গাজায় নতুন করে যুদ্ধ শুরু হওয়ার দায় হামাসের ওপর চাপিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। রবিবার তিনি ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, হামাস একটি গ্রহণযোগ্য চুক্তি এগিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা প্রত্যাখ্যান করায় যুদ্ধ পুনরায় শুরু হয়েছে। তবে তিনি নতুন করে আলোচনার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেননি। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
উইটকফ বলেন, এটার দায় হামাসের। যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের পাশে দাঁড়িয়েছে। হামাসের কাছে নিরস্ত্রীকরণ এবং আলোচনার প্রস্তাব গ্রহণের সব সুযোগ ছিল।
জানুয়ারিতে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরের পর গাজা উপত্যকায় কয়েক সপ্তাহের শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছিল। কিন্তু যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় ইসরায়েল পুনরায় বিমান হামলা শুরু করে এবং গাজা উপত্যকার বিভিন্ন এলাকায় স্থল সেনা মোতায়েন করে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সাম্প্রতিক হামলায় শত শত মানুষ নিহত হয়েছে। মার্চের শুরুতে উইটকফের ‘ব্রিজ’ পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়, যার লক্ষ্য ছিল রমজান ও পাসওভার উৎসবের পরেও যুদ্ধবিরতি এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য আলোচনার সময় দেওয়া।
উইটকফ বলেন, হামাস যদি নতুন করে আলোচনার প্রস্তাব দেয়, আমরা কি তা বিবেচনা করব? অবশ্যই করব—ঠিক যেমন ইউক্রেনে রাশিয়ার সঙ্গে দ্বন্দ্বের ক্ষেত্রে করেছি। আমরা হত্যা বন্ধ করতে চাই, কিন্তু আমাদের স্পষ্ট হতে হবে কে এখানে আগ্রাসী, আর তা হলো হামাস।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলি সম্প্রদায়গুলোর ওপর হামলা চালায়, যাতে প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষ নিহত হয় এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে নেওয়া হয়। এর জবাবে ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৫০ হাজার ২১ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ১৩ হাজার ২৭৪ জন আহত হয়েছে।
গাজার পরিস্থিতি এখনও অস্থিতিশীল। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যুদ্ধবিরতি ফিরিয়ে আনার জন্য চাপ বাড়ালেও হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে আলোচনা এখনও স্থবির। উইটকফের মতে, হামাসের আগ্রাসী ভূমিকা এবং চুক্তি প্রত্যাখ্যানের কারণে এই সংঘাত অব্যাহত রয়েছে।
এই সংঘাতের ফলে গাজাবাসীর মানবিক সংকট আরও তীব্র হয়েছে। হাজার হাজার পরিবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে, এবং স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের মুখে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো গাজায় জরুরি মানবিক সহায়তা পাঠানোর আহ্বান জানালেও ইসরায়েলের নিষেধাজ্ঞার কারণে তা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।