গাজা উপত্যকায় আটক সব জিম্মিকে একসঙ্গে মুক্তি দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এর বিনিময়ে তারা চায় যুদ্ধের অবসান ও গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের পুরোপুরি প্রত্যাহার। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাসেম এক বিবৃতিতে এই প্রস্তাবের বিস্তারিত তুলে ধরেছেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
হামাসের মুখপাত্র কাসেম বলেন, আমরা দ্বিতীয় ধাপে (যুদ্ধবিরতির) যেতে প্রস্তুত। যেখানে একটি চুক্তির ভিত্তিতে সব জিম্মিকে একসঙ্গে মুক্তি দেওয়া হবে। এই চুক্তির শর্ত হবে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহার।
তিনি আরও বলেছেন, গাজা থেকে হামাসকে সরিয়ে দেওয়ার ইসরায়েলের শর্ত একটি হাস্যকর মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ। গাজা থেকে প্রতিরোধ বাহিনীকে প্রত্যাহার বা নিরস্ত্র করা আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।
হামাস আগামী শনিবার মুক্তি দেওয়া জিম্মির সংখ্যা তিনজনের পরিবর্তে ছয়জনে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গতকাল হামাস নেতা খলিল আল-হায়া এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।
কাসেম বলেন, মধ্যস্থতাকারীদের অনুরোধে এবং চুক্তির সব শর্ত বাস্তবায়নে আমাদের আন্তরিকতা প্রমাণ করতে জিম্মির সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
এই প্রস্তাব এসেছে এমন এক সময়ে, যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ধাপে ধাপে জিম্মি মুক্তির প্রক্রিয়ার সমালোচনা করেছেন। গাজায় আটক জিম্মিদের পরিবারও সবাইকে একসঙ্গে মুক্তির দাবি জানিয়েছে।
গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধে এ পর্যন্ত ৪৮ হাজার ২৯১ জন নিহত এবং ১ লাখ ১১ হাজার ৭২২ জন আহত হয়েছেন বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে। তবে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস বলছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে মৃত ধরে নিলে মৃতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০৯ ছাড়িয়ে যাবে। বিশ্বব্যাংক, জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা পুনর্গঠনে ৫৩২ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন, যার মধ্যে আবাসন খাতে প্রয়োজন ১৫২ বিলিয়ন ডলার।
গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েল একাধিকবার চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। নেতানিয়াহুর মন্ত্রিসভার চরমপন্থি মন্ত্রীরা গাজা দখলের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। যুদ্ধবিরতির পর এ পর্যন্ত ১ হাজার ১৩৫ ফিলিস্তিনিকে ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এই সপ্তাহে আরও ৫০২ ফিলিস্তিনি মুক্তি পাবেন বলে জানা গেছে। গত সপ্তাহের বন্দি বিনিময়ের পর হামাস ও প্যালেস্টাইন ইসলামিক জিহাদ ১৯ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ২৫ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে।