গাজার মধ্যাঞ্চলে রবিবার রাতে ও সোমবার সকালে ইসরায়েলের বিমান হামলায় অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে পাঁচজন নারী ও চারজন শিশু রয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ খবর জানিয়েছে।
উদ্ধারকর্মীরা জানান, সোমবার ভোরে গাজার মধ্যাঞ্চলীয় ঘনবসতিপূর্ণ নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে একটি আবাসিক ভবন ধ্বংস হয়ে যায়, যেখানে অন্তত ১০ জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে চারজন নারী ও দুইজন শিশু ছিল। আল-আওদা হাসপাতাল এই মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে এবং জানিয়েছে যে আরও ১৩ জন আহত হয়েছেন। হাসপাতালের রেকর্ডে দেখা গেছে, নিহতদের মধ্যে একজন মা, তার সন্তান ও তার পাঁচ ভাইবোন রয়েছে।
গাজা সিটিতে আরেকটি হামলায় ছয়জন নিহত হয়েছে। সিভিল ডিফেন্স সূত্রে জানা গেছে, নিহতদের মধ্যে একজন নারী ও দুইজন শিশু ছিল। হামাসের অধীনে পরিচালিত এই জরুরি সেবার কর্মীরা ঘটনাস্থলে কাজ করছিলেন।
ইসরায়েল দাবি করেছে, তাদের সামরিক অভিযান শুধু যোদ্ধাদের লক্ষ্য করে পরিচালিত হচ্ছে এবং হামাসসহ অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো আবাসিক এলাকায় অবস্থান নিয়ে সাধারণ মানুষকে ঝুঁকির মুখে ফেলছে।
গাজায় চলমান যুদ্ধে ১১ মাসে ফিলিস্তিনিদের মধ্যে নিহতের সংখ্যা ৪১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। এই সংখ্যা গাজার যুদ্ধ-পূর্ব জনসংখ্যার প্রায় ২ শতাংশের কাছাকাছি, অর্থাৎ প্রতি ৫০ জনের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে। ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত এবং প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করার পর এই সংঘাতের সূত্রপাত হয়।
রবিবার রাতে হামাসের একজন জ্যেষ্ঠ নেতা বার্তা সংস্থা এএফপি-কে বলেছেন, ৭ অক্টোবরের হামলার পর নতুন প্রজন্মের যোদ্ধাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর কয়েকদিন আগেই ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বলেছিলেন যে, গাজায় সামরিক বাহিনী হিসেবে হামাসের আর অস্তিত্ব নেই।
হামাস নেতা ওসামা হামদান ইস্তাম্বুলে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, মুক্তিযুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য হামাসের ক্ষমতা রয়েছে। শহীদ ও আত্মত্যাগ হয়েছে, কিন্তু এর বদলে অভিজ্ঞতার সঞ্চয় এবং প্রতিরোধে নতুন প্রজন্মের যোগদান ঘটেছে।
এদিকে, গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে হিজবুল্লাহর সঙ্গে আলোচনার সময় দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনকে জানিয়েছেন গ্যালান্ট।