গাজায় মানবিক সহায়তা বণ্টন নিয়ন্ত্রণের ইসরায়েলের নতুন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। মঙ্গলবার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে প্রতিটি ক্যালরি ও আটার দানার হিসাব করে ত্রাণ সীমিত করা হবে, যা অগ্রহণযোগ্য ।ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
গুতেরেস বলেন, স্পষ্ট করে বলছি: মানবিক নীতিমালা—মানবতা, নিরপেক্ষতা, স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা—সম্পূর্ণরূপে মেনে না চলা কোনও ব্যবস্থায় আমরা অংশ নেব না।
গত ২ মার্চ থেকে ২১ লাখ বাসিন্দার এই ফিলিস্তিনি অঞ্চলে কোনও মানবিক সহায়তা পৌঁছায়নি। ইসরায়েল বলেছে, হামাস জিম্মিদের মুক্তি না দিলে গাজায় সব ধরনের পণ্য প্রবেশে অনুমতি দেওয়া হবে না।
ইসরায়েলের সামরিক সংস্থা কোগাট গত সপ্তাহে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করে গাজার জন্য একটি কাঠামোবদ্ধ পর্যবেক্ষণ ও সহায়তা প্রবেশ প্রক্রিয়ার প্রস্তাব করে। কোগাট এক বিবৃতিতে দাবি করে, এই ব্যবস্থা হামাসের হাতে ত্রাণ পৌঁছানো রোধ করবে।
তবে গাজা ও পশ্চিম তীরের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত জাতিসংঘের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জোনাথন হুইটল বলেছেন, ত্রাণ সরবরাহে বিচ্যুতির কোনও প্রমাণ নেই।
দুই মাসের যুদ্ধবিরতির পর গত মাসে ইসরায়েল গাজায় বোমাবর্ষণ পুনরায় শুরু করে এবং সেনা মোতায়েন করে। গুতেরেস গাজাকে ‘হত্যাক্ষেত্র’ আখ্যা দিয়ে বলেন, গাজার জনগণ একটি অন্তহীন মৃত্যুচক্রে আবদ্ধ।
তিনি সব জিম্মির নিঃশর্ত মুক্তি, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও গাজায় পূর্ণ মানবিক সহায়তা প্রবেশের আহ্বান জানান। গুতেরেস বলেন, অধিকৃত অঞ্চল হিসেবে আন্তর্জাতিক আইনে ইসরায়েলের দায়িত্ব রয়েছে—যার মধ্যে রয়েছে খাদ্য, চিকিৎসা ও জনস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা। বর্তমানে এর কিছুই ঘটছে না।
ইসরায়েল দাবি করে, তারা গাজায় কার্যকর নিয়ন্ত্রণ রাখে না, তাই অধিকৃত অঞ্চলের নিয়ম প্রযোজ্য নয়।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে ১ হাজার ২০০ মানুষ নিহত ও ২৫০ জনকে জিম্মি করার পর এই যুদ্ধ শুরু হয়। গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, হামাসের হামলার জবাবে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে থেকে ৫০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।