এ বছর যৌথভাবে রসায়নে নোবেল জিতে নিলেন ফরাসি বিজ্ঞানী ইমানুয়েল কার্পেন্টার ও মার্কিন বিজ্ঞানী জেনিফার এ ডৌডানা। বুধবার (৬ অক্টোবর) সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে রয়াল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সের মহাসচিব গোরান হ্যানসন দুই বিজয়ীর নাম ঘোষণা করেন। জিনোম সম্পাদনার পদ্ধতি আবিষ্কারের জন্য তাদেরকে এই পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। পুুরুষ সহকর্মী ছাড়া রসায়নে শুধু দুই নারীর যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম। পুরস্কার হিসেবে ১ কোটি ক্রোনার সমমূল্যের অর্থ তারা ভাগাভাগি করে নেবেন।
এর আগে মাত্র পাঁচজন নারী রসায়নে নোবেল পেয়েছেন। তারা হলেন, মেরি কুরি (১৯১১), জ্যালিয়ট কুরি (১৯৩৫), ডরোথি ক্রফউট হকিং (১৯৬৪), অ্যাডা আ ইয়োনাথ (২০০৯) এবং এইচ আর্নল্ড (২০১৮)। এবার সে কাতারে যোগ হলো আরও দুই নারীর নাম। বর্তমানে জার্মানির বার্লিনের ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাথোজেন শাখার পরিচালক হিসেবে নিয়োজিত আছেন কার্পেন্টার। আর জেনিফার এ ডৌডানা যুক্তরাষ্ট্রের ইউসি বার্কলে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন। কার্পেন্টার ও ডৌডানার আবিষ্কৃত জিনোম সম্পাদনা প্রযুক্তির নাম হলো ক্রিসপার-ক্যাস নাইন জেনেটিক সিজারস। জীবিত কোষে থাকা ডিএনএ’র মধ্যে সুনির্দিষ্ট ও সংক্ষিপ্ত পরিবর্তন আনার একটি উপায় এটি।
কার্পেন্টার বলেন, পুরস্কার প্রাপ্তির খবরে তিনি আবেগী হয়ে পড়েছেন। ‘যখন এরকম কিছু ঘটে তখন খুব অবাক লাগে। মনে হয়, যা ঘটছে তা সত্যি নয়। অথচ এটি বাস্তব।’ বলেন কার্পেন্টার।
২০১৯ সালে লিথিয়াম ব্যাটারি নিয়ে গবেষণা করে রসায়নে নোবেল পেলেছিলেন তিন বিজ্ঞানী। তারা হলেন টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের জন বি গুডএনাফ, বিংহ্যামটন বিশ্ববিদ্যালয়ের এম স্ট্যানলি এবং মেইজো বিশ্ববিদ্যালয়ের আকিরা ইয়োশিনো।
প্রতিবছর বিজ্ঞান, সাহিত্য ও শান্তিতে বিশেষ অবদানের জন্য এই পুরস্কার দেওয়া হয়। রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস বুধবার এই তিন বিজ্ঞানীর নাম ঘোষণা করে। এ পর্যন্ত ১৮৩ জনকে রসায়নে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। ২০১৮ সালে রসায়নশাস্ত্রে অবদানের জন্য নোবেল পুরস্কার জেতেন আমেরিকার বিজ্ঞানী ফ্রান্সেস এইচ আরনল্ড, জর্জ পি স্মিথ এবং যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানী স্যার গ্রেগরি পি উইন্টার।
১৮৯৫ সালের নভেম্বর মাসে আলফ্রেড নোবেল নিজের মোট উপার্জনের ৯৪% (৩ কোটি সুইডিশ ক্রোনার) দিয়ে তার উইলের মাধ্যমে নোবেল পুরস্কার প্রবর্তন করেন। এই বিপুল অর্থ দিয়েই শুরু হয় পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসাবিজ্ঞান, সাহিত্য ও শান্তিতে নোবেল পুরস্কার প্রদান। ১৯৬৮ সালে তালিকায় যুক্ত হয় অর্থনীতি। পুরস্কার ঘোষণার আগেই মৃত্যুবরণ করেছিলেন আলফ্রেড নোবেল। আইনসভার অনুমোদন শেষে তার উইল অনুযায়ী নোবেল ফাউন্ডেশন গঠিত হয়। তাদের ওপর দায়িত্ব বর্তায় আলফ্রেড নোবেলের রেখে যাওয়া অর্থের সার্বিক তত্ত্বাবধান করা এবং নোবেল পুরস্কারের সার্বিক ব্যবস্থাপনা করা। বিজয়ী নির্বাচনের দায়িত্ব সুইডিশ অ্যাকাডেমি আর নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটিকে ভাগ করে দেওয়া হয়।