গাজায় ইসরায়েল-হামাসের মধ্যে দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি কার্যকরের জন্য মিসরে আলোচনা শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার কায়রোতে ‘গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা’ করতে ইসরায়েলের কর্মকর্তারা কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। মিসরের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ শনিবার শেষ হবে। দ্বিতীয় ধাপের জন্য জোর তৎপরতা চলছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপের আলোচনার লক্ষ্য হলো যুদ্ধ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা, গাজায় থাকা জীবিত জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করা এবং ইসরায়েলের সব সেনা প্রত্যাহার করা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত, স্টিভ উইটকফ আলোচনায় যোগ দিতে পারেন।
ইসরায়েলের মতে, বর্তমানে গাজায় ৫৯ জন বন্দি রয়েছে, যাদের মধ্যে ২৪ জন জীবিত বলে বিশ্বাস করা হচ্ছে।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিওন সা’আর বলেছেন, একটি চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব হবে কিনা সে বিষয়ে সরকার নিশ্চিত নয় এবং কায়রোতে উপস্থিত ইসরায়েলি দলকে ‘দেখতে হবে আমরা আলোচনার জন্য সাধারণ কোনও ভিত্তিতে পৌঁছাতে পারি কিনা।’
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে সা’আর আরও বলেছেন, ‘আরও বন্দি মুক্তির বিনিময়ে আমরা প্রথম ধাপের চুক্তি বাড়াতে প্রস্তুত। যদি সম্ভব হয়, আমরা তা করবো।
তবে, চুক্তি সম্ভব হবে কিনা তা এখনো অনিশ্চিত। কারণ ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ঘোষিত যুদ্ধের লক্ষ্য হামাসকে সম্পূর্ণ নির্মূল করা। আর এই পরিকল্পনাকে সমর্থন করেছেন ট্রাম্প।
দোহা ইনস্টিটিউট ফর গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজ-এর রাজনৈতিক বিশ্লেষক মোহাম্মদ এলমাসরি আল জাজিরাকে বলেন, ইসরায়েল মাসের পর মাস আমাদের বলে আসছে, কথায় এবং কাজে যে তারা আসলে যুদ্ধ শেষ করতে চায় না।
তিনি আরও বলেন, হামাস গাজা ছেড়ে চলে যাবে, এমন সম্ভাবনা নেই। সেক্ষেত্রে ইসরায়েল সম্পূর্ণরূপে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চায় বলেই মনে হচ্ছে।
মধ্যস্থতাকারীদের আশা, এই আলোচনার মধ্য দিয়ে দীর্ঘ মেয়াদে গাজায় যুদ্ধের অবসান হবে। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী ২০২৩ সালে দেশটিতে হামাসের হামলা ঠেকাতে তাদের ‘সম্পূর্ণ ব্যর্থতা’ স্বীকার করার একদিন পর এ আলোচনা শুরু হলো।
যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে হামাস সর্বশেষ বৃহস্পতিবার শতাধিক ফিলিস্তিনি বন্দিবিনিময়ে চার জিম্মির দেহাবশেষ হস্তান্তর করে।
প্রায় দেড় বছর যুদ্ধের পর গত ১৯ জানুয়ারি ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।