করোনা ভাইরাস মহামারিতে আক্রান্ত হয়েছে বিভিন্ন দেশ। এসব দেশের পতাকা প্রদর্শিত হলো ব্রাজিলের ক্রাইস্ট দ্য রিডিমার মূর্তিতে। একইসঙ্গে আলোর মাধ্যমে এতে ফুটে ওঠে আশার বার্তা। বুধবার (১৮ মার্চ) দেখা গেছে এই অভূতপূর্ব দৃশ্য। করোনায় আক্রান্ত দেশগুলোর সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করতেই এমন উদ্যোগ।
রিও ডি জানেইরো শহরের দিকে তাকিয়ে থাকা ক্রাইস্ট দ্য রিডিমার মূর্তিতে প্রে টুগেদার (একসঙ্গে প্রার্থনা করুন) হ্যাশট্যাগ বার্তাটি বিভিন্ন ভাষায় তুলে ধরা হয়। এরপর একে একে ভেসে ওঠে এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকা, আফ্রিকা ও ওশেনিয়া মহাদেশের নাম। তারপর দেখানো হয় বিভিন্ন দেশের পতাকা। সবশেষে মূর্তিটির নিচে দাঁড়িয়ে রিও ডি জানেইরোর প্রধান যাজক ওরানি জোয়াও তেম্পেস্তা সবার প্রতি পৃথিবীর সব অসুস্থ মানুষের জন্য প্রার্থনা করার আহ্বান জানান।
বিশ্বব্যাপী ২ লাখ ১৮ হাজার মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। পৃথিবী জুড়ে কোটি কোটি মানুষ ঘরে আবদ্ধ। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ব্রাজিলে প্রথম একজনের দেহে জীবাণুটি ধরা পড়ে। গত ১৭ মার্চ পর্যন্ত এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৬১ জনে। সাও পাওলো ও রিও ডি জানেইরোতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। গণপরিবহনের সংখ্যা কমিয়ে মানুষকে সতর্কতা অবলম্বনসহ ভিড় না করার জন্য বলেছে কর্তৃপক্ষ। খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক সব আয়োজন বাতিল হয়েছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বাসা থেকে কর্মীদের কাজ করতে উৎসাহ দিচ্ছে।
একনজরে ক্রাইস্ট দ্য রিডিমার
পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়িয়ে দুই হাত ছড়িয়ে দিয়েছে যীশু। এটাই মূলত ক্রাইস্ট দ্য রিডিমার। রিও ডি জানেইরোর তিজুকা ন্যাশনাল পার্কে করকোভাদো পাহাড়ের চূড়ায় মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে ১৩০ ফুট উঁচু যীশুখ্রিস্টের বিখ্যাত মূর্তি। তার এক হাত থেকে অন্য হাতের দূরত্ব ৯২ ফুট (২৮ মিটার)। এর মোট ওজন ৬৩৫ মেট্রিক টন। এর ভাস্কর ফ্রান্সের পল ল্যান্ডোস্কি। কংক্রিট ও সাজিমাটি বা সোপস্টোন দিয়ে আলাদাভাবে বিভিন্ন অংশ তৈরি করে পাহাড়ের চূড়ায় নিয়ে জোড়া দেওয়ার পর দাঁড়িয়েছে এই মূর্তি। এজন্য খরচ হয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। ৯ বছর ধরে নির্মাণ কাজ শেষে ১৯৩১ সালের ১১ অক্টোবর এর উদ্বোধন হয়।
ক্রাইস্ট দ্য রিডিমার ব্রাজিলের ঐতিহাসিক জাতীয় ঐতিহ্য। ২০০৭ সালে পৃথিবীর সপ্তাশ্চর্যের তালিকায় এর নাম যুক্ত হয়। পর্যটকরা চাইলে পাহাড়ে যুক্ত করা ২২০ তলা পর্যন্ত লিফটে চড়ে ক্রাইস্ট দ্য রিডিমারকে ওপর থেকে দেখতে পারে। যীশুখ্রিস্টের এই মূর্তি দেখতে প্রতি বছর প্রায় ২০ লাখ পর্যটক ব্রাজিলে যায়।
তথ্যসূত্র: সিএনএন ট্রাভেল