ইউক্রেনে ‘ইস্টার যুদ্ধবিরতি’ ঘোষণা করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। অর্থাৎ রবিবার (২০ এপ্রিল) সেখানে ‘সব ধরনের সামরিক কার্যক্রম বন্ধের’ নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। কিন্তু এই যুদ্ধবিরতি তিনি মানছেন না বলে অভিযোগ করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। বরং ইউক্রেনে ‘আক্রমণাত্মক অভিযান’ ও গোলাবর্ষণ চলছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের উৎসব ইস্টার সানডে উপলক্ষে ৩০ ঘণ্টার অস্ত্রবিরতির ঘোষণা করেন পুতিন। পুতিনের ঘোষণা অনুযায়ী, অস্ত্রবিরতির আওতায় স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রবিবার দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত ইউক্রেনে হামলা বন্ধ রাখবে রাশিয়া। তবে এ সময় ইউক্রেনের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য হামলা মোকাবিলায় নিজেদের বাহিনীকে পুরোপুরি প্রস্তুত থাকারও নির্দেশ দেন তিনি। এর আগে শনিবার মস্কোয় রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর চিফ অব স্টাফ ভ্যালেরি গেরাসিমভের সঙ্গে বৈঠক করেন পুতিন।
মানবিক কারণে এই সময়ে কোনও ধরনের সামরিক হামলা না চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান পুতিন। তবে পুতিন তার নিজের ঘোষণা করা যুদ্ধবিরতি মানছেন না বলে দাবি করেছেন জেলেনস্কি।
তার অভিযোগ, ৩০ ঘণ্টা হামলা না চালানোর ঘোষণা দেওয়া হলেও রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চল এবং বেলগোরোদে লড়াই অব্যাহত আছে। এমনকি ইউক্রেনের বিভিন্ন স্থানে এখনো রুশ ড্রোন উড়ছে। তবে কিছু এলাকায় শান্ত পরিবেশ দেখা গেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে এমন অভিযোগ করেন তিনি।
আরেকটি পোস্টে তিনি লেখেন, ‘রাশিয়া যদি এখন সত্যিকারের পূর্ণ ও নিঃশর্ত নীরবতা মেনে চলতে প্রস্তুত হয়, তাহলে ইউক্রেনও তদনুযায়ী পদক্ষেপ নেবে—রাশিয়ার আচরণের প্রতিফলন ঘটাবে।’
জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেন ২০ এপ্রিলের পরেও যুদ্ধবিরতি বাড়াতে প্রস্তুত থাকবে, যা সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ববর্তী ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের প্রতি ইঙ্গিত। এই যুদ্ধবিরতিতে ইউক্রেন ইতিমধ্যে সম্মত হয়েছে।
এদিকে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি পারস্পরিকভাবে সম্মানিত হলে তাদের বাহিনী এটি মেনে চলবে।
হঠাৎ যুদ্ধবিরতির ঘোষণা এটি প্রথম নয়। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে অর্থোডক্স ক্রিসমাস উপলক্ষে আগের এক যুদ্ধবিরতির চেষ্টাও ব্যর্থ হয়েছিল। তখনও উভয় পক্ষ প্রস্তাবে একমত হতে পারেনি।
রাশিয়া ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রার আগ্রাসন চালায়। ধারণা করা হয়, সব পক্ষ মিলিয়ে কয়েক লাখ মানুষ নিহত বা আহত হয়েছেন, যার মধ্যে বেশিরভাগই সেনাসদস্য।
এই যুদ্ধ বন্ধের প্রচেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে, তবে বড় কোনও অগ্রগতি অর্জনে হিমশিম খাচ্ছে।