যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ঘোষণা করেছেন, দক্ষিণ সুদানের সব পাসপোর্টধারীদের জন্য জারি করা ভিসা সঙ্গে সঙ্গে বাতিল করা হচ্ছে। আফ্রিকার এই দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত নিতে অস্বীকৃতির কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শনিবার (৫ এপ্রিল) দেওয়া এক বিবৃতিতে রুবিও আরও বলেন, দক্ষিণ সুদান থেকে আসা যে কোনও নাগরিককে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সময় বন্দরে আটকানো হবে।
তিনি বলেন, দক্ষিণ সুদানের অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা, তাদের ফেরত পাঠানো নাগরিকদের যথাসময়ে গ্রহণ না করা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির একটি মূল দিক হলো অবৈধ অভিবাসীদের বিতাড়ন করা এবং গণপ্রত্যাবাসনের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করা।
রুবিও বলেন, যখন কোনও দেশ, যেমন: যুক্তরাষ্ট্র- কাউকে তাদের দেশে ফেরত পাঠাতে চায়, তখন প্রত্যেক দেশকে অবশ্যই তাদের নাগরিকদের যথাসময়ে গ্রহণ করতে হবে।
এই পদক্ষেপ এমন এক সময়ে এসেছে যখন আশঙ্কা বাড়ছে যে দক্ষিণ সুদান আবারও গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে।
৮ মার্চ দক্ষিণ সুদানে আঞ্চলিক সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ায় এবং ২০১৮ সালের শান্তিচুক্তি ভঙ্গ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সব ‘জরুরি নয়’ এমন কর্মীদেরও সেদেশ ছাড়ার নির্দেশ দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত দক্ষিণ সুদানের নাগরিকদের আগে 'টেম্পোরারি প্রোটেক্টেড স্ট্যাটাস' দেওয়া হয়েছিল, যার মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তারা যুক্তরাষ্ট্রে থাকতে পারতেন।
এই টেম্পোরারি প্রোটেক্টেড স্ট্যাটাসের মেয়াদ ৩ মে শেষ হওয়ার কথা ছিল। বিশ্বের নবীনতম দেশ দক্ষিণ সুদান ২০১১ সালে সুদান থেকে স্বাধীনতা লাভ করে।
তবে মাত্র দুই বছর পর প্রেসিডেন্ট সালভা কির এবং ভাইস-প্রেসিডেন্ট রিয়েক মাচারের মধ্যে দ্বন্দ্বে দেশটি গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে, যাতে ৪ লাখেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারায়।
২০১৮ সালে দুই নেতার মধ্যে একটি ক্ষমতা ভাগাভাগির চুক্তিতে সংঘর্ষ বন্ধ হয়। তবে চুক্তির মূল অংশগুলো নতুন সংবিধান, নির্বাচন ও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর একীভূতকরণ এখনও বাস্তবায়ন হয়নি।
দেশটির বিভিন্ন অংশে এখনও জাতিগত ও স্থানীয় গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে বিচ্ছিন্ন সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসন ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশগুলোর সঙ্গে তাদের নাগরিকদের প্রত্যাবাসন নিয়ে সংঘাতে জড়িয়েছে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে কলোম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত অভিবাসী বহনকারী দুটি মার্কিন সামরিক বিমানকে তার দেশে অবতরণ করতে বাধা দেন।
পরবর্তীতে ট্রাম্প কলোম্বিয়ার ওপর কঠিন শুল্ক ও নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিলে পেত্রো সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।