X
সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫
১৫ বৈশাখ ১৪৩২
কোন জেলার নামকরণ কীভাবে

নাটরকোণা গ্রাম থেকে এসেছে ‘নেত্রকোনা’

জার্নি রিপোর্ট
২৫ অক্টোবর ২০১৮, ১৫:১১আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০১৮, ২১:০৪

৫৬ হাজার বর্গমাইল আয়তনের দেশ বাংলাদেশের নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সমৃদ্ধ ইতিহাস, ঐতিহ্য, বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্কৃতি, দৃষ্টিনন্দন জীবনাচার মন কাড়ে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের। পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন, ঐতিহাসিক মসজিদ ও মিনার, নদী, পাহাড়, অরণ্যসহ হাজারও সুন্দরের রেশ ছড়িয়ে আছে টেকনাথ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত।

দেশের আট বিভাগে (ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা, রাজশাহী, রংপুর, সিলেট ও ময়মনসিংহ) ৬৪ জেলা। প্রতিটি জেলার নামকরণের সঙ্গে রয়েছে ঐতিহ্যপূর্ণ ইতিহাস। এসব ঘটনা ভ্রমণপিপাসু উৎসুক মনকে আকর্ষণ করে। তাই বাংলা ট্রিবিউন জার্নিতে ধারাবাহিকভাবে জানানো হচ্ছে বাংলাদেশের ৬৪ জেলার নামকরণের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস।

বিরিশিরি (ছবি: ওয়ালিউল বিশ্বাস) নেত্রকোনা জেলা
ব্রহ্মপুত্র নদের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত নেত্রকোনা জেলার ইতিহাস প্রাচীন ঐতিহ্যে টইটুম্বুর ও ঐতিহ্যের বিচিত্র ঘটনা সম্ভারে গর্বিত। গারো পাহাড়ের পাদদেশ লেহন করে এঁকেবেঁকে কংস, সোমেশ্বরী, গণেশ্বরী, মহেশ্বরী, ঘোড়াউত্রা নদীসহ অন্যান্য শাখা নদী নিয়ে বর্তমান নেত্রকোনা জেলার জলধারার উদ্ভব। তৎকালীন সুসঙ্গ, নাসিরূজিয়াল, মৈমনসিংহ, সিংধা ও খালিয়াজুরী পরগণার ভূমি নিয়ে বর্তমান নেত্রকোনা জেলার অবস্থান।

ব্রিটিশ শাসনামলে ১৮৮২ সালের ৩ জানুয়ারি থেকে নেত্রকোনা মহকুমার কাজ শুরু হয়। ব্রিটিশ আমলে এ জেলায় কৃষক বিদ্রোহ, পাগলপন্থী বিদ্রোহ, টংক আন্দোলন ও তেভাগা আন্দোলন সংঘটিত হয়। ১৯৮৪ সালের ১৭ জানুয়ারি নেত্রকোনা মহকুমাকে জেলা ঘোষণা করা হয়।

জনশ্রুতি আছে, নেত্রকোনা শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত মগরা নদীর বাঁক চোখের বা নেত্রের কোণের মতো বলে এই জায়গার নামকরণ হয়েছে ‘নেত্রকোনা’। কেউ কেউ এমনও মনে করেন, মগরা ও কাংশ নদী পরিবেষ্টিত এই জেলা দেখতে চোখ বা নেত্রের মতো দেখতে বলেই এমন নামকরণ।

বিলু কবীরের লেখা ‘বাংলাদেশের জেলা: নামকরণের ইতিহাস’ গ্রন্থ থেকে জানা যায়, নাটোরকোণা গ্রামটি বর্তমানে নেত্রকোনা জেলা শহরের সাত-আট কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। একসময় প্রশাসনিক কাজকর্ম নাটোরকোণা গ্রামেই চলতে থাকে। এই ‘নাটোরকোণা’ নামটিই কালের পরিক্রমায় ‘নেত্রকোনা’ উচ্চারণরূপ ধারণ করে।

সুসং দুর্গাপুরের সীমান্ত এলাকা (ছবি: ওয়ালিউল বিশ্বাস) নেত্রকোনা জেলায় প্রাচীন ঐতিহাসিক বেশ কিছু স্থাপত্য রয়েছে। সেগুলোর অধিকাংশই ধ্বংসপ্রাপ্ত। কিছু স্থাপত্য এখনও ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আছে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য— মদনপুরের হযরত শাহ সুলতান কমর উদ্দিন রুমি (র.) মাজার, শাহ সুখুল আম্বিয়া মাজারের পাশে মোগল যুগের এক গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদ, পুকুরিয়ার ধ্বংসপ্রাপ্ত দুর্গ, নাটোরকোণার ধ্বংসপ্রাপ্ত ইমারতের স্মৃতিচিহ্ন, দুর্গাপুর মাসকান্দা গ্রামের সুলতানি যুগের এক গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদ।

পর্যটন আকর্ষণ স্থানের তালিকায় রয়েছে দুর্গাপুরের বিজয়পুরে নৈসর্গিক পাহাড়ের সাদা মাটি, বিরিশিরি কালচারাল একাডেমি, কমলা রানি দীঘি, টংক শহীদ স্মৃতিসৌধ, রানিখং মিশন টিলায় ক্যাথলিক গির্জা, রাশমণি স্মৃতিসৌধ, কথিত নইদ্যা ঠাকুরের ভিটা, কলমকাকান্দার লেগুরা, চেংটি ও গোবিন্দপুর পাহাড়, ঐতিহাসিক সাত শহীদের মাজার, কেন্দুয়ার রোয়াইলবাড়ীর পুরাকীর্তি, সুসং দুর্গাপুরের জমিদার বাড়ি, নেত্রকোনার হাওর, সোমেশ্বরী নদী, সাদা মাটি, সিলিকা বালি, বালিশ মিষ্টি।

সূত্র: বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন

/জেএইচ/চেক/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
বিদায়ী ম্যাচে সম্মাননা পেলেন ম্যাচ রেফারি ডেভিড বুন
বিদায়ী ম্যাচে সম্মাননা পেলেন ম্যাচ রেফারি ডেভিড বুন
‘জনমানুষের ঐক্যের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অগ্রসর হতে পারবো’
‘জনমানুষের ঐক্যের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অগ্রসর হতে পারবো’
ইয়েমেনে হামলার বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ সীমিত করবে যুক্তরাষ্ট্র
ইয়েমেনে হামলার বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ সীমিত করবে যুক্তরাষ্ট্র
গাজীপুরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে একজনের মৃত্যু
গাজীপুরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে একজনের মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও নূরজাহানের পদত্যাগ দাবি
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও নূরজাহানের পদত্যাগ দাবি
রাখাইনে মানবিক সহায়তায় শর্তসাপেক্ষে করিডোর দিতে রাজি সরকার
রাখাইনে মানবিক সহায়তায় শর্তসাপেক্ষে করিডোর দিতে রাজি সরকার
হাইকোর্টে প্রতিবেদন: নিয়ম মেনেই হয়েছিল আদানির বিদ্যুৎ চুক্তি
হাইকোর্টে প্রতিবেদন: নিয়ম মেনেই হয়েছিল আদানির বিদ্যুৎ চুক্তি
মুক্তিযোদ্ধার বক্তব্যে জামায়াত নেতার বাধা, কেড়ে নেওয়া হলো মাইক
মুক্তিযোদ্ধার বক্তব্যে জামায়াত নেতার বাধা, কেড়ে নেওয়া হলো মাইক
শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন মোদি: আল জাজিরাকে ড. ইউনূস
শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন মোদি: আল জাজিরাকে ড. ইউনূস