টদায়ক শারীরিক উপসর্গও সৃষ্টি করতে পারে। ট্রমা নিরাময় হতে সময় লাগে। নিরাময় প্রক্রিয়া সম্পর্কে সচেতন হওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
কীভাবে বুঝবেন আপনি ট্রমা থেকে বের হতে পারেননি?
আত্মহত্যার চিন্তা করা: আত্মহত্যার চিন্তা মানসিক আঘাতের লক্ষণ হতে পারে। চ্যালেঞ্জ এবং সমস্যা মোকাবিলা করার জন্য নিজের সঙ্গে নিজের সংগ্রাম এবং হতাশ হয়ে যাওয়া আত্মহত্যার চিন্তাকে বাড়িয়ে তুলতে পারে।
অতীতের ঘটনার সাথে লড়াই: যদি ট্রমা নিরাময় না হয়, তবে অতীতের ঘটনা ট্রিগার করতে পারে যেকোনো সময়। বারবার ঘটে যাওয়া ঘটনার কথা মনে পড়া এবং এ কারণে হতাশা, উদ্বেগ, আত্মহত্যার চিন্তা, রাগ, বিরক্তি এবং অন্যান্য লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার মানে আপনি এখনও ট্রমায় আছেন।
নিজেকে মূল্যহীন মনে হওয়া: বেশিরভাগ সময় ট্রমা আমাদের আত্মসম্মানকে হ্রাস করে। আত্মসম্মান এবং মূল্যহীনতার অনুভূতি হওয়া ট্রমার লক্ষণ।
পরিবর্তনকে ভীতিকর হিসেবে দেখা: পরিবর্তন আমাদের বেশিরভাগের জন্যই ভীতিকর। যারা ট্রমায় আছেন, তাদের জন্য এটা ১০ গুণ বেশি কঠিন হতে পারে। ট্রমার কারণে ইতিবাচক উপায়ে জীবন কাটানোর তাগিদ হারিয়ে যায়। অনিশ্চয়তা, আত্মবিশ্বাসের অভাব এবং নিরাপত্তার অনুভূতির কারণে জীবনে ছোটখাট পরিবর্তন আনতেও ভয় পান ভুক্তভোগীরা।
ট্রমা কাটাতে কী করবেন?
- ট্রমা মোকাবিলার সময় মনে হতে পারে কেউ আপনাকে বোঝে না। এতে অনেকেই প্রিয়জনকে দূরে ঠেলে দেয়। এটি করবেন না। যারা আপনাকে ভালোবাসেন তাদের সঙ্গে থাকা গুরুত্বপূর্ণ। প্রিয়জনদের থেকে দূরে যাওয়া আপনার ট্রমাকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
- একজন পেশাদার থেরাপিস্টের কাছে যাওয়া জরুরি। বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সমর্থন থাকলেও অন্তরের গভীর থেকে আঘাতমূলক ঘটনা দরিয়ে ফেলা সহজ নয়।
- অ্যালকোহল বা ঘুমের ওষুধে অভ্যস্ত হবেন না। এটি শারীরিকভাবে আপনার ক্ষতি করবে।
- মেডিটেশন করুন নিয়মিত।