ইসরায়েলের সুপ্রিম কোর্ট দেশটির অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের প্রধান রোনেন বারকে অপসারণের সিদ্ধান্ত সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে। শুক্রবার (২১ মার্চ) আদালতের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত রায়ে এই তথ্য জানানো হয়েছে। আদালতের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই রায়ের মাধ্যমে বারকে অপসারণের বিরুদ্ধে দায়ের করা আবেদনগুলো বিবেচনা করার সুযোগ পাবেন বিচারকরা। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ৮ এপ্রিলের মধ্যে।ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা রোনেন বারকে অপসারণের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করে। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, এই পদক্ষেপ আগামী ১০ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে। তবে বারের অপসারণের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে, যা তিনদিন ধরে চলছে।
গত সপ্তাহে নেতানিয়াহু বলেছিলেন, রোনেন বারের ওপর থেকে তার আস্থা চলে গেছে। এ কারণে তাকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রোনেন বার ২০২১ সাল থেকে শিন বেতের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
বৃহস্পতিবার রাতে নেতানিয়াহুর বাসভবনের সামনে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ জলকামান ব্যবহার করে। তেল আবিব ও জেরুজালেমে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তিও হয়। এ সময় কয়েক ডজন মানুষকে আটক করা হয়।
রোনেন বারের অপসারণের সিদ্ধান্ত এবং গাজায় পুনরায় হামলা শুরু করার প্রতিবাদে ইসরায়েলিরা গত তিনদিন ধরে যৌথভাবে বিক্ষোভ করছেন।
গোয়েন্দা প্রধানের অপসারণের পেছনে একটি দুর্নীতিবিরোধী তদন্তকে কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে। নেতানিয়াহুর কার্যালয়ের একাধিক কর্মীর বিরুদ্ধে কাতারের পক্ষ থেকে উৎকোচের প্রস্তাব পাওয়ার অভিযোগ থেকে এই তদন্ত শুরু হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নেতানিয়াহু ও বারের মধ্যে গত কয়েক মাস ধরে সম্পর্কের অবনতি ঘটছিল।
নেতানিয়াহু অবশ্য ঘুষের প্রস্তাবের অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন, তাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে এসব ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হচ্ছে। তবে সমালোচকরা বলছেন, এভাবে নেতানিয়াহু দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে দুর্বল করে ফেলছেন।
সরকারকে লেখা এক চিঠিতে রোনেন বার দাবি করেছেন, স্বার্থের দ্বন্দ্বের কারণে তাকে অপসারণ করা হচ্ছে। তিনি বলেছেন, দেশের স্বার্থ থেকে সম্পূর্ণ পৃথক ও অগ্রহণযোগ্য কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর আগে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলাকে গোয়েন্দা ব্যর্থতা হিসেবে চিহ্নিত করে রোনেন বার স্বেচ্ছায় পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এই হামলা ঠেকাতে না পারার দায় নেওয়ার জন্যই তিনি পদত্যাগ করতে চান।