ইয়েমেনের হুথি-সমর্থিত টেলিভিশন আল-মাসিরাহ জানিয়েছে, হোদেইদাহ বন্দর ও বিমানবন্দরে যুক্তরাষ্ট্র ১৩টি বিমান হামলা চালিয়েছে। এর দুই দিন আগে হোদেইদাহর রাস ইসা বন্দরে আমেরিকার হামলায় অন্তত ৮০ জন নিহত ও ১৫০ জনের বেশি আহত হয়েছিলেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
শনিবার আল-মাসিরাহ জানায়, রাজধানী সানার আল-থাওরা, বানি মাতার ও আল-সাফিয়া এলাকায় মার্কিন হামলায় তিনজন নিহত ও চারজন আহত হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের চলমান হামলা সত্ত্বেও হুথিরা আরও অভিযান চালানোর হুমকি দিয়েছে।
কয়েক সপ্তাহ আগে হুথিদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দিয়েছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লোহিত সাগর রুটে জাহাজ চলাচলে হুথিদের হুমকি বন্ধ করতেই এ হামলা।
২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ ও ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে হুথিরা ইসরায়েল-সম্পর্কিত জাহাজে ১০০টির বেশি হামলা চালিয়েছে বলে জানা গেছে।
শুক্রবার হুথি কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাসের আল-আতিফি আল-মাসিরাহকে বলেছেন, আমেরিকা ইয়েমেনের জনগণকে গাজাকে সমর্থন করা থেকে বিরত রাখতে পারবে না, বরং তাদের দৃঢ়তা ও সহিষ্ণুতা আরও বাড়িয়ে দেবে।
১৯৯০-এর দশকে আত্মপ্রকাশ করা হুথিরা ২০১৪ সালে সানা দখল করে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আবদ-রাবু মনসুর হাদিকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করে। বর্তমানে ইয়েমেনের বেশিরভাগ অঞ্চল তাদের নিয়ন্ত্রণে।
শনিবার জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস রাস ইসা বন্দর ও এর আশেপাশে ১৭ ও ১৮ এপ্রিল মার্কিন হামলায় বেসামরিক নাগরিক ও পাঁচজন মানবিক কর্মী আহত হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তার মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক এক বিবৃতিতে বলেন, বন্দর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ও লোহিত সাগরে তেল ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন গুতেরেস।
মার্কিন সামরিক বাহিনী বলেছে, রাস ইসা বন্দরে হামলার লক্ষ্য ছিল হুথিদের সরবরাহ ও অর্থায়ন বন্ধ করা। ইরান-সমর্থিত এই গ্রুপের বিরুদ্ধে ১৫ মাসের অভিযানে এটাই সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা।
ইয়েমেনের ৭০ শতাংশ আমদানি ও ৮০ শতাংশ মানবিক সহায়তা রাস ইসা, হোদেইদাহ ও আস-সালিফ বন্দর দিয়ে হয়। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) বলেছে, রাস ইসা বন্দর ও ইয়েমেনের প্রধান তেল পাইপলাইনের শেষ প্রান্ত দেশটির জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো।