ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই পরোক্ষ পারমাণবিক আলোচনার দ্বিতীয় দফার পর অগ্রগতির কথা জানিয়েছে। শনিবার (১৯ এপ্রিল) ইতালির রাজধানী রোমে এ বৈঠক হয়। বৈঠকের পর, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি একে ‘গঠনমূলক’ বলে বর্ণনা করেন এবং জানান, তারা আগামী সপ্তাহে আবারও বৈঠক করবে। আগামী ২৬ এপ্রিল ওমানে তৃতীয় দফার আলোচনা হবে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
আরাঘচি জানান, পরবর্তী দফার আলোচনা শুরু হওয়ার আগে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে কারিগরি বিশেষজ্ঞরা বৈঠকে বসবেন, যা আলোচনায় অগ্রগতির ইঙ্গিত দেয়।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের বরাতে একজন জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তা জানান, শনিবার রোমে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ‘খুব ভালো অগ্রগতি’ হয়েছে এবং আগামী সপ্তাহে আলোচনা অব্যাহত রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে মার্কিন পক্ষ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনও বিবৃতি আসেনি।
আরাঘচি ও মার্কিন মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদল ওমানের রোম দূতাবাসে চার ঘণ্টা ধরে পরোক্ষ আলোচনা করে বলে জানিয়েছে ইরানের শীর্ষ কূটনীতিক। স্টিভ উইটকফ হচ্ছেন একজন বিলিয়নিয়ার রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী, যাকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বহুবার বৈদেশিক মিশনে পাঠিয়েছেন।
ইরানি কর্মকর্তারা জানান, উভয় পক্ষ একই দূতাবাসের আলাদা কক্ষে অবস্থান করছিলেন। ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আল-বাসাঈদি তাঁদের মধ্যে বার্তা আদান-প্রদানে মধ্যস্থতা করছিলেন।
আরাঘচি বলেন, ‘আমরা কিছু নীতিমালা ও লক্ষ্য নিয়ে আরও ভালো বোঝাপড়ায় পৌঁছাতে পেরেছি। আলোচনার পরিবেশ ছিল গঠনমূলক এবং অগ্রগতি হচ্ছে।’
আরাঘচি আরও বলেন, ‘আমি আশা করি আগামী সপ্তাহের কারিগরি আলোচনার পর আমরা আরও ভালো অবস্থানে পৌঁছাতে পারব। অতিরিক্ত আশাবাদ বা হতাশার কোনও কারণ নেই।’
২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে ইরানের সঙ্গে একটি পারমাণবিক চুক্তিতে অংশ নিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। চুক্তি অনুযায়ী, ইরান তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ কার্যক্রম সীমিত করবে। বিনিময়ে দেশটির ওপর বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে। পরে ২০১৮ সালে ওই চুক্তি থেকে বেরিয়ে যান তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসে আবারও ইরানের ওপর ‘সর্বোচ্চ চাপ’ প্রয়োগে তৎপরতা শুরু করেন ট্রাম্প। তবে গত মার্চে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে লেখা একটি চিঠিতে নতুন করে পরমাণু আলোচনা শুরুর আহ্বান জানান তিনি।