ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেনে শান্তি ফিরলে তিনি প্রেসিডেন্ট পদ ছাড়তেও রাজি আছেন। এমনকি তিনি বলেছেন, তার পদত্যাগের বিনিময়ে ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদান নিশ্চিত করা যায় কিনা, তা নিয়েও আলোচনা হতে পারে। রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) কিয়েভে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
জেলেনস্কি বলেছেন, তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে কেবল মধ্যস্থতাকারী হিসেবে নয়, বরং ইউক্রেনের অংশীদার হিসেবে দেখতে চান। তিনি বলেন, আমি সত্যিই চাই এটি শুধু মধ্যস্থতা নয়... সেটা যথেষ্ট নয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইউক্রেনের বিরল খনিজ সম্পদের ওপর অধিকার দাবি করেছেন। ট্রাম্প বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের সময় ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্র যে পরিমাণ সাহায্য দিয়েছে, এই চুক্তি তার প্রতিফলন হবে। জেলেনস্কি আগে এই দাবি প্রত্যাখ্যান করলেও এখন বলেছেন, আমরা আমেরিকার সঙ্গে খনিজ সম্পদ নিয়ে কথা বলতে প্রস্তুত। আমরা বিনিময় করতে প্রস্তুত। তবে তিনি বলেছেন, পুতিনকে ‘এই যুদ্ধ শেষ করতে’ বাধ্য করতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে।
জেলেনস্কি পুনর্ব্যক্ত করেছেন যে, ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং এখন পর্যন্ত তাদের যে খসড়া চুক্তি দেওয়া হয়েছে, তা তারা চায় না। তবে তিনি বলেছেন, আলোচনা এগোচ্ছে।
বাইডেন ও ট্রাম্প প্রশাসন উভয়ের সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন জেলেনস্কি। তিনি বলেছেন, তিনি ট্রাম্পের কাছ থেকে ইউক্রেনকে সাহায্য করার জন্য সমঝোতা ও নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চান। তিনি ট্রাম্পকে ইউক্রেনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন এবং তিনি খুবই চান যে ট্রাম্প এখানে আসেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এখনও তা হয়নি। জেলেনস্কি বলেন, হয়তো তিনি আসবেন অথবা আমি ওয়াশিংটনে যাব এবং এটি খুবই উপকারী হবে।
যুদ্ধ শেষ করার আলোচনা প্রসঙ্গে জেলেনস্কি বলেন, ন্যাটোতে যোগদানের বিষয়টি আলোচনার টেবিলে থাকবে। কিন্তু তিনি জানেন না এই আলোচনা কীভাবে শেষ হবে। তিনি বলেন, ইউক্রেনই ইউরোপীয় নেতাদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছে, কারণ আমরা ইউরোপের অংশ। মার্কিন নেতারাও সেখানে থাকবেন, কারণ এই যুদ্ধে তারা আমাদের প্রধান সাহায্যকারী।
জেলেনস্কিকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছ থেকে তিনি কী ধরনের নিশ্চয়তা চান এবং শান্তির বিনিময়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পদ ‘ছাড়তে’ তিনি খুশি কিনা। তিনি জবাব দেন, ‘হ্যাঁ, আমি খুশি, যদি তা ইউক্রেনের শান্তির জন্য হয়। যদি আমার এই চেয়ার ছাড়ার প্রয়োজন হয়, আমি তা করতে প্রস্তুত এবং আমি ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্যপদের বিনিময়েও তা করতে পারি।
জেলেনস্কি বলেছেন, তিনি এখন ইউক্রেনের নিরাপত্তার দিকে মনোনিবেশ করেছেন, ২০ বছর পরের দিকে নয়। এক দশক ধরে প্রেসিডেন্ট থাকাটা তার স্বপ্ন নয়।
এক সাংবাদিক জেলেনস্কিকে আগামীকাল ইউক্রেনে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে ইউরোপীয় নেতাদের প্রত্যাশা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, কিছু দৃঢ় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে সমর্থন ও নিষেধাজ্ঞার প্যাকেজ নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সংসদীয় নেতাদের সঙ্গে একটি আলাদা বৈঠক হবে।