দখলকৃত পশ্চিম তীরের জেনিনে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী তৃতীয় দিনের অভিযান চলছে। পশ্চিম তীরজুড়ে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে চলমান হামলা আরও তীব্র হয়েছে। বুরকিন এলাকায় ইসরায়েলি হামলায় বৃহস্পতিবার রাতে দুই ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে জেনিন প্রদেশে তিন দিনের অভিযানে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১২-তে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
ফিলিস্তিনি সংবাদমাধ্যম আল কুদস টুডে জানিয়েছে, নিহত মুহাম্মদ আবু আল-আসাদ ও কুতাইবা আল-শালাবি দীর্ঘক্ষণ ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে লিপ্ত ছিলেন।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা দুজনেই ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদের সদস্য এবং চলতি মাসে কালকিলিয়া প্রদেশের ফুন্দুক গ্রামে ইসরায়েলি নাগরিকদের ওপর হামলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ওই হামলায় তিনজন ইসরায়েলি নিহত ও ছয়জন আহত হয়।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নিহতদের মরদেহ এখনও হস্তান্তর করেনি ইসরায়েল।
ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ওয়াফা জানায়, বুরকিনে অভিযানের সময় ইসরায়েলি বাহিনী একটি বাড়ি ঘিরে ফেলে, সেখানে গুলি ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে পরে তা বুলডোজার দিয়ে ধ্বংস করা হয়। বুরকিনের মেয়র হাসান সোবহ অভিযোগ করেছেন, ইসরায়েলি সেনারা হামলার সময় ফিলিস্তিনি নারীদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে।
এদিকে, বুধবার ডিফেন্স ফর চিলড্রেন ইন্টারন্যাশনাল প্যালেস্টাইন (ডিসিআইপি) জানায়, ১৬ বছর বয়সী মুতাজ ইমাদ মুসা আবু তাবিখকে ইসরায়েলি বাহিনী গুলি করে হত্যা করেছে। সংস্থাটির হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরে পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি হামলায় সাত কিশোর নিহত হয়েছে, যাদের চারজন ড্রোন হামলায় এবং তিনজন গুলিতে মারা যায়।
১৯৫৩ সালে উদ্বাস্তুদের আশ্রয়ের জন্য জাতিসংঘ কর্তৃক স্থাপিত জেনিন শরণার্থী শিবির দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের লক্ষ্যবস্তু।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র নাদাভ শোশানি দাবি করেছেন, শিবিরটি থেকে সন্ত্রাসী হামলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়। অন্যদিকে, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ) বলছে, এসব হামলার উদ্দেশ্য পশ্চিম তীরকে ধীরে ধীরে দখল করা।
পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি হামলা ও বসতি স্থাপন কার্যক্রমে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ফিলিস্তিনি গবেষক ও অ্যাক্টিভিস্ট হামজা জুবাইদাত। আল-জাজিরাকে তিনি বলেন, ইসরায়েল ফিলিস্তিনি গ্রামগুলোকে বিচ্ছিন্ন করছে। এতে চিকিৎসা, শিক্ষা ও পণ্য পরিবহন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এর ফলাফল হচ্ছে আরও দারিদ্র্য ও ভোগান্তি।
জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র ফারহান হক বলেন, পশ্চিম তীর, গাজা ও ফিলিস্তিনি অধিকৃত অঞ্চলগুলোর ভবিষ্যৎ ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যকার আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ করা উচিত।