স্পেন ও পর্তুগালের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে সোমবার বড় ধরনের বিদ্যুৎ বিপর্যয় ঘটেছে। এতে যানজট সৃষ্টি হয়েছে, ফ্লাইট বাতিল হয়েছে, লিফটে আটকা পড়েছেন মানুষ। বিপুল সংখ্যক বাড়ি ও প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুদেশের সরকার জরুরি বৈঠক করেছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
ইউরোপে এত বড় পরিসরের বিদ্যুৎ বিপর্যয় খুবই বিরল। প্রাথমিকভাবে সাইবার হামলার শঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। তবে বিপর্যয়ের সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি।
স্পেনের বাস্ক কাউন্টি ও বার্সেলোনায় কয়েক ঘণ্টা পর বিদ্যুৎ ফিরলেও পুরো ব্যবস্থা স্বাভাবিক হতে আরও সময় লাগবে। মাদ্রিদ ও কাতালুনিয়ার হাসপাতালগুলো জরুরি জেনারেটর চালু রেখে শুধু অতি প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে। একাধিক তেল শোধনাগার ও খুচরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। ব্যাংক অব স্পেন জানিয়েছে, ব্যাকআপ সিস্টেমে ইলেকট্রনিক ব্যাংকিং পর্যাপ্ত পরিমাণে চলছে
বার্সেলোনার বাসিন্দা প্রকৌশলী হোসে মারিয়া এসপেজো (৪০) বলেন, ডেটা সেন্টারে কাজ করছিলাম, হঠাৎ সব বন্ধ হয়ে গেলো। এখন জেনারেটর চালু রেখে কারণ খুঁজছি।
মাদ্রিদের মেয়র জোসে লুইস মার্টিনেজ-আলমেইদা এক ভিডিও বার্তায় নাগরিকদের অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ এড়িয়ে চলতে বলেছেন।
পর্তুগালে পানির সরবরাহকারী সংস্থা ইপিএল জানিয়েছে, পানির সরবরাহ বিঘ্নিত হতে পারে। এদিকে, জরুরি জিনিসপত্র কিনতে দোকানে দীর্ঘ লাইন।
মাদ্রিদের পাতালরেলের কিছু অংশ খালি করা হয়েছে। ট্রাফিক লাইট কাজ না করায় মাদ্রিদ সিটি সেন্টারে যানজট দেখা দিয়েছে। লিসবন ও পোর্তোতে মেট্রো বন্ধ, ট্রেন চলছে না। স্পেনের ৪৬টি বিমানবন্দরে ফ্লাইট বিলম্বিত হচ্ছে।
মাদ্রিদ ওপেন টেনিস টুর্নামেন্টের খেলা স্থগিত করা হয়েছে। গ্রিগর দিমিত্রোভ ও ব্রিটিশ প্রতিপক্ষ জ্যাকব ফিয়ার্নলির ম্যাচ বন্ধ করতে হয়েছে স্কোরবোর্ড ও ক্যামেরা বন্ধ হয়ে যাওয়ায়।
স্পেন ও পর্তুগালের বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পুরো ব্যবস্থা স্বাভাবিক হতে কয়েক ঘণ্টা থেকে সারাদিন লেগে যেতে পারে।
ইউরোপে এ ধরনের ব্যাপক বিদ্যুৎ বিপর্যয় খুবই বিরল। ২০০৩ সালে ইতালি ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যে একটি হাইড্রোইলেকট্রিক লাইনে সমস্যা দেখা দিলে পুরো ইতালি প্রায় ১২ ঘণ্টা অন্ধকারে ডুবে যায়। ২০০৬ সালে জার্মানির বিদ্যুৎ নেটওয়ার্ক ওভারলোড হওয়ায় ফ্রান্স, ইতালি, স্পেনসহ কয়েকটি দেশে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।