ইসরায়েলি হামলায় গাজা উপত্যকায় অন্তত ৩২ জন নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে এক ডজনেরও বেশি নারী ও শিশু রয়েছে। রবিবার (৬ এপ্রিল) স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে দুই সাংবাদিকও রয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৭ জন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা ও মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি এ খবর জানিয়েছে।
রবিবার রাতে প্রায় ১০টি ক্ষেপণাস্ত্র গাজা থেকে নিক্ষেপের পরপরই ইসরায়েলি সেনাবাহিনী মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ এলাকার কয়েকটি পাড়ার বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয়। ওই রকেট হামলার পর গাজায় গামলা আরও জোরদার করে ইসরায়েলি বাহিনী। কারণ ইসরায়েল যুদ্ধ পুনরায় শুরু করার পর এটি ছিল সবচেয়ে বড় রকেট হামলা।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, এর মধ্যে প্রায় পাঁচটি রকেট প্রতিহত করা হয়েছে। হামাসের সামরিক শাখা এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।
রবিবার ভোররাতে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শহরের একটি তাঁবু ও একটি বাড়িতে আঘাত হানে ইসরায়েল। এতে পাঁচজন পুরুষ, পাঁচজন নারী ও পাঁচজন শিশু নিহত হয় বলে নাসের হাসপাতাল জানিয়েছে। নাসের হাসপাতালের কাছেই সাংবাদিক ইসলাম মেকদাদের বাড়ি। হামলায় তিনি, তার ছেলে ও পরিবারের আরও পাঁচ সদস্য নিহত হয়।
নিহতদের মধ্যে একজন নারী সাংবাদিকও ছিলেন। তার মা আমাল কাসকিন বলেন, আমার মেয়ে নিরপরাধ। সে সাংবাদিকতাকে ভালোবাসত এবং এই পেশার প্রতি গভীর অনুরাগ ছিল।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি গোলাবর্ষণে উত্তরের জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে অন্তত চারজন নিহত হয়েছে। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের এক সাংবাদিক জানান, দেইর আল-বালাহর আল-আকসা শহীদ হাসপাতালে সাতজনের মরদেহ পৌঁছেছে, যাদের মধ্যে একটি শিশু ও তিনজন নারী রয়েছে।
এছাড়া গাজা সিটিতে একটি বেকারির সামনে অপেক্ষমাণ লোকজনের ওপর হামলায় অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে তিনটি শিশু রয়েছে বলে জানিয়েছে হামাস-নিয়ন্ত্রিত সরকারের অধীনে পরিচালিত সিভিল ডিফেন্স সংস্থা।
গত মাসে ইসরায়েল হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি শেষ করে এবং নতুন যুদ্ধবিরতি ও অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তির চুক্তির জন্য চাপ দিতে গিয়ে গাজায় ভূখণ্ড দখল করে। উপকূলীয় এই অঞ্চলটি বহির্বিশ্বের সহায়তার উপর নির্ভরশীল হওয়ায়, সেখানে এক মাসের বেশি সময় ধরে খাদ্য, জ্বালানি ও অন্যান্য জরুরি সরবরাহ প্রবেশেও বাধা দেয় ইসরায়েল। এরপর থেকে গাজা পরিণত হয়েছে এক মৃত্যুপুরীতে।
এদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজা যুদ্ধ নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্রে রওনা দিয়েছেন।