সুইডেনের স্কুলে বন্দুক হামলাকে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ গণহত্যা হিসেবে বর্ণনা করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী উল্ফ ক্রিস্টারসন। আর হামলার দিনটিকে ‘অন্ধকার দিন’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানী স্টকহোমের ২০০ কিলোমিটার পশ্চিমে ওরেব্রো শহরের একটি শিক্ষাকেন্দ্রে বন্দুকধারীর গুলিতে ১১ জন নিহত হয়। নিহতদের প্রতি শোক ও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন তাদের সহপাঠীরা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
নিহতদের স্মরণে ওরেব্রো শহর, সুইডিশ পার্লামেন্ট এবং রাজপ্রাসাদে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে। এছাড়া নিহতদের জন্য স্মরণসভায় অংশ নিয়েছেন রাজা কার্ল ষোড়শ গুস্তাফ ও রানি সিলভিয়া। স্কুলটিও পরিদর্শন করেছেন তারা।
সুইডিশ পুলিশ জানিয়েছে, সন্দেহভাজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনও আদর্শগত উদ্দেশ্য থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে তাকে ৩৫ বছর বয়সী বেকার ও একাকী ব্যক্তি হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। পুলিশের মতে, সে একাই হামলা চালিয়েছে এবং পরে নিজেকে গুলি করে আত্মহত্যা করেছে।
হামলার শিকার শিক্ষাকেন্দ্রটি সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য নয়। যারা সময় মতো প্রাথমিক বা মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করতে পারেননি, এমন বয়স্ক লোকজনই মূলত এই শিক্ষাকেন্দ্রে পড়াশোনা করেন। রিসবার্গস্কা প্রাপ্তবয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্রে চালানো ওই হামলায় ৬ জন আহত হয়েছেন। এদের চারজন নারী ও দুইজন পুরুষ। এদের মধ্যে পাঁচজনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে এবং তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
স্কুলের একজন শিক্ষিকা ৫৪ বছর বয়সী মারিয়া পেগাডো জানান, দুপুরের বিরতির পর হঠাৎ কেউ দরজা খুলে সবাইকে দ্রুত বেরিয়ে যেতে বলে। এরপর তিনি ও তার শিক্ষার্থীরা দৌড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যান।
সুইডেনের প্রাপ্তবয়স্ক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অনেক শিক্ষার্থীই অভিবাসী, যারা নতুন কর্মসংস্থানের জন্য যোগ্যতা অর্জন করতে এবং সুইডিশ ভাষা শিখতে আসে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সুইডেনে বন্দুক সহিংসতা এবং বোমা হামলার ঘটনা বেড়েছে, যা মূলত সংঘবদ্ধ অপরাধচক্রের কারণে ঘটছে। মাত্র ১ কোটি জনসংখ্যার দেশটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে মাথাপিছু বন্দুক সহিংসতার সর্বোচ্চ হার রেকর্ড করেছে। তবে দেশটিতে স্কুলে প্রাণঘাতী হামলার ঘটনা খুবই বিরল।